সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভোটের আগে ‘গুড় বাতাসা’, ‘চড়াম চড়ামে’র মতো শব্দবন্ধ শোনা যেত তাঁর গলায়। সেই দাপুটে অনুব্রতই এখন জড়িয়েছেন আইনি বিপাকে। গরু পাচার মামলায় (Cattle Smuggling Case) আসানসোল বিশেষ সংশোধনাগারেই ঠাঁই হয়েছে বীরভূমের ‘বেতাজ বাদশা’র। জেলে থাকলেও আসন্ন পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে আশাবাদী অনুব্রত। আসানসোল থেকে বিধাননগর এমপি এমএলএ আদালতে আসার পথে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বললেন, পঞ্চায়েত ভোট “ব্যাপক হবে”।
বৃহস্পতিবার ঘড়ির কাঁটায় তখন সকাল ৬টা ৪৫ মিনিট। আসানসোল বিশেষ সংশোধনাগার থেকে বের করে গাড়িতে তোলা হয় অনুব্রতকে। একটি বাতানুকূল গাড়িতে তোলা হয়। গাড়িতে ওঠার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে দু-চার কথা কথা বলেন অনুব্রত। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, পঞ্চায়েত ভোটে (Panchayat Election) কী হতে চলেছে? অনুব্রতর জবাব, “ব্যাপক হবে।” শরীর ভাল নেই বলেও জানান অনুব্রত। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের পক্ষ থেকে কড়া নিরাপত্তায় আসানসোল থেকে কলকাতায় নিয়ে আসা হচ্ছে অনুব্রতকে। তৃণমূল নেতার গাড়ির সামনে এবং পিছনে রয়েছে পুলিশ স্কোয়াড।
[আরও পড়ুন: পুজোয় মাঝরাত পর্যন্ত মেট্রো, ভিড় সামলাতে সেপ্টেম্বরের শনি-রবিবার বাড়তি পরিষেবা]
উল্লেখ্য, গরু পাচার মামলায় গত ১১ আগস্ট সিবিআইয়ের (CBI) হাতে গ্রেপ্তার হন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। সিবিআই হেফাজতে থাকাকালীন কলকাতার নিজাম প্যালেসে ছিলেন তিনি। সেখানেই চলছিল জিজ্ঞাসাবাদ। বর্তমানে জেল হেফাজতে রয়েছেন তিনি। আসানসোলের বিশেষ সংশোধনাগারই এখন ঠিকানা তাঁর। সূত্রের খবর, সংশোধনাগারের হাসপাতাল ওয়ার্ডে রয়েছেন। ২ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসার সমস্ত বন্দোবস্ত রয়েছে।
সিবিআই সূত্রে খবর, অনুব্রতর প্রয়াত স্ত্রী এবং মেয়ের নামে এখনও পর্যন্ত প্রায় পাহাড় সমান সম্পত্তির খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। তদন্তকারীদের নজরে রয়েছে বোলপুরের মোট ১০টি রাইস মিল। ইতিমধ্যে ভোলে ব্যোম, শিব শম্ভু চালকলে তল্লাশিও চালিয়েছেন আধিকারিকরা। প্রায় ১৭ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিটের কথাও সামনে এসেছে। তবে টাকার উৎস সম্পর্কে জানা যায়নি। অনুব্রতর বিরুদ্ধে তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছে সিবিআই। যদিও সে অভিযোগ খণ্ডন করেছেন জেল হেফাজতে থাকা তৃণমূল নেতা। দাবি, ১০০ বার তদন্তে সহযোগিতা করেছেন তিনি। তাঁর টাকার উৎস সম্পর্কে তথ্যের খোঁজে মঙ্গলবার আসানসোল বিশেষ সংশোধনাগারে গিয়ে অনুব্রতকে জেরা করে সিবিআই। তারই মাঝে বৃহস্পতিবার ২০১০ সালে মঙ্গলকোট থানা এলাকার পুরনো মামলায় অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mandal) বিধাননগরের এমপি-এমএলএ আদালতে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই মামলায় হাজিরা দিতেই কলকাতায় আসছেন তিনি।