Tonic Film Review: বড়দিনের আগেই সিনেমা হলে ‘টনিক’, কেমন হল দেব-পরাণের যুগলবন্দি? পড়ুন রিভিউ

06:20 PM Jan 20, 2022 |
Advertisement

This browser does not support the video element.

নির্মল ধর: আজকাল আমরা যেমন জীবনের সব সমস্যা, কষ্ট, যন্ত্রণা, অভাব, অভিযোগ কোন এক জাদুমন্ত্রে সরিয়ে রেখে খেলা, মেলা, উৎসবে মেতে আছি, ঠিক তেমনই এই ছবি ‘টনিক’ (Tonic Film)।

Advertisement

ছেলে পার্থ(নীল), বউমা (কনীনিকা) ফুটফুটে নাতনিকে নিয়ে জলধর (পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়) ও তাঁর স্ত্রীর (শকুন্তলা বড়ুয়া) ছবির মতো সাজানো সংসার। মা-বাবার প্রতি ছেলের অতি সাবধানী দৃষ্টিতে তাঁদের নিজের ইচ্ছেগুলো গত ৪৬ বছর চাপা ছিল। জলধরের কথায় অবসরের পর, বিশেষ করে তাঁর জীবন ছিল ‘বাড়িতে বউয়ের ছ্যাঁকা, ছেলের বকা, পেটের অম্বল আর রাতের কম্বলে’ সীমাবদ্ধ। বাবা মায়ের ৪৬তম বিবাহবার্ষিকী বাড়ির ছাদে করার ইচ্ছে ছেলের। তা প্রস্তুতিও শুরু হয়ে যায়। অথচ ছেলে-বউ নিজেদের বিবাহবার্ষিকী করেছে ব্যাংককে।

অভিমানে জলধর সিদ্ধান্ত নেন, তিনিও এবার বিদেশ যাবেন নিজের বিবাহবার্ষিকী পালন করতে। তাঁর এই সিদ্ধান্তকে উসকে দেয় ট্রাভেল কোম্পানির এক তরুণ গাইড ‘টনিক'(দেব)।
বুদ্ধিমান, চটপটে, সর্বদা হাসিখুশি টনিকই অবশ্য শেষ পর্যন্ত মাসিমার(শকুন্তলা) পাসপোর্ট না করতে পারায়, প্যারিসের আইফেল টাওয়ারে দেখা হয় হয় না জলধরদের। কিন্তু টনিকই আবার বাড়িতে কাউকে না জানিয়ে তাঁদের নিয়ে চলে যায় পাহাড়ের দেশ দার্জিলিং।

Advertising
Advertising

[আরও পড়ুন: WB Civic Polls: ‘পুরভোটে জিতবে বিজেপিই’, অনুব্রতর পাশে দাঁড়িয়ে বেফাঁস মন্তব্য মুকুল রায়ের]

ছবির প্রথম পর্বটি একটু দীর্ঘ লাগে। বিবাহবার্ষিকীর প্রস্তুতি হিসেবে ক্যাটারার, ডেকরেটরের আসা-যাওয়া বা পাসপোর্টের জন্য পুলিশি তদন্তে থানার বাড়াবাবুর (রজতাভ) উপস্থিতি বাড়তি লেগেছে, বিশেষ করে বিশ্বনাথ ও বাড়ির কাজের মেয়ের ‘ফষ্টিনষ্টি’ খুবই জোলো কমেডি। বরং তুলনায়, বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যাবার পর বৃদ্ধ দম্পতির সঙ্গে ‘টনিক’-এর ধীরে ধীরে এক বিনিসুতোর সম্পর্ক গড়ে ওঠার ব্যাপারটা দর্শক উপভোগ করে।

 

‘টনিক’ই বৃদ্ধ জলধরের ভেতর এতদিনের চাপা আনন্দ ও উচ্ছ্বাস জাগিয়ে তোলে। সত্তর পেরোনো মানুষটিকে উৎসাহের ভোকাল টনিক দিয়ে রাফটিং, প্যারাগ্লাইডিং এবং কঠিনতম রকক্লাইম্বিং পর্যন্ত করিয়ে ছাড়ে। বৃদ্ধ মানুষটি এতদিন পর যেন ফিরে পান হারানো জীবনের নতুন আনন্দ। স্ত্রীও বেজায় খুশি। ওদিকে নিখোঁজ বাবা-মায়ের জন্য পুলিশি খোঁজ খবরের পাশাপাশি কাগজে ‘নিরুদ্দেশ’ বিজ্ঞাপনও বেরিয়ে যায় ছেলের তদারকিতে।

কিন্তু এই চার-পাঁচ দিনেই বৃদ্ধ-বৃদ্ধার মনে প্রায় সন্তানের স্থান নিয়ে ফেলেছে টনিক। তাঁদের বিবাহবার্ষিকী দার্জিলিংয়ের হোটেলেই বেশ জমিয়ে আয়োজন করে সে। নতুন যৌবন ফিরে পেয়ে বৃদ্ধ বাবা নাচতে নাচতে জ্ঞান হারানোর পর যে কি হবে, সেটা আর বলার দরকার নেই। সুখের সমাপ্তি তো বটেই, সেই সঙ্গে কিছু নাটক-অতিনাটক মিলিয়ে আনন্দের টনিক খাইয়ে ছবির মধুরেণ সমাপয়েৎ।

বাস্তবে টনিকের মতো চরিত্র হয় কিনা, তারও যে একটা দুঃখ মেশানো অতীত রয়েছে, সেটা দিয়ে দর্শক সেন্টিমেন্টে সুড়সুড়ি দেওয়া একেবারেই ফর্মুলা মাফিক। তবে হ্যাঁ, পরিছন্ন, উদ্দেশ্যহীন আনন্দ পেতে ও সময় কাটানোর জন্য একটিবার অবশ্যই ‘টনিক’-এর স্বাদ নেওয়া যেতেই পারে। বিশেষ করে পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Paran Bandopadhyay) টক-মিষ্টি মেশানো অনন্য সাধারণ অভিনয় এবং সুপার তারকার ইমেজ থেকে বেরিয়ে অন্য এক দেবকে (Dev) দেখার জন্য! দেব, না পরানবাবু কাকে বেশি নম্বর দেবে দর্শক তা নিয়ে তর্ক উঠতে পারে এই ছবির পর। জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ে সুরারোপিত গানগুলি অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়, অনুপম রায় এবং নচিকেতার গাওয়া গানগুলো কিন্তু শিল্পীদের নিজস্বতায় ভাল লাগে।

বছরের শেষ ছবিটি অন্তত জানিয়ে দিল বাংলা ব্যবসায়িক ঘরানার ছবি এখনও পরিবার ও সংসার কেন্দ্রিক। ফিচার ছবিতে নতুন পরিচালক অভিজিৎ সেন জানিয়ে দিলেন, তিনি এখনকার দর্শকের মেজাজ এবং মর্জি ভালই অনুভব করেন। ছবিতেও তার স্পষ্ট প্রতিফলন রয়েছে।

  • ছবি – টনিক
  • অভিনয়ে – দেব, পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, শকুন্তলা বড়ুয়া, কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীল মুখোপাধ্যায়
  • পরিচালনায় – অভিজিৎ সেন

[আরও পড়ুন: দিঘায় বেড়াতে গিয়ে কাঁকড়া খেয়ে মৃত্যু বীরভূমের তরুণীর]

This browser does not support the video element.

Advertisement
Next