সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তৃতীয়বারের জন্য বিপুল জনসমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল (TMC)। শক্তিশালী প্রতিপক্ষ বিজেপির অহংবোধকে কার্যত মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার তৃণমূলের লক্ষ্য জাতীয়স্তরের রাজনীতিতে গুরুত্ব বৃদ্ধি। ২০২৪ সালের কথা মাথায় রেখে দিল্লির পথে হাঁটছে ঘাসফুল শিবির। শনিবার দলের সাংগাঠনিক রদবদল থেকে অন্য রাজ্যে সংগঠন তৈরির রূপরেখা দেখে এমনটাই দাবি করেছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। আর জাতীয়স্তরের রাজনীতিতে ছাপ ফেলার গুরুদায়িত্ব সামলাবেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অন্যান্য সাংসদরা।
এদিন তৃণমূল ভবনে দলের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক হয়। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের কী স্ট্র্যাটেজি হবে তা নিয়েও আলোচনা হয়। এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, “এবার শুধু আর বাংলা নয়। অন্যান্য রাজ্যেও সংগঠন বিস্তৃত করবে তৃণমূল কংগ্রেস। এই দায়িত্ব পালন করবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বাকি সাংসদরা।” কিন্তু ভিনরাজ্যের নির্বাচনে তৃণমূলের কী ভূমিকা হবে, তা এদিন সুস্পষ্ট করে জানাল না রাজ্যের শাসকদল। বরং পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, “আপাতত দলের লক্ষ্য রাজ্যের বিপর্যয় ও কোভিড পরিস্থিতি সামলানো। পরে এ বিষয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” ওয়াকিবহাল মহল বলছে, বাংলার নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে বিপুল জয় জাতীয়স্তরে ফের একবার তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলেছে তৃণমূলকে। এবার আর সেই সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই এবার জাতীয় রাজনীতিতে নিজেদের গুরুত্ব বাড়াতে ঝাঁপাচ্ছেন তাঁরা।
[আরও পড়ুন: ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’, দল ও প্রশাসনে শৃঙ্খলা আনতে মোক্ষম দাওয়াই মমতার]
তবে এই প্রথমবার নয়। ইতিপূর্বে ২০১৪ এবং ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃতীয় ফ্রন্ট গড়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী, সমস্ত দলের নেতা-নেত্রীকে ব্রিগেড সমাবেশও করেছিলেন তিনি। বাংলায় তৃণমূল ভাল ফল করলেও জাতীয় স্তরে বিজেপির বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য ফল করতে পারেনি তৃতীয় ফ্রন্ট। অসম, মণিপুর, ত্রিপুরা এবং কেরলে দলের শাখাও তৈরি করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। তবে নির্বাচনের ফলাফলে তেমন একটা দাগ কাটতে পারেনি তৃণমূল। ফলে জাতীয়স্তরে রাজনীতির স্বপ্ন অধরাই থেকে গিয়েছিল তৃণমূলের। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি অনেকটাই অন্যরকম।
একুশের বিধানসভার নির্বাচনে ফল ঘোষণা হতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “বাংলা জিতে দেশকে বাঁচিয়ে দিয়েছে।” ওয়াকিবহাল মহল বলছে, সেদিনই তৃণমূল নেত্রী জাতীয়স্তরে লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিলেন। বিভিন্ন রাজ্যের নেতা-নেত্রীরাও একযোগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমর্থন করেছেন। তাই এবার বঙ্গজয়ের পর দিল্লির লক্ষ্যে দৌড় শুরু করল তৃণমূল। কিন্তু ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের এখনও তিনবছর বাকি। তাই সেই ভোটে তৃণমূলের এই স্ট্র্যাটেজি কতটা কাজ করবে, সেই উত্তর দেবে সময়।