স্টাফ রিপোর্টার: আজ আবার ত্রিপুরা যাচ্ছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। এর মধ্যেই ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলসের নিয়োগ নিয়ে উত্তাল ত্রিপুরা। বিভিন্ন জেলায় দফায় দফায় পরীক্ষার্থীদের বিক্ষোভে চাপে পড়েছে বিজেপি সরকার। শিক্ষকদের বঞ্চনার পর এই নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ ইসু্যতে ক্ষুব্ধ যুবসমাজ। শনিবারই তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবস পালনের অনুষ্ঠান ঘিরে তৃণমূল ও বিজেপির সংঘর্ষ হয়েছে গোমতী জেলার কাঁকড়াবনে। এইসবের মধ্যেই অভিষেকের সফর অন্যমাত্রা যোগ করেছে। বিপ্লব দেবের (Biplob Deb) উপর যে চাপ আরও বাড়বে তা নিয়ে সন্দেহ নেই।
অভিষেকের এবারের কর্মসূচির মধ্যে মূলত রয়েছে বিজেপির হাতে আক্রান্ত কর্মীদের বাড়ি যাওয়া ও নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে পরবর্তী পদক্ষেপ চূড়ান্ত করা। তাঁর সফর ঘিরে উন্মাদনাও তুঙ্গে। বেলা বারোটা নাগাদ আগরতলায় নেমেই চতুর্দশ দেবতা মন্দিরের উদ্দেশে রওনা দেবেন। সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গেও কথা বলবেন। দুপুরে তেলিয়ামুড়া এলাকার কালি তিলিয়ায় দলীয় কর্মী অনির্বাণ সরকারের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ সারবেন। এরপরই আগরতলায় সূর্যমণিনগরে বিজেপির (BJP) হাতে আক্রান্ত তপনকুমার বিশ্বাসের বাড়িতে যাবেন। বিকেলে বরদলইতে সংহিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে চা খাবেন। তিনিও বিজেপির আক্রমণের শিকার। সোমবার সকালে মিডিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রাতরাশ সারবেন অভিষেক। হোটেলেই দলের ত্রিপুরা স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ও অন্য নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে তাঁর।
[আরও পড়ুন: করোনা সংক্রমণ বাড়লেও এখনই লকডাউন নয়! ইঙ্গিত মিলল মোদির কথায়]
এদিকে, ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলসে কর্মী নিয়োগে ব্যাপক বেনিয়মের অভিযোগে বিক্ষোভ অব্যাহত চাকরিপ্রার্থীদের। হাই কোর্টে আবেদন করা হয়েছে। আরটিআই (RTI) করা হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের দাবি, প্রত্যেকের লিখিত পরীক্ষা, মেডিক্যাল ও শারীরিক সক্ষমতা, মৌখিক পরীক্ষার মোট নম্বর প্রকাশ করতে হবে। শুক্রবার আগরতলা ফেরত কিছু চাকরিপ্রার্থী বিলোনিয়া স্টেশনে বিক্ষোভ দেখান। রাস্তায় প্রতিবাদ করলে পুলিশ বাধা দিচ্ছে, ফলে রেলস্টেশনেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে দেওয়া হল বলে তাঁদের বক্তব্য।
[আরও পড়ুন: মহামারীতেও ৮% অর্থনৈতিক বৃদ্ধি, রেকর্ড বিদেশি বিনিয়োগ, বছর শুরুতে জানালেন প্রধানমন্ত্রী]
শনিবার তৃণমূলের (TMC) প্রতিষ্ঠা দিবস পালিত হয়েছে ত্রিপুরার প্রায় সব ব্লকে। হয়েছে রক্তদান শিবির, হাসপাতালে রোগীদের ফল ও মিষ্টি বিতরণ, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, বস্ত্রদান ও মাস্ক বিতরণের মতো কর্মসূচি। আগরতলায় আলোচনা সভায় ছিলেন সুস্মিতা দেব, সুবল ভৌমিক। রক্তদান শিবিরে ছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। শক্তি দেববর্মা, স্বপন দেববর্মা-সহ উপজাতিদের সংগঠন আইপিএফটি-র বেশ কয়েকজন এদিনই তৃণমূলে যোগ দেন। গণ্ডাছাড়া মহকুমা এলাকায় বা গোমতীতেও পালিত হয় তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবস। এর মধ্যেই কাঁকড়াবন এলাকায় বিজেপির মণ্ডল নেতাদের প্রত্যক্ষ উসকানিতে ও নেতৃত্বে দলীয় পতাকা উত্তোলনের পরই তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ফল-মিষ্টি বিতরণের পরই এক মহিলা কর্মীর বাড়িতে দলের প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপনের কর্মসূচি ছিল তৃণমূলের। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, বাঁশ নিয়ে হামলা চালানো হয়। জাতীয় পতাকা ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছে। নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যানার ফেলে দেওয়া হয়েছে। এর পরই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা।