ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: ত্রিপুরার (Tripura) এক প্রাক্তন কাউন্সিলর সদ্য তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। সম্প্রতি একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন। সেই প্রসঙ্গ টেনে এবার তৃণমূলকে হুঁশিয়ারি দিলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবকুমার দেব (Tripura CM Biplab Kumar Deb)। রবিবার একটি ফেসবুক পোস্ট করে তিনি পরিষ্কার বলে দিলেন, ‘তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে’ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ করবেন তিনি। তৃণমূলের নাম না করে পোস্টে তিনি লেখেন, “(তৃণমূল) এখানে যাঁদের দলে টানছে, তাঁরা অসামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত। আমার কাছে যা তথ্যপ্রমাণ রয়েছে, তার ভিত্তিতে আমি তাদের গ্রেপ্তার করাব।” বিপ্লব দেবের এই হুঁশিয়ারিকে কার্যত হেলায় উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল (TMC)। ত্রিপুরায় ঘাসফুল শিবিরের বাড়বাড়ন্ত দেখে চাপ বাড়ছে বিজেপির। আর সেই চাপের কাছে নতিস্বীকার করেই মুখ্যমন্ত্রীর এহেন হুমকি বলে মনে করছে তৃণমূল নেতৃত্ব।
রবিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় (Facebook post) বিপ্লব দেবের এই পোস্টের পর ফের রাজনৈতিক চাপানউতোর তীব্র হয়েছে সেখানে। তৃণমূলের অভিযোগ, তাদের দলে যোগ দেওয়ার পরই গ্রেপ্তার করা হয়েছে সেখানকার প্রাক্তন কাউন্সিলর পান্না দেবকে। তাঁর বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। পান্না দেব নিজে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন। এই প্রেক্ষিতেই এদিন রাতে ফেসবুক পোস্টে বিপ্লব দেবের এই হুমকি বলে মনে করা হচ্ছে। পোস্টে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, “পশ্চিমবঙ্গ থেকে একটি দল আমাদের রাজ্যে এসেছে। এই দলের নেতৃত্বরা পশ্চিমবঙ্গে অসামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত।”
[আরও পড়ুন: দৃষ্টিহীন বাবা-মা, সংসার টানতে টোটো চালাচ্ছে আট বছরের বালক]
সে রাজ্যের একদা শাসক, বর্তমান বিরোধী দল সিপিএমকে কাছে টানতে তিনি পোস্টে আরও লেখেন, “আমি দলের কার্যকর্তাদের উদ্দেশে বলবো প্রত্যেক বিরোধী সিপিএম (CPM) সমর্থকদের বাড়িতে যাওয়ার জন্য। তাদের কাছে গিয়ে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের খতিয়ান তুলে ধরুন। তাদের বোঝান ২৫ বছরের সরকার কী করেছে আর আমরা গত সাড়ে তিন বছরে কী করেছি ও করছি।” প্রসঙ্গত, তেইশের ভোটে ত্রিপুরায় তৃণমূলকে রুখতে হলে যে সিপিএমের সঙ্গে প্রয়োজন, তা বুঝেই বিপ্লব দেবের এই নির্দেশ।
[আরও পড়ুন: ‘নেহরুর অবদান যারা অস্বীকার করে, তারা ইতিহাসের শত্রু’, বিজেপিকে খোঁচা শিব সেনার]
এই পোস্টের পরই বিপ্লব দেবকে নিয়ে কটাক্ষ শুরু হয়েছে। রবিবার তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ত্রিপুরায় ‘শিক্ষক দিবস’ উদযাপন করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সুস্মিতা দেব (Sushmita Dev)। পাশাপাশি ধলাই জেলার আমবাসায় তৃণমূলের কর্মিসভার পর কর্মীদের মারধরের অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। অভিযোগ, হামলায় শামিল ছিল আমবাসা যুবমোর্চার সভাপতি মন্টু দেবনাথ, সদস্য কৃপেশ শর্মাও। এসবের পর সুস্মিতা দেবের বক্তব্য, ”ত্রিপুরায় তৃণমূলের শক্তি বাড়ছে, তা বুঝেই মুখ্যমন্ত্রীর এই হুমকি। কিন্তু এ ধরনের হুমকি দিয়ে, হামলা চালিয়ে তৃণমূলকে রুখে দেওয়া যাবে না।”