নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: করোনার দ্বিতীয় ধাক্কার দাপট খানিকটা কমলেই সেরে ফেলা হোক রাজ্যের ৬ বিধানসভা আসন এবং ২টি রাজ্যসভা আসনের উপনির্বাচন। এমনটাই চাইছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। বাংলার পাশাপাশি তামিলনাড়ুর চার আসনেও রাজ্যসভার উপনির্বাচন হওয়ার কথা। তৃণমূল চাইছে, সেই আসনগুলিতেও দ্রুত নির্বাচন হোক। এই দাবিতে দলের তরফে নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে বলেই তৃণমূল সূত্রের খবর।
রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে আগে দীনেশ ত্রিবেদী (Dinesh Trivedi) তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখান। তাঁর পদত্যাগের ফলে ওই আসনটি শূন্য হয়েছে। রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে দীনেশের মেয়াদ ছিল আরও সাড়ে চার বছর। একইভাবে রাজ্যের মন্ত্রী হওয়ার জন্য রাজ্যসভার সাংসদ পদ ছাড়ছেন মানস ভুঁইয়াও। তাঁরও সাংসদ পদের মেয়াদ রয়েছে আরও বছর দুয়েক। রাজ্য বিধানসভার বর্তমান শক্তি অনুযায়ী, এই দুটি আসনে তৃণমূলের জয়ের ব্যাপারে কোনও সংশয় নেই। তৃণমূল শিবির চাইছে দীনেশ ত্রিবেদী এবং মানস ভুঁইয়ার যে দুটি পদ খালি হয়েছে, তা দ্রুত পুরণ করতে। শুধু তাই নয়, তামিলনাড়ুর চার আসনেও বিরোধীদের জয়ের সম্ভাবনাই বেশি। সেই আসনগুলির নির্বাচনও যাতে তাড়াতাড়ি করা যায়, সেটাও নিশ্চিত করতে চায় এরাজ্যের শাসকদল। তবে এ বিষয়ে দলের তরফে কোনও চিঠি লেখা, বা কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে কিনা, সে ব্যাপারে ৫ জুন দলের সাংগঠনিক বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
[আরও পড়ুন: কলাইকুন্ডার বৈঠক ছাড়ার আগে অনুমতি নেননি মমতা! মুখ্যমন্ত্রীর চিঠির পালটা কেন্দ্রের]
এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্যসভার মুখ্য সচেতক সুখেন্দুশেখর রায় (Sukhendu Sekhar Roy) বলছেন, “নিয়ম অনুযায়ী রাজ্যসভার কোনও সাংসদের মেয়াদকাল একবছরের বেশি থাকাকালীন যদি কেউ পদত্যাগ করেন, সেক্ষেত্রে ৬ মাসের মধ্যে ভোট করানো বাধ্যতামূলক। মেয়াদ ১ বছরের কম থাকলে সেটা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কমিশন। তবে, বর্তমানে যেহেতু করোনা সংক্রমণের হার নিম্নমুখী, তাই এই শূন্য পদগুলি ভরতি করে দেওয়ায় ভাল বলে আমার মনে হয়।”
[আরও পড়ুন: নির্দিষ্ট সময়েই কেন্দ্রের শোকজের জবাব আলাপনের, চিঠিতে কী লিখছেন প্রাক্তন মুখ্যসচিব?]
এ তো গেল রাজ্যসভার কথা। রাজ্যে আগামী মাস পাঁচেকের মধ্যে ৬ আসনে উপনির্বাচনও হওয়ার কথা। যার মধ্যে যে কোনও একটি আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে আসতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerejee)। আরও দুই মন্ত্রী অমিত মিত্র (Amit Mitra) এবং শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কেও জিতিয়ে আনতে হবে। তৃণমূল চাইছে, কোভিডের দাপট কিছুটা কমলেই এই আসনগুলিতে উপনির্বাচনও হয়ে যাক। কারণ, কোনওভাবে যদি ৬ মাসের মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিতে আসতে না পারেন, সেক্ষেত্রে সাংবিধানিক সংকটের মুখে পড়তে পারে রাজ্য। সেই পরিস্থিতি যাতে না হয়, সেকারণেই কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে তৃণমূল। তবে, সবকিছু নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে আগামী ৫ জুন দলের সাংগঠনিক বৈঠকেই।