নন্দন দত্ত, সিউড়ি: গরু পাচার কাণ্ডে আপাতত জেল হেফাজতে অনুব্রত মণ্ডল। খয়রাশোলে জনসভার মঞ্চ থেকে অনুব্রত মণ্ডলের পাশে দাঁড়ানোর ডাক দিলেন সাংসদ শতাব্দী রায়। এই পরিস্থিতিতে সকলকে একজোট হয়ে অনুব্রত মণ্ডলের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁর ‘নির্দোষ’ প্রমাণ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষার বার্তা তৃণমূল সাংসদের।
গত ১১ আগস্ট বোলপুরের নিচুপট্টির বাড়ি থেকে গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার হন অনুব্রত মণ্ডল। বর্তমানে আসানসোল বিশেষ সংশোধনাগারে রয়েছেন তিনি। বীরভূমের ‘বেতাজ বাদশা’র গ্রেপ্তারির কথা উল্লেখ করে শতাব্দী বলেন, “কথায় আছে হাতি কাদায় পড়লে টিকটিকিতে লাথি মারে। অনুব্রত মণ্ডল এখন কাদায় পড়েছেন। কিন্তু যখন বীরভূমের সংগঠক, উন্নয়নের মানুষ অনুব্রত নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে কলের জলে স্নান করে কাদা পরিষ্কার করে আসবেন সেদিন টিকটিকির কী হবে? সে টিকটিকিই থেকে যাবে। তৃণমূলকে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে। সে সময়ে সকলকে একজোট হয়ে থাকতে হবে। যে মানুষটাকে ভাল সময়ে পেয়েছিলেন, যে মানুষটা জেলার উন্নয়নের জন্য খেটেছেন, তার কাছে নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়েছেন, তেমনই তাঁর পাশে থাকতে হবে। তার সঙ্গে থাকাটা আমাদের নৈতিক কর্তব্য। ভালবাসার প্রমাণ দিতে হবে। আমরা যে অকৃতজ্ঞ নই তা প্রমাণের সময় এসেছে।”
[আরও পড়ুন: কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু খুনে জারি ধরপাকড়, ঝাড়খণ্ড থেকে গ্রেপ্তার মূল ভাড়াটে খুনি]
বিজেপির বিরুদ্ধে একহাত নিয়ে শতাব্দী রায় আরও বলেন, “রাজনৈতিক লড়াইয়ে না পেরে বিজেপি কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে তৃণমূলকে হেনস্তা করতে চাইছে। কারণ ওদের মনে ভয় ঢুকেছে, গতবারের ১৮টা সাংসদ এবার আটটাতে নেমে আসবে না তো? তাই এক একদিন এক একজনের নামে মিথ্যা রটনা করছে।” তাঁর দাবি, “আগামী লোকসভা নির্বাচন ২০২৪ সালে। আগামী দু’বছর খেলা চলবে। আপনারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে দল করতে এসেছেন। তাঁর উপরেই ভরসা রাখুন।”
শনিবারের খয়রাশোলের জনসভায় শতাব্দী রায় ছাড়াও ছিলেন অসিত মাল, মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, জেলা সভাধিপতি তথা বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী, অভিজিৎ সিনহা, মুখপাত্র মলয় মুখোপাধ্যায়-সহ আরও অনেকে। মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা বলেন, “অনুব্রত মণ্ডল সাময়িক অসুবিধায় পড়েছেন। তবে আমাদের প্রতিটি অঞ্চলে এখনও অনুব্রত আছেন। সামনের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তার প্রমাণ পাওয়া যাবে। খড়কুটোর মতো
উড়ে যাবে বিজেপি।” অভিজিৎ সিনহা জানান, “বিরোধী দলনেতার মুখে রাজ্যের ৭৪ টা উন্নয়ন প্রকল্পের কথা কই? যে ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে জেলা, তার কথা কই? কতকগুলো মিথ্যা বয়ানের ভিত্তিতে কুৎসা করার চেষ্টা করছে বিজেপি।” বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, “শুভেন্দুর সব কথা মিথ্যা। উনি নিজের মুখ আয়নায় দেখেন না। যদি দেখতেন তাহলে মানুষের সামনে মিথ্যা কথা বলতেন না। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন শুভেন্দু। তা ভেস্তে যাওয়ায় উনি হতাশ।”