সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কয়লা কাণ্ডে এবার বিজেপিকে পালটা চাপ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বিজেপির অভিযোগ যদি সত্যি হয়, তাহলে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর নাকের ডগায় এত বড় কেলেঙ্কারি হল কী করে? এই তৃণমূল যুব সভাপতির। এদিকে একই প্রশ্ন তুলে কেন্দ্রীয় কয়লামন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করলেন তৃণমূল নেতা ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)। সেই সঙ্গে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, সিবিআইয়ের তদন্ত চলাকালীন অডিও রেকর্ড ফাঁসের প্রতিবাদে ফৌজদারি মামলা দায়ের করবে তৃণমূল।
গতকালই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি অডিও ক্লিপকে হাতিয়ার করে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। তাঁর অভিযোগ ছিল, “কয়লা দুর্নীতির টাকা সরাসরি যেত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। সাংসদ হওয়ার পরই এই দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি। এই কেলেঙ্কারির ৯০০ কোটি টাকা গিয়েছে ভাইপোর কাছে। ১০ বছর ধরে সরকার ও মুখ্যমন্ত্রীর মদতে কয়লা দুর্নীতি হয়েছে। ৯০ থেকে ৯৫ জন পুলিশ আধিকারিক এর সঙ্গে জড়িত। বেশ কয়েকজন আইপিএস অফিসারও এর সঙ্গে জড়িত।” কিছুক্ষণ বিজেপির এই অভিযোগ নস্যাৎ করে রাজ্যের শাসকদল। তাঁদের তরফে দাবি করা হয়, প্রথম দু’দফার ভোটে হারের ইঙ্গিত পেতেই বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে গেরুয়া শিবির। অডিও ক্লিপের সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছিল শাসক শিবিরের তরফে। আজ পালটা চাপ সৃষ্টির পথে হাঁটলেন অভিষেক।
টুইটে দাবি করলেন,”কয়লা সংক্রান্ত সমস্ত সম্পত্তি সরাসরি কেন্দ্রের অধীনে থাকে। যদি বিজেপি মনে করে, বেআইনিভাবে কয়লা খনি থেকে টাকা পেয়েছে, তাহলে কেন্দ্র এর তদন্ত করছে না কেন? যারা কেন্দ্রীয় সম্পত্তি রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে, তাঁদের কেন শাস্তি দেওয়া হচ্ছে না? আর বিজেপি যদি মনে করে, কয়লা মন্ত্রকের আধিকারিকরা মোদি-শাহ, বা কয়লা মন্ত্রকের কথা না শুনে তৃণমূল নেতাদের কথা শুনেছে, তাহলে এর থেকে হাস্যকর হতে পারে না।”
[আরও পড়ুন: ‘কারা কথা বলছিলেন স্পষ্ট নয়’, কয়লা কাণ্ডে ভাইরাল অডিও ক্লিপের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তৃণমূলের]
অভিষেক একা নন, সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যের বিদায়ী মন্ত্রী ব্রাত্য বসুও একই অভিযোগ করলেন। বললেন, কেলেঙ্কারির যে অভিযোগের ভিত্তিতে তৃণমূল নেতাদের দোষারোপ করা হচ্ছে, তা যদি সত্যি হয় তাহলে কয়লামন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত। কারণ, “কয়লা ইসিএলের (ECL) সম্পত্তি। কয়লা খনির নিরাপত্তার দায়িত্ব সিআইএসএফের। তাহলে কী করে এই কেলেঙ্কারি হল? কেন্দ্রের আধিকারিকরা কী করছিলেন? তাঁরা কী মন্ত্রীদের কথা শুনছিলেন না? সিআইএসএফ (CISF) কী তাহলে স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের কথা শুনছিল? সেটা যদি হয়, তাহলে তো কেন্দ্রীয় কয়লা মন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত।” ব্রাত্য বলছেন, তৃণমূলও চায়, এর রহস্য উন্মোচিত হোক। তবে, তৃণমূল পালটা ফৌজদারি মামলা করবে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। তাঁর প্রশ্ন, তদন্তের রেকর্ড কীভাবে ফাঁস হল? বিজেপি নেতারা কীভাবে সেই অডিও রেকর্ড নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করলেন? সিবিআই ফাঁস করাচ্ছে না তো? সেই রহস্য উদঘাটনে দলের তরফে ফৌজদারি মামলা করা হবে।