সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইঙ্গিত দিয়েছিলেন আগেই। লোকসভা (Loksabha) অধিবেশন চলাকালীন বক্তৃতা রাখতে গিয়ে নেতাজির আদর্শ উল্লেখ করে বিজেপিকে তীব্র ভাষায় বিঁধলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র (Mohua Moitra)। নেতাজির আদর্শ থেকে শুরু করে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দলের উদ্দেশ্য, কার্যকলাপ নিয়ে অত্যন্ত তীক্ষ্ম, শানিত ভাষায় প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। হরিদ্বারে ‘ধর্ম সংসদে’ গণহত্যার উসকানির কথা উল্লেখ করে নেতাজির স্বপ্নের ভারতের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন। বিজেপি শাসিত দেশের ভবিষ্যত যে বেশ সংকটের, তাও উল্লেখ করেন মহুয়া। বৃহস্পতিবার সন্ধেবেলা তৃণমূলের তরুণ সাংসদের একের পর এক বাক্যবাণে তপ্ত হয়ে ওঠে লোকসভা কক্ষ। তবে তাঁকে নির্ধারিত সময় বলতে দেওয়া হয়নি, এই অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলেই বিজেপির (BJP)উদ্দেশে টুইট করে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া জানিয়েছিলেন, সংসদে (Parliament) তিনি যথেষ্ট আক্রমণ শানাতে প্রস্তুত, তাই সাংসদরা যেন ‘গোমূত্র’ পান করে আক্রমণের মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকেন। তা নিয়ে শোরগোল উঠতে না উঠতেই সন্ধ্যায় লোকসভা কক্ষে মহুয়ার আবির্ভাব। বাছা বাছা ভাষা প্রয়োগ করে কেন্দ্রের উদ্দেশে একের পর এক তোপ দেগেছেন তৃণমূল সাংসদ।
রাষ্ট্রপতির ভাষণের জবাবি ভাষণে তাঁর বক্তব্য, ”রাষ্ট্রপতির মুখে বারবার স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কথা শোনা গিয়েছে। কিন্তু কোন স্বাধীন ভারতের জন্য আমরা লড়াই করেছি, কারাবরণ করেছি? নেতাজির ভাবনায় কি কখনও ছিল ‘ধর্ম সংসদ’? এটাই কি আমাদের সাধারণতন্ত্র?” প্রসঙ্গত, হরিদ্বার-সহ একাধিক জায়গায় ‘ধর্ম সংসদ’ ডেকে গণহত্যার উসকানির অভিযোগ উঠেছে হিন্দুত্ববাদী নেতাদের বিরুদ্ধে। মুসলিমদের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নেওয়ার উসকানি দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে কালীচরণ মহারাজকে। বিজেপি ঘনিষ্ঠ এই বক্তাদের পালটা দাবি, মুসলিমদের বিরুদ্ধে তাঁরা ভেবেচিন্তেই যুদ্ধ ঘোষণার কথা বলেছেন। নেতাজি আবেগ উসকে সেই ‘ধর্ম সংসদ’-এর কথাই উল্লেখ করতে চাইলেন মহুয়া।
[আরও পড়ুন: বারবার বলেও কাজ হচ্ছে না, রাজ্যপাল কি ফোন করছেন? পূর্ব মেদিনীপুরের SP-কে প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রীর]
‘বাগ্মী’ বলে পরিচিত তৃণমূল সাংসদের আরও বক্তব্য, ”এই সরকার ইতিহাস বদলাতে চায়। ভবিষ্যৎ নিয়ে ভয় দেখাতে চায় তারা। আপনারা শুধু ভোট নিয়েই সন্তুষ্ট নন। আপনারা আমাদের মগজে ঢুকে ভাবনাচিন্তা বদলাতে চান। আমাদের ইতিকর্তব্য, দৈনন্দিন অভ্যেস, আবেগ – সব নির্ধারিত করে দিতে চান। কিন্তু এই ভয় দেখানোয় ভবিষ্যতের কিছু যাবে-আসবে না।” তবে তাঁকে লোকসভায় বক্তব্য পেশের জন্য ১৩ মিনিট সময় বরাদ্দ করা হলেও পুরো সময় বলতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগে সরব হন মহুয়া। বাইরে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সামনে ক্ষোভ উগরে দেন।