সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বঙ্গে দ্বিতীয় দফার ভোটের দিন প্রচারে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। নন্দীগ্রামের ভোট পরিস্থিতিতে ‘গেরুয়া ঝড়’, ‘দিদির হার’ দেখেছিলেন তিনি। তাই উলুবেড়িয়ার সভা থেকে তাঁর শ্লেষমিশ্রিত প্রশ্ন ছিল, ”তাহলে কি অন্য কোনও আসন থেকে ফের লড়াই করবেন তৃণমূল সুপ্রিমো?” সঙ্গে সঙ্গে তৃণমূলও এর জবাব দিয়েছে। নন্দীগ্রামে জয় নিশ্চিত, অন্য আর কোথাও লড়বেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, টুইট করে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে তৃণমূল। আর এই টুইটেই কার্যত রয়েছে ‘টুইস্ট’, যা থেকে নতুন জল্পনা উসকে উঠছে, রাজনৈতিক মহলের একাংশ এতেই নয়া সমীকরণের ইঙ্গিত পাচ্ছেন। ২০২৪-এ দিল্লি দখলের লড়াইয়ে নেমে সরাসরি নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? এই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে ইতিমধ্যেই।
তৃণমূলের অফিশিয়াল পেজ থেকে করা টুইটে কী লেখা? প্রথমাংশ খুব সরাসরি, স্পষ্ট বার্তা – ‘দিদি নন্দীগ্রাম থেকে জিতছেনই।তাই অন্য কোনও আসন থেকে তাঁর লড়াইয়ের কোনও প্রশ্নই ওঠে না।’ পরের অংশের বার্তাই বেশ ইঙ্গিতবাহী। নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশে তৃণমূলের পরামর্শ – ‘বাংলার মানুষকে বিভ্রান্ত করা বন্ধ করুন, আপনার মিথ্যাচার প্রকাশ্যে এসে পড়েছে। বরং ২০২৪-এ নিজের জন্য নিরাপদ একটি আসন খুঁজে নিন। কারণ, আপনি বারাণসীতে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়বেন।’
আর এখানেই উসকে উঠছে জল্পনা। তবে কি পরবর্তী লোকসভা ভোটে নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে নির্বাচনী লড়াইয়ে নামবেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই? তারই ইঙ্গিত দিয়ে রাখল দলের তরফে এই টুইট? জাতীয় রাজনীতি সম্পর্কে সামান্য খোঁজখবর রাখা মানুষ মাত্রেই জানেন, এই মুহূর্তে যে দল বিজেপি বিরোধিতায় সবচেয়ে বেশি সরব, তার নাম তৃণমূল। ঘটনাচক্রে তা পশ্চিমবঙ্গের শাসকদলও। নির্বাচনী আবহেই হোক কিংবা অন্য সময় কেন্দ্র-রাজ্য, বিজেপি-তৃণমূল, মোদি-মমতার মধ্যে রাজনৈতিক সংঘাত চলতেই থাকে। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো মেনে যে কোনও কাজের ক্ষেত্রেও জারি থাকে দ্বৈরথ। বাংলা নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি নেতারা কোনও নেতিবাচক কথা বললেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ”আগে দিল্লি সামলান।” অর্থাৎ তিনিও ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দেন, কেন্দ্রের সরকার চালাতে তেমন সফল নয় বিজেপি পরিচালিত মোদির নেতৃত্বাধীন দ্বিতীয় এনডিএ সরকার।
[আরও পড়ুন: ‘নন্দীগ্রাম শুভেন্দুর রাজনৈতিক হাঁড়িকাঠ’, একান্ত সাক্ষাৎকারে কটাক্ষ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের]
জাতীয় রাজনীতিতেও বিজেপি বিরোধী দলগুলির একতার মূলে তৃণমূল সুপ্রিমোই। ফলে আগামী লোকসভা নির্বাচনে তিনিই যদি মোদির বিরুদ্ধে অ-বিজেপি দলগুলির যুদ্ধের প্রধান সেনাপতি হন, অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না। আর তৃণমূল সুপ্রিমোর রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্খার সঙ্গে এই যুদ্ধের ময়দানে নিজেকে শামিল করাও স্বাভাবিক ঘটনা বলেই মত বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশের।