স্টাফ রিপোর্টার: দেশজুড়ে ভয়াবহ আকার নিয়েছে কোভিড (COVID-19)। ফলে স্বাভাবিকভাবেই সকলের মনে প্রশ্ন, ফের কি বন্ধ হয়ে যাবে ট্রেন পরিষেবা? রবিবার দুপুরে ভারচুয়াল সাংবাদিক সম্মেলনে রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান সুনীত শর্মা জানালেন, রেলকর্মীদের বড় অংশ কোভিডে আক্রান্ত তবুও রেল বন্ধ হবে না। এ নিয়ে কোনও রাজ্য এখন পর্যন্ত কোনও বার্তা দেয়নি। ফলে পরিষেবা বন্ধের আশঙ্কা নেই।
সুনীত শর্মা বলেন, “কয়েকটি রাজ্য আরটি-পিসিআর ও ভ্যাকসিনের রিপোর্ট নিয়ে সেখানে যাত্রীদের যেতে বলেছে। ফলে আমরা সেরকমভাবে জানিয়ে দিয়েছি। যাতে যাত্রীরা কোনওরকমভাবে হয়রান না হন।” আনলক পর্যায়ের ১৫১৪টি স্পেশ্যাল, ৫৩৮৭টি শহরতলির ট্রেন, ৯৮৪টি প্যাসেঞ্জার ট্রেন ও ২৮টি ক্লোন ট্রেন চলছে এখন। পাশাপাশি বিভিন্ন রাজ্যে প্রয়োজনে ৪১৭৬টি আইসোলেশন কোচ রেডি করা হয়েছে। তা রাজ্য চাইলেই ব্যবস্থা করে দেবে রেল বলে তিনি আশ্বাস দেন।
সংকটময় পরিস্থিতিতে রেল এখন অক্সিজেন ট্যাঙ্কারের জরুরি পরিষেবা দিতে শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত রেল ১৫০ মেট্রিক টন অক্সিজেন সরবরাহ করেছে তাদের পরিবহণের মাধ্যমে। যা দু’একদিনের মধ্যে দ্বিগুণ হবে বলে চেয়ারম্যান এদিন জানান। জরুরি এই পরিষেবার জন্য সারা ভারতে যেসব স্টিল প্ল্যান্ট রয়েছে সেই সব অঞ্চলের সঙ্গে রেল যোগাযোগের ম্যাপ তৈরি করা হয়েছে। সেখান থেকে অক্সিজেন সরবরাহে যাতে কোনওরকম ব্যাঘাত না ঘটে সেজন্য লাইন থেকে সিগন্যাল, কর্মী সব সময় তৎপর রাখা হয়েছে। যাতে অক্সিজেনবাহী ট্যাঙ্কার দ্রুততার সঙ্গে গন্তব্যে যেতে পারে।
[আরও পড়ুন: ফের ভোট পরবর্তী হিংসায় উত্তপ্ত ভাটপাড়া, বোমাবাজিতে মৃত্যু কলেজ ছাত্রের]
দিল্লি, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশে যথাক্রমে ৪টি, ৭টি ও ৩টি অক্সিজেন ট্যাঙ্কার জোগান দেওয়া হয়েছে। এক একটি ট্যাঙ্কারে ১৫ থেকে ১৬ মেট্রিক টন অক্সিজেন ধরে। পরিস্থিতি অনুধাবন করে রেল হাসপাতালগুলিতে আরটি-পিসিআর চালুর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পাঁচ হাজার বেডও বাড়ানো হবে এই পরিস্থিতির চাপে। কোভিডের সময় পণ্য পরিবহণে ৭৩ শতাংশ আয় বেড়েছে রেলের। চলতি অর্থবর্ষে যাত্রী পরিষেবা থেকে ১৫০০ কোটি টাকা আয় হয়েছে।
রেলবোর্ডের চেয়ারম্যান কোভিড পরিস্থিতিতে রেল হাসপাতালগুলিকে অতি সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার কথা বললেও রাজ্যের দেওয়া ভ্যাকসিনের চরম সংকট দেখা দিচ্ছে হাসপাতালগুলিতে। কলকাতায় অবস্থিত রেল হাসপাতালগুলিতে ভ্যাকসিনের জোগানে কিছুটা সমতা থাকলেও জেলায় অবস্থিত হাসপাতালগুলি চরম সংকটের মুখে। লিলুয়া, কাঁচরাপাড়া, হাওড়া, আসানসোলের হাসপাতালগুলিতে ভ্যাকসিনের অভাবে মাঝে মধে্যই বিক্ষোভের মুখে পড়ছেন কর্মীরা। পূর্ব রেলের প্রিন্সিপ্যাল চিফ মেডিক্যাল ডিরেক্টর রুদ্রেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, রেলের হাসপাতালগুলিতে দৈনিক ৫০০ জনকে ভ্যাকসিন দেওয়ার পরিকাঠামো রয়েছে। তবুও জোগানের অভাবে দৈনিক ১০০ থেকে ১৫০ জনকে ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। অণ্ডাল, রানাঘাট, বর্ধমান, কাটোয়া, রামপুরহাটের রেলের হেল্থ ইউনিটগুলিকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। রাজ্য ভ্যাকসিনের জোগান দিলেই সেখানেও ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ শুরু হয়ে যাবে।