ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: রাজস্থান, গুজরাট, উত্তরপ্রদেশ, বিহার-হিন্দি বলয়ের নিরক্ষরেখা বরাবর অবস্থান পশ্চিমবঙ্গের। বিজেপির লক্ষ্য সেই বাংলার দখল। তৃণমূলের লক্ষ্য, পালটা প্রতিরোধ গড়ে তুলে বাংলার বাইরেই বিজেপিকে রুখে দেওয়া। লড়াইয়ের সেই পর্বে প্রচারে নেমে দোল ও হোলির মতো উৎসবকে হাতিয়ার করল তৃণমূল কংগ্রেস। আগামী মঙ্গলবার কলকাতার মারোয়াড়ি সংগঠনের উদ্যোগে নজরুল মঞ্চে এক বড় মিলন উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে অনুষ্ঠানের প্রধান আকর্ষণ। মমতার বক্তব্যের পর রয়েছে কবিতাপাঠের আসর। জয়পুরের বিশিষ্ট কবি সম্পদ সরল ও উন্নাওয়ের কবি প্রিয়াঙ্কা শুক্লাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে সেখানে। নিশানাটা স্পষ্ট। ভোটের মুখে এত বড় একটা জনসংযোগের আসর। বিজেপি যেমন এমন কোনও সুযোগ ছাড়বে না। শহরের মারোয়াড়ি সম্প্রদায়কে সঙ্গে নিয়ে তেমনই একটি বিশিষ্ট হোলির উৎসবের আয়োজন করে জনসংযোগের কৌশল নিয়েছে তৃণমূল।
[একলা লড়ার সিদ্ধান্ত কংগ্রেসের, আজ আংশিক প্রার্থী তালিকা ঘোষণার সম্ভাবনা]
অর্থাৎ, সমীকরণ স্পষ্ট। হিন্দি বলয়ে বিজেপির যে প্রভাব, তাকে কোনওভাবেই বাংলায় প্রবেশ করতে দিতে চায় না তৃণমূল। সেই কারণেই একদিকে রাজনৈতিক মঞ্চ যেমন প্রস্তুত হয়েছে। তেমনই রাজস্থান ও উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যের সংস্কৃতি জগতের দুই বিশিষ্ট মানুষকে নিয়ে এসে আয়োজন হয়েছে কবিতাপাঠের আসরের। স্বভাবতই রাজস্থান, গুজরাট ও উত্তরপ্রদেশে ঘটে যাওয়া একাধিক ঘটনায় বিজেপি-আরএসএসের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দেশজুড়ে উঠেছে, তাকে ভোট ময়দানে অস্ত্র হিসাবে কৌশলে ব্যবহার করতে চাইছে তৃণমূল। রাজনীতিতে, সাহিত্য-সংস্কৃতির আলোচনায় তুলে আনতে চাইছে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি। যা ভোটযুদ্ধে অত্যন্ত কার্যকর হবে বলে মত রাজনৈতিক মহলের। এর মধ্যেই হিন্দিভাষীদের নিয়ে গঠিত রাজ্যের পুরনো কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। সেই কমিটির প্রাক্তন সভাপতি অর্জুন সিং বিজেপিতে যোগ দিতেই কমিটিটি ভেঙে নতুন একটি তদর্থক কমিটি গড়ে দেওয়া হয়েছে। যার সভাপতি হয়েছেন মণি সিং। আহ্বায়ক রাজেশ সিনহা ও প্রধান মুখ্য উপদেষ্টা হয়েছেন প্রাক্তন বিধায়ক দীনেশ বাজাজ। রাজ্যজুড়ে এই কমিটি দলের হয়ে প্রচার করবে। জুন মাসে বড় একটি কনফারেন্স করে তার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হবে বলে জানিয়েছেন বাজাজ।
[স্পর্শকাতর বলে রাজ্যকে অপমান করা হচ্ছে, কমিশনে নালিশ সুবোধ-অরিন্দমদের]
অন্যদিকে, নজরুল মঞ্চের অনুষ্ঠানই শুধু নয়, কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন অংশে দোল ও হোলি উৎসবকে কেন্দ্র করে ভোটের মুখে চূড়ান্ত জনসংযোগের কৌশল নিয়েছে রাজ্যের শাসকদল। জেলায় জেলায় চলছে তার প্রস্তুতি। উত্তর কলকাতার বিধায়ক স্মিতা বক্সির উদ্যোগে একটি কর্মসূচিতে অংশ নেবেন প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। এভাবে কোথাও প্রার্থী, কোথাও সংসদীয় ক্ষেত্র ধরে স্থানীয় কমিটির আয়োজনে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে হোলিকে কেন্দ্র করে একাধিক কর্মসূচি। লক্ষ্য মানুষের মধ্যে মিশে যাওয়া।
The post হিন্দি বলয়ে জনসংযোগে হোলিই হাতিয়ার তৃণমূলের appeared first on Sangbad Pratidin.