নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের ঘর গোছানোর কাজ রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) ও প্রধান বিরোধী দল বিজেপি দু’-পক্ষই নিজের মতো করে শুরু করে দিয়েছে। সাম্প্রতিককালে প্রায় অধিকাংশ রাজনৈতিক দলই নিজেদের অবস্থা বুঝে নিতে নিজেদের দলীয় সমীক্ষার পাশাপাশি পেশাদার কোনও সংস্থার উপর সমীক্ষার দায়িত্ব দিয়ে থাকেন। তৃণমূল ও বঙ্গ বিজেপি (BJP) উভয়েই সেই একই রাস্তায় হাঁটছে। তাতে দুই দলের সমীক্ষায় যে তথ্য উঠেছে তাতে তৃণমূল শিবিরে স্বস্তির হাওয়া বইলেও বিজেপি শিবিরের কপালে চিন্তার ভাঁজ বললে অত্যুক্তি হবে না।
সূত্রের খবর, বেশ কিছুদিন আগেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে রাজ্যের ৪২টি লোকসভা (Lok Sabha) কেন্দ্রের সমীক্ষা করার জন্য একটি পেশাদার সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি সেই সংস্থা তাদের রিপোর্ট তৃণমূল নেতৃত্বর কাছে জমা দিয়েছে। তাতে বর্তমানে রাজ্যের সিংহভাগ লোকসভা কেন্দ্রেই তৃণমূল অত্যন্ত সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে বলেই উল্লেখ করা হয়েছে। এই মূহুর্তে ভোট হলে রাজ্যের ৩৮টি লোকসভা কেন্দ্রেই তৃণমূল কংগ্রেসের জয় প্রায় নিশ্চিত বলেই উল্লেখ করা হয়েছে। বাকি ৪টি আসনের মধ্যে ৩টি আসন দার্জিলিং, রাণাঘাট এবং আলিপুরদুয়ারে হারার সম্ভাবনা রয়েছে। আরেকটি আসন পুরুলিয়াতে বিজেপির সঙ্গে কড়া টক্কর রয়েছে তৃণমূলের।
[আরও পড়ুন: নীতীশের শিবির বদলের জের! এখনই লোকসভা ভোট হলে বিহারে ধরাশায়ী হবে এনডিএ, বলছে সমীক্ষা]
অন্যদিকে, বিজেপির পক্ষ থেকে পেশাদার সংস্থাকে দিয়ে বর্তমানে তাদের হাতে থাকা ১৬টি লোকসভা কেন্দ্রে তাদের দলের কী অবস্থা রয়েছে সেই সমীক্ষা করানো হয়েছিল। তাতে এই মূহুর্তে ভোট হলে ১৬টি আসনের মধ্যে ১২টিতেই তাদের জেতার সম্ভাবনা নেই, এমন তথ্যই উঠে এসেছিল বেশ কিছুদিন আগে। অবশ্য চারটি আসন, বনগাঁ, রানাঘাট, দার্জিলিং ও পুরুলিয়ায় পরিস্থিতি খারাপ হলেও হাতে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
[আরও পড়ুন: বিহারে মুখ থুবড়ে পড়ল ‘অপারেশন লোটাস’, গোষ্ঠী কোন্দলে জর্জরিত বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব]
স্বভাবতই, এই সমীক্ষা রিপোর্টে তাতে নড়চেড়ে বসে বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব। কলকাতায় দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের (Sukanta Majumdar) বাসভবনে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য এবং রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে সংস্থার প্রতিনিধিদের বিধানসভা ভিত্তিক সমীক্ষা করার নির্দেশ দেওয়া হয় এবং সেই রিপোর্ট হাতে নিয়েই পরবর্তী বৈঠক হবে বলে সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়। সেই বৈঠক অবশ্য এখনও হয়নি বলেই জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, বঙ্গ বিজেপি যে পেশাদার সংস্থাকে দিয়ে এবার রাজ্যে সমীক্ষা করছে তারা গত বিধানসভা নির্বাচনের সময়েও সমীক্ষা করেছিল। সেই সমীক্ষা রিপোর্ট কতটা ফলেছিল তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই এবার একই সংস্থা দিয়ে সমীক্ষা করালেও হয়েছে নতুন লোক দিয়ে।