বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে বামেদের ‘বিজেমূল’ তত্ত্ব প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলার মানুষ। রাজ্যে ভরাডুবি হয়েছে বামপন্থী দলগুলির। কিন্তু তাতেও তৃণমূল-বিজেপি (BJP) আঁতাঁতের তত্ত্ব ছাড়তে চাইছেন না কমরেডকূলের শিরোমণিরা। এতদিন রাজ্যে পার্টির বিভিন্ন ফোরামে এই ‘বিজেমূল’ তত্ত্ব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এবার সিপিএম পার্টি কংগ্রেসেও সেই চর্বিত-চর্বণ শোনা গেল বঙ্গ নেতাদের মুখে। কান্নুরে পার্টি কংগ্রেসের শেষদিন বঙ্গ সিপিএমের দুই প্রতিনিধিই অভিযোগ করলেন, রাজ্যে সংঘ পরিবারের (RSS) মদতে সন্ত্রাস চালাচ্ছে তৃণমূল।
শুক্রবার পার্টি কংগ্রেসে বাংলার তরফে বক্তব্য রাখেন দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা সম্পাদক শমীক লাহিড়ী (Shamik Lahiri) এবং গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির রাজ্য সম্পাদক কনীনিকা ঘোষ। দু’জনেরই মূল বক্তব্য, বাংলায় পুলিশ এবং প্রশাসনের সাহায্য অবাধে সন্ত্রাস চালাচ্ছে তৃণমূল। আর তাতে মদত রয়েছে সংঘ পরিবার অর্থাৎ আরএসএসের। তৃণমূল এবং বিজেপির আঁতাঁতের জেরে রাজ্যে ধর্মীয় মেরুকরণ মারাত্মক রূপ নিয়েছে বলেও পার্টি কংগ্রেসে দাবি করেছেন শমীক, কনীনিকারা।
[আরও পড়ুন: আরও বাড়বে মুদ্রাস্ফীতি, পূর্বাভাসে GDP বৃদ্ধির সম্ভাব্য হার কমাল রিজার্ভ ব্যাংক]
পার্টি কংগ্রেসে শমীক লাহিড়ী বলেন, “রাজ্যে ভয়ংকর সন্ত্রাস চালাচ্ছে শাসক দল। সংঘ পরিবার পুরোপুরি তৃণমূলকে মদত দিচ্ছে। পুলিশ-প্রশাসনের পুরোপুরি রাজনীতিকরণ হয়ে গিয়েছে। পুলিশ আর তৃণমূলকে আলাদা করা যাচ্ছে না। দেশের অন্যান্য রাজ্যে এগুলো দেখা যায় না।” কনীনিকা ঘোষের মূল বক্তব্যও একই সুরে বাঁধা। তিনি এদিন বলেন, “রাজ্যের পুরসভা ভোট পুরোপুরি করেছে পুলিশ-প্রশাসন। ভারতের কোথাও এমন ঘটেনি যে, সব পুরসভা শাসকদল জিতেছে। বিজেপি-তৃণমূল আঁতাত করে চলছে। ধর্মীয় মেরুকরণ মারাত্মক রূপ নিয়েছে। গত বিধানসভাতেও যা হয়েছে, পুরসভাতেও তাই হয়েছে। বিধানসভায় তৃতীয়বার জেতার পর গণতান্ত্রিক কাঠামোর তোয়াক্কা করছে না তৃণমূল।”
[আরও পড়ুন: বেঙ্গালুরুতে বোমাতঙ্ক! ৭ টি স্কুলে লুকিয়ে শক্তিশালী বোমা, ইমেলে হুমকি পেয়ে তীব্র চাঞ্চল্য]
বৃহস্পতিবারই সিপিএমের শীর্ষ নেতারা বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কংগ্রেসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। কিন্তু এদিন রাজ্যের দুই প্রতিনিধিই কার্যত ঘুরিয়ে কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে চলার বার্তা দিলেন। যদিও রাজ্য নেতারা মেনে নিচ্ছেন, সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে চলার ক্ষেত্রে দুর্বলতা থেকে যাচ্ছে। কনীনিকা ঘোষ এদিন বলেন, “রাজ্যে যে পরিস্থিতি চলছে তাতে ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক দলগুলিকে একসঙ্গেই লড়তে হবে। আলাদা আলাদা করে লড়াই করলে দুর্বলতা থেকে যাচ্ছে।” শমীক লাহিড়ী অবশ্য সহানুভুতির সঙ্গেই রাজ্য কংগ্রেসের দুর্বলতার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস (Congress) বিচ্ছিন্নভাবে আন্দোলন করছে। কিন্তু শক্তি কমে যাওয়ায় তা দানা বাঁধছে না। তাছাড়া হাই কম্যান্ডও রাজ্য কংগ্রেসকে গুরুত্ব দিচ্ছে না।”