সম্যক খান, মেদিনীপুর: সমন্বয়ের অভাব, কারও সঙ্গে আলোচনা না করে 'মর্জিমতো' সংগঠনে রদবদল, সদস্যদের কাজে বাধা দেওয়া। কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে এমনই একাধিক অভিযোগ তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে নালিশ জানিয়েছিলেন কৃষ্ণনগরের ৬ তৃণমূল বিধায়ক। সেই নালিশকে অবশ্য তেমন আমল দেননি দলনেত্রী। এবার পশ্চিম মেদিনীপুরেও সেই একই সমস্যা দেখা দিল। কোনও পদে না থেকেও সংগঠনে মাথা গলানোর অভিযোগ উঠল রাজ্যের মন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান বিধায়ক মানস ভুঁইঞার বিরুদ্ধে। এনিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিলেন জেলার ৮ বিধায়ক। সূত্রের খবর, ডিসেম্বরের প্রথমদিকেই এই চিঠি পৌঁছেছে মমতার কাছে। তা নিয়ে দলের শীর্ষস্তরের প্রতিক্রিয়া মেলেনি এখনও।
দিন কয়েক আগে বিধানসভা অধিবেশন চলাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে মহুয়ার বিরুদ্ধে নালিশ করেছিলেন কৃষ্ণনগর দক্ষিণের উজ্জ্বল বিশ্বাস, নাকাশিপাড়ার কল্লোল খাঁ, চাপড়ার রুকবানুর রহমান, করিমপুরের বিমলেন্দু সিংহরায়, পলাশিপাড়ার মানিক ভট্টাচার্য, কালিগঞ্জের নাসিরুদ্দিন আহমেদরা। অভিযোগ ছিল, তাঁদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই জেলা সংগঠনের সভানেত্রী মহুয়া সম্প্রতি ১৭৮ জন বুথ সভাপতি আর ১৭ জন অঞ্চল সভাপতিকে বদলি করেছেন। উলটে যাঁদের বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ, তাঁদের সামনে আনা হচ্ছে। তা নিয়ে নেত্রীর প্রতিক্রিয়া ছিল, এসব নিয়ে পরে জেলাওয়াড়ি বৈঠকে আলোচনা হবে।
এবার মানস ভুঁইঞার বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগে ফের দুপাতার চিঠি পাঠানো হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। সূত্রের খবর, তাতে সই করেছেন কেশপুরের শিউলি সাহা, দাঁতনের বিধায়ক বিক্রম প্রধান, নারায়ণগড়ের সূর্য অট্ট, দাসপুরের মমতা ভুঁইঞা, চন্দ্রকোণার অরূপ ধাড়া, ডেবরার হুমায়ুন কবীর, গড়বেতার উত্তরা সিংহ, পিংলার অজিত মাইতি। মানস ভুঁইঞা নিজের 'গোষ্ঠী'কে বেছে বেছে সংগঠনে রদবদল করছেন বলে অভিযোগ। যদিও জেলা সংগঠনে তাঁর কোনও পদ নেই এই মুহূর্তে। তিনি সেচ ও জলসম্পদ দপ্তরের মন্ত্রী। কিন্তু ৮ বিধায়কের অভিযোগ, জেলায় আদি-নব্য ভাগাভাগি শুরু করেছেন মানস ভুঁইঞা। তাতে তাঁদের কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে। গোটা বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর অবশ্য মানসবাবুর প্রতিক্রিয়া, ''আমি এসব কিছুই জানি না। আমি দলের অনুগত সৈনিক। দল যখন যে দায়িত্ব দিয়েছে, সেই কাজ করেছি। আমি তো মেদিনীপুরেও কোনও পদে নেই, ঘাটালেও নেই। তাই রদবদল নিয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।''