সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিজয়া সম্মিলনীতে ডাক পাননি রাজারহাটের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা তাপস চট্টোপাধ্যায় (TMC MLA Tapas Chatterjee)। অভিযোগ, তাঁর বিধানসভা এলাকায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে পরপর দু’ বার ব্রাত্য রইলেন তিনি। ‘অভিমানী’ নেতার আক্ষেপ, “হয়তো আমার কাজের স্ট্যাটাস ওই অনুষ্ঠানে যাওয়ার মতো নয়।” তবে তাঁকে আমন্ত্রণ না করে নিউটাউনবাসীকে অপমান করা হয়েছে বলেও দাবি তাপসের। স্বাভাবিকভাবেই দলীয় বিধায়কের এই মন্তব্যে অস্বস্তিতে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা দলীয় মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “তাপসদা মন দিয়ে তৃণমূল করছেন। দক্ষ সংগঠক। আমি এনিয়ে কথা বলব।” তবে তৃণমূলের (TMC) অন্দরের অশান্তি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা।
বুধবার ইকো পার্কে ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিজয়া সম্মিলনী। সেখানে চাঁদের হাট বসলেও ডাক পাননি স্থানীয় বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়। যা নিয়ে অভিমানের সুর তাঁর গলায়। বৃহস্পতিবার এক বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে ক্ষোভ উগড়ে দেন তৃণমূল বিধায়ক। বলেন, “আমার বিধানসভা এলাকায় বিজয়া সম্মিলনী হল অথচ আমি জানলামই না। এর আগেও আমি ডাক পাইনি। হয়তো আমার কাজের স্ট্যাটাস সেখানে ডাক পাওয়ার মতো নয়।” তাপসবাবুর কটাক্ষ, “দলে এখন দু’টো শ্রেণি-বাবু ও চাকর। আমি দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ি। আমি ভাল গাইতে পারি না, ভাল নাচতে পারি না, তাই হয়তো ডাক পাই না। যারা একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রীকে কটু কথা বলেছেন, তাঁরা এখন ডাক পান।” নাম না করে বিজেপি থেকে ঘরে ফেরা সব্যসাচী দত্তকেই তিনি নিশানা করেছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। রাজারহাট এলাকার পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদের আরও আক্ষেপ, আমি সারা বছর কাজ করি। কিন্তু আমার কাজ হয়তো ঠিক জায়গায় পৌঁছয় না। যেখানে জানার সেখানে জানতে পারে না।”
[আরও পড়ুন: সাতসকালে খাস কলকাতায় বিধ্বংসী আগুন, ভস্মীভূত প্রযোজনা সংস্থার গোডাউন]
রাজ্যে পালাবদলের পরই সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন তাপসবাবু। তৃণমূলের টিকিটেই পরপর দু’বার বিধায়ক হয়েছেন তিনি। এহেন বর্ষীয়ান নেতার অভিমানী মন্তব্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এপ্রসঙ্গে তাপসবাবুর পুরনো সতীর্থ তথা সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, এসব ওদের দলের ব্যাপার। কী বলব। বিজয়া সম্মিলনীটা কীসের সেটাই বুঝলাম না। তৃণমূল দলটার বিজয়া হচ্ছে, তারই কি সম্মিলনী? কটাক্ষ করেছেন বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। বলেন, এটা ওদের দলের অভ্যন্তরীণ রসায়ন। তৃণমূল ছেড়ে ওদের এক নেতা সব্যসাচী দত্ত আমাদের দলে বেড়াতে এসেছিলেন। তিনি তো বলেছিলেন, তাঁর দল ছাড়ার অন্যতম কারণ তাপস চট্টোপাধ্যায়। এখন সেই সব্যসাচী মুখ্যমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ। স্বাভাবিকভাবেই তাপসবাবুর খারাপ লাগছে।”
পরিস্থিতি সামাল দিতে আসরে নেমেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। বলেন, “তাপসদা মন দিয়ে তৃণমূল করছেন। এলাকার দক্ষ সংগঠক। আমি এনিয়ে কথা বলব। ওঁর মনে দুঃখ থাকবে না।”