নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: লোকসভায় আসন বণ্টনে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ। সংসদীয় দলনেতাকে না জানিয়ে ইচ্ছেমতো যত্রতত্র আসন বরাদ্দ করা হল তৃণমূল-সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলিকে। শুধু তাই নয়, লোকসভায় তৃণমূলের সংসদীয় দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পিছনের আসনে রাখা হয়নি দলের কোনও সাংসদকে। এই ঘটনায় যারপরনাই ক্ষুব্ধ বাংলার শাসকদল। আগামী সোমবার সংসদ চালু হলে এই স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে সরব হতে চলেছে তৃণমূল।
১৮তম লোকসভা অধিবেশন চালু হলেও এখনও এতদিন পর্যন্ত আসন নির্দিষ্ট করা হয়নি কোনও সাংসদের। এই প্রক্রিয়ার জন্য প্রত্যেক দলের সংসদীয় দলনেতাদের কাছে বরাদ্দকৃত আসন সম্পর্কে জানতে জানতে চাওয়া হয়। জুন মাসে এই চিঠি এসেছিল তৃণমূলের সংসদীয় দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। জুলাই মাসে আসন তালিকা-সহ তার উত্তরও দেন সুদীপ। তবে অভিযোগ, সেই মতো আসন না সাজিয়ে নিজেদের পছন্দ মতো আসন বরাদ্দ করা হয়েছে তৃণমূল সাংসদদের। যার ফল দাঁড়িয়েছে, শাসকদল অর্থাৎ বিজেপি সাংসদদের ব্লকে দুই মন্ত্রীর পিছনে জায়গা পেয়েছেন দুই তৃণমূল সাংসদ। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সারিতে ও পিছনে দলের কোনও সাংসদকে রাখা হয়নি।
এই ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ক্ষুব্ধ সুদীপ সংবাদ প্রতিদিনের প্রতিনিধিকে জানান, "কাল রাতে আমার কাছে ইমেল আসে যেখানে দেখা যায় তৃণমূল সাংসদদের বসার যে জায়গা দেওয়া হয়েছে তা অদ্ভুতভাবে সাজানো হয়েছে। যেমন, প্রথম সারিতে আমার পাশে দেওয়া হয়েছে অখিলেশ যাদবকে অথচ আশেপাশে, পিছনে তৃণমূলের কোনও সাংসদ নেই। পরের ব্লকে সরকার পক্ষের দুই মন্ত্রী বসেছেন তাঁদের পিছনে রয়েছেন দু'জন তৃণমূল সাংসদ।" একইসঙ্গে জানান, "আমি যে তালিকা দিয়েছিলাম সেখানে দ্বিতীয় সারিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুখ্য সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম দিয়েছিলাম। এখন সংসদ চলার সময় আমার পাশে যদি মুখ্য সচেতককে না পাই, অন্যান্য সাংসদদের না পাই তাহলে আমি তাঁদের নির্দেশ দেব কীভাবে ও লোকসভা চালাব কী করে?"
এই ঘটনা শুধু তৃণমূলের সঙ্গে নয়, কংগ্রেসের সঙ্গেও একই ঘটনা ঘটেছে বলে জানান সুদীপ। বলেন, "সংসদীয় দলের নেতা হিসেবে যে আসনে আমি যাকে চাইব তাঁকে জায়গা দিতে হবে। এত বছর ধরে আমি লোকসভায় আছি কখনও এমন ঘটনা দেখিনি। এটা ভুল সিদ্ধান্ত, অবিলম্বে এর পরিবর্তন করা উচিৎ। অন্যথায় সোমবার সংসদ অধিবেশন শুরু হলে আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাব।" এভাবে আসন বণ্টনের পিছনে শাসকদলের ষড়যন্ত্রেরও অভিযোগ উঠছে। বিরোধীদের অভিযোগ, বিরোধী দলের সাংসদরা যাতে একজোট হয়ে শাসকদলের বিরুদ্ধে সরব হতে না পারে তাই আলাদা জায়গায় বসিয়ে তাঁদের কণ্ঠরোধ করতেই এই পরিকল্পনা।