ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের (Jagdeep Dhankhar) আচার-আচরণে ব্যাপক ক্ষুব্ধ তৃণমূল (TMC)। এবার তাঁর অপসারণের দাবিতে সোজা সংসদে সরব হওয়ার পরিকল্পনা করছে বাংলার শাসকদল। বৃহস্পতিবার দলের সাংসদদের সঙ্গে ভারচুয়াল বৈঠকে এ নিয়ে রণকৌশল নির্ধারণের কথা বললেন তৃণমূল বৈঠক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সূত্রের খবর, সংসদের বাজেট অধিবেশনে ধনকড়ের অপসারণের দাবিতে স্বতন্ত্র প্রস্তাব আনতে পারে তৃণমূল। লোকসভা ও রাজ্যসভায় বিষয়টি নিয়ে সরব হতে দুই সাংসদের উপর দায়িত্ব দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী।
আগামী সপ্তাহে সংসদের বাজেট অধিবেশন (Budget Session)। ১ ফেব্রুয়ারি বাজেট পেশ করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। প্রতিবারই সংসদ অধিবেশনের আগে দলীয় সাংসদদের সঙ্গে কথা বলে রণকৌশল স্থির করে দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এবারও তার ব্যতিক্রম হল না। বৃহস্পতিবার কালীঘাটের বাড়ি থেকে তিনি ভারচুয়াল বৈঠক করেন দলীয় সাংসদদের সঙ্গে। তাঁর বাড়িতে অবশ্য উপস্থিত ছিলেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সুব্রত বক্সি। সূত্রের খবর, সেখানেই মমতা বলেন, ”রাজ্যপালের ভূমিকা ভয়ংকর পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে। মুখ্যমন্ত্রী হিউম্যান রাইটস কমিশন কীভাবে তৈরি করলেন, তা নিয়েও তিনি প্রশ্ন করছেন! যেন মনে হচ্ছে, রাজ্যপালকে নির্দেশ দিয়ে পাঠানো হয়েছে রাজ্য সরকারকে বিরক্ত করো। রাজ্যপাল মনোনীত, কিন্তু আমরা দুই-তৃতীয়াংশের বেশি ক্ষমতা নিয়ে রাজ্যের ক্ষমতায় এসেছি। এবার সময় এসেছে লোকসভা ও রাজ্যসভার এ বিষয়ে কথা বলার প্রয়োজন আছে। রাজ্যপালের যা অবস্থা, তাতে তার নিজেরই চলে যাওয়া উচিত। রাজ্যপাল সংসদীয় গণতন্ত্রকে টুঁটি টিপে মেরে ফেলার কাজ করছেন।”
[আরও পড়ুন: টানাপোড়েন অব্যাহত বিজেপিতে, দায়িত্ব পেয়েই উত্তর কলকাতার সহ-সভাপতি পদে ইস্তফা নেত্রীর]
এদিন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন যে সংসদে কোনও গণতন্ত্র নেই। কেন্দ্রীয় সরকার যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো নষ্ট করছে। রাজ্যগুলিকে ঠিকমতো কাজ করতে দিচ্ছে না, প্রতি পদে পদে বাধা সৃষ্টি করছে। এই ইস্যুতে তৃণমূল সরব হোক, তার সুর বেঁধে দিয়েছেন দলের সুপ্রিমো। এছাড়া রাজ্য থেকে আইএএস, আইপিএস অফিসারদের ডেপুটেশনে কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, এর নিয়ম বদল করা হচ্ছে – এসব নিয়েও প্রতিবাদ করবেন সাংসদরা। এদিন মমতা এও বলেন, ”পাঁচ রাজ্যে ভোট। এ সময় বাজেট অধিবেশন কেন? উত্তরপ্রদেশে ১০ তারিখ থেকে ভোট শুরু, কিন্তু ১১ তারিখ পর্যন্ত বাজেট কেন?”
[আরও পড়ুন: আচমকা বোমা বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল গঙ্গার ঘাট, হালিশহরে এক কিশোরের মৃত্যু, আহত কয়েকজন]
বাংলার বাইরেও একাধিক রাজ্যে তৃণমূলের সংগঠন বিস্তার লাভ করেছে। কিন্তু বাংলাই মূল ভিত। সে কথায় সাংসদদের মনে করিয়ে দিলেন মমতা। তিনি বলেন, ”এটা ভুললে চলবে না যে বাংলা থেকেই আমাদের সংগঠন তৈরি হয়েছে। আমি সবসময়েই বাংলার সংগঠনে বেশি নজর দিই, এবারও দেব। দিল্লিতে সংসদের অধিবেশন চলছে বলে ওখানে পড়ে থাকলে হবে না। সামনে চার পুরনিগমের ভোট। সেখানে যার যা দায়িত্ব, তা পালন করতে হবে।”
এদিনের ভারচুয়াল বৈঠকে দলনেত্রীর তিরস্কারের মুখে পড়েন সাংসদ অপরূপা পোদ্দার। আরেক সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করায় তাঁকে ভর্ৎসনা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে সতর্ক করে দেন। আর সুপ্রিমোর এই ভূমিকায় স্পষ্ট , দল কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশেই রয়েছে।