স্টাফ রিপোর্টার, শিলিগুড়ি : ঠিক যেন সুইজারল্যান্ড। তাপমাত্রা মাইনাসে। সাদা বরফের চাদরে মোড়া চারপাশ। হোটেল, বাড়ি, গাছগাছালি থেকে গাড়ি বাদ নেই কিছু। বড়দিনের আগেই উত্তর সিকিমের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ভারী তুষারপাত শুরু হতে বদলে গিয়েছে ছবি। ইয়ুমথাং, লাচেন, লাচুং হয়ে উঠেছে বরফের দেশ। সোমবার রাত থেকে সেখানে শুরু হয়েছে তুষারপাত। প্রায় তেরো মাস বন্ধ থাকার পর মঙ্গন জেলা প্রশাসনের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে লাচেন খুলে দিতে পর্যটকদের ভিড় উপচে পড়েছে। একদিকে ঘন কুয়াশার চাদরে মুখ ঢেকেছে উত্তরের পাহাড়-সমতলের বিস্তীর্ণ এলাকা। উধাও হয়েছেন সূর্যমামা। কমেছে দৃশ্যমানতা। জঁাকিয়ে বসেছে শীত। আবহাওয়া দপ্তর থেকে দার্জিলিং-সহ উত্তরের পাঁচ জেলায় ঘন কুয়াশার ‘হলুদ’ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ওই পরিস্থিতিতে দৃশ্যমানতা ১৯৯ মিটার থেকে ৫০ মিটার পর্যন্ত নেমে যেতে পারে বলেও জানানো হয়েছে। দিনরাতে যান চলাচলে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন আবহাওয়া দপ্তরের বিশেষজ্ঞরা।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের সিকিম কেন্দ্রের অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা বলেন, ‘‘পশ্চিমি ঝঞ্ঝার প্রভাবে উত্তরের পাহাড়-সমতলের তাপমাত্রা ক্রমশ নামছে। বুধবার থেকে তিনদিন ঘন কুয়াশার জন্য দৃশ্যমানতা কমতে পারে। বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে। সিকিমে তুষারপাত চলবে।’’ ঘন কুয়াশার সতর্কতা জারি হয়েছে দার্জিলিং-সহ উত্তরবঙ্গের পাঁচ জেলায়। তাপমাত্রা কমবে। বুধবার তাপমাত্রার পারদ ১৩-১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে। শৈল শহরের তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমেছে। আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরের পাঁচ জেলায় আজ, বৃহস্পতিবার সকালে ঘন কুয়াশা থাকতে পারে। সেখানে ‘হলুদ’ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। জেলাগুলো হল দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর এবং মালদহ। সেখানে ঘন কুয়াশার জন্য দৃশ্যমানতা ১৯৯ মিটার থেকে ৫০ মিটার পর্যন্ত নেমে যেতে পারে। ওই কারণে যান চলাচলে বাড়তি সতর্কতা নিতে বলা হয়েছে।
ঘন কুয়াশার জন্য উড়ান এবং রেল পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তরে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় তাপমাত্রা ২-৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস নামতে পারে। দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ের উঁচু এলাকায় বৃষ্টি এবং সিকিমে তুষারপাতের সতর্কতা রয়েছে। সিকিম সংলগ্ন দার্জিলিংয়ের উঁচু এলাকাগুলিতেও তুষারপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে প্রবল তুষারপাতের জেরে বরফের সাদা চাদরে মুড়েছে উত্তর সিকিমের লাচুং, লাচেন-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা। এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গন জেলা প্রশাসনের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে লাচুংয়ের পর পর্যটকদের জন্য লাচেন যাওয়ার পথ খুলে দেওয়া হয়েছে। গত বছর ৪ অক্টোবর লোনার্ক হ্রদ বিপর্যয়ের পর হড়পা বানে বিধ্বস্ত হয়েছিল লাচেন। ওই কারণে পর্যটকদের যাতায়াতের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে প্রশাসন।