কিংশুক প্রামাণিক: চব্বিশের মহারণের আগে পাহাড়ের আবেগকে হাতিয়ার করে ময়দানে নেমেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনদিনের মেঘালয় সফরে ব্যাপক সাড়া পেয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। মঞ্চে দাঁড়িয়ে গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে হুঙ্কার দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর মমতার এই সফরে রীতিমতো চিন্তিত বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। বুধবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিলং ছাড়তে না ছাড়তেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন মেঘালয়ের চার বিধায়ক।
জানা গিয়েছে, বিজেপিতে এদিন যোগ দিয়েছেন বেনেডিক্ট আর মারাক (এনপিপি), ফার্লিন সি এ সাংমা (এনপিপি) , সামুল সাংমা (নির্দল) এবং হিমালয়া মুক্তান শাংপ্লিয়াং। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, কয়েকদিন আগেই তৃণমূল কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করেন শাংপ্লিয়াং।
সূত্রের খবর, মমতার পাহাড় সফরে অশনি সংকেত দেখছেন মোদি-শাহরা। ত্রিপুরা ও অসমের পর মেঘালয়ে তৃণমূল শক্ত জমি তৈরি করলে ‘সেভেন সিস্টার’ রাজ্যগুলিতে কড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হবে বিজেপিকে। এছাড়া, আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে বিধানসভা নির্বাচন হতে চলেছে মেঘালয়ে। উত্তর-পূর্বের আরও তিন রাজ্য- ত্রিপুরা, মিজোরাম ও নাগাল্যান্ডে বিধানসভা ভোট দোরগোড়ায়। লোকসভা আসনের বিচারে এই রাজ্যগুলির ফলের বিশেষ গুরুত্ব না থাকলেও, যেহেতু সব জায়গাতেই বিজেপি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ক্ষমতায় রয়েছে, তাই মোদি-ম্যাজিক কার্যকর কি না, পরীক্ষা তারও।
[আরও পড়ুন: মদ কাণ্ডে উত্তাল ‘ড্রাই’ বিহার, ‘তোমরা মাতাল’, বিধানসভায় বিজেপি বিধায়কদের তোপ নীতীশের]
সূত্রের খবর, শাংপ্লিয়াং-সহ বাকি বিধায়কদের দলে টানতে মোটা টোপ দিয়েছিল বিজেপি (BJP)। আর সেই টোপই গিলেছেন তাঁরা। উল্লেখ্য, গত মাসে মেঘালয় বিধানসভার স্পিকার মেটবাহ লিংডোর কাছে ইস্তফাপত্র জমা দিয়েছিলেন শাংপ্লিয়াং, মারাক এবং ফার্লিন সি এ সাংমা। তারপর থেকেই তাঁদের বিজেপি যোগের জল্পনা তৈরি হয়। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, মেঘালয়ের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমার দল এনপিপি-র সঙ্গে জোট সরকার রয়েছে বিজেপির। আর শরিক দলেরই বিধায়ক ছিলেন বেনেডিক্ট আর মারাক এবং ফার্লিন সি এ সাংমা।
উল্লেখ্য, গত সোমবার তিনদিনের মেঘালয় সফরে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার দুপুরে কলকাতা ফেরার আগে মুকুল সাংমা-সহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। এরপর বিমানবন্দরে গিয়ে বরাবরের মতো মিশে যান আমজনতার ভিড়ে। বেশ কিছু দোকানে ঢুকে পড়েন তৃণমূল সুপ্রিমো। বিভিন্ন জিনিসের দরদাম করেন, কিনে নেন পছন্দের সামগ্রী। পুরো সময়টা পিছনে ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর কেনাকাটার ভিডিও করতে দেখা যায় তাঁকে। মেঘালয় থেকে অভিষেককন্যা আজানিয়ার জন্য উপহারও কিনেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই কলকাতায় পৌঁছবেন মুখ্যমন্ত্রী।