নব্যেন্দু হাজরা: কলকাতার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর (East West Metro) ইতিহাসে বিশেষ দিন। হাওড়া ময়দান থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত একদিকের সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শেষ হয়ে গেল আজ। ‘উর্বী’ নামে যে টানেল বোরিং মেশিন বা টিবিএম দিয়ে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ চলেছে, তা শিয়ালদহে পৌঁছেছিল মঙ্গলবারই। আজ দুপুরে কাজ শেষ করল ‘উর্বী’।
প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে সুড়ঙ্গ ভেদ করে বেরিয়ে এল টিবিএম। সুড়ঙ্গ থেকে ‘উর্বী’র বেরিয়ে আসার সময় প্রবল ধুলোয় চারপাশ যেন ঢেকে গেল আঁধারে। এই সাফল্যের মুহূর্তের সাক্ষী থাকতে হাজির ছিলেন মেট্রোর আধিকারিক, কর্মীরা। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো সূত্রে খবর, শিয়ালদহ স্টেশন পর্যন্ত সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শেষ হওয়ায় এবার ক্রেনের সাহায্যে টিবিএম-কে পাশের টানেলে বসানো হবে। তারপর শুরু হবে শিয়ালদহ থেকে বৌবাজার পর্যন্ত আর একদিকে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ। এই কাজ শুরু হতে পারে ডিসেম্বরে।
[আরও পড়ুন: নবান্ন অভিযানে ‘পুলিশি জুলুম’, সংসদে স্বাধিকার ভঙ্গের অভিযোগ জানাবে বিজেপি]
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পে ধর্মতলা থেকে শিয়ালদহের (Sealdah) দিকে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শুরু হয় ২০১৯-এর মার্চে। গত বছরের আগস্টের শেষে সুড়ঙ্গে বিপর্যয়ের কারণে বন্ধ হয়ে যায় কাজ। তারপর কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে ফের কাজ শুরু হয় এ বছরের জানুয়ারিতে। সূত্রের খবর, সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শুরু করে ‘চণ্ডী’ ও ‘উর্বী’ নামে দু’টি টিবিএম। কিন্তু সুড়ঙ্গের মধ্যেই অকেজো হয়ে পড়ে ‘চণ্ডী’। এ বছর আগস্টের শেষ থেকে ‘উর্বী’ই সুড়ঙ্গ খোঁড়ার পুরো কাজ করেছে। আবার শিয়ালদহ থেকে বৌবাজার, ‘চণ্ডী’র অসমাপ্ত সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজও শেষ করবে ‘উর্বী’।
কলকাতার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের এই সাফল্যের ঠিক আগেই কেন্দ্রের তরফে বাজেট বরাদ্দ বাড়ানোর সুখবর এসে পৌঁছয় মেট্রো কর্তাদের কাছে। বরাদ্দ বেড়ে হয়েছে ৮ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধিতে অনুমোদন দিয়েছে। সেইসঙ্গে আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্প শেষের মেয়াদ ধার্য হয়েছে। দিন চারেক আগেই ফুলবাগান স্টেশনের ভারচুয়াল উদ্বোধনে ২০২১-এর ডিসেম্বরে এই প্রকল্প শেষ করার ঘোষণা করেছিলেন রেলমন্ত্রী পীযুষ গোয়েল। তা যে কেবল কথার কথা ছিল না, তা বোঝা গেল মন্ত্রিসভার বাজেট বরাদ্দ দেখে।
[আরও পড়ুন: উপসর্গ ছাড়াই করোনা পজিটিভ পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের গাড়ির চালক, সুস্থও]
ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, ২০২১ সালের নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই এই প্রকল্পে গতি আনতে চাইছে কেন্দ্র। এর আগে একাধিকবার নানা সমস্যায় থমকে গিয়েছে প্রকল্পের কাজ। বাজেটে বরাদ্দও বাড়ানো হয়েছিল। এবার তা আরও বাড়িয়ে সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ করে ফেলতে চাইছে কেন্দ্র।