অর্ণব আইচ: করোনা (Coronavirus) পরিস্থিতিতে অক্সিজেন সিলিন্ডার পেতে হাহাকার শহরবাসীর। এর মধ্যেই অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ করার নামে ফাঁদ পেতেছে প্রতারণা চক্র। শুধু তাই নয়, অক্সিজেন সরবরাহ করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে অগ্রিমও নেওয়া হয়েছে গ্রাহকের থেকে। খাস কলকাতায় এ ধরনের অভিযোগের ভিত্তিতে এই চক্রের দু’জনকে গ্রেপ্তার করলেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত দুই তরুণের নাম রূপম সাহা ও প্রমিত ভট্টাচার্য। রূপমের বয়স মাত্র ১৯ বছর। প্রমিত নিজেকে অভিজিৎ দাস বলে পরিচয় দিত। প্রমিত এই চক্রের এক পান্ডা বলে খবর পুলিশের কাছে। দুই ধৃতের বাড়ি খড়দহ থানা এলাকার সোদপুরে।
কিছুদিন আগে নিউ আলিপুর থানা এলাকার উস্তাদ আমির আলি সরণির বাসিন্দা এক যুবকের পরিজন করোনা আক্রান্ত। তাঁর অক্সিজেন (Oxygen) সিলিন্ডারের প্রয়োজন হয়। খোঁজখবর করতে গিয়ে ওই যুবকের একটি অনলাইন বিজ্ঞাপনে চোখ পড়ে। অভিজিৎ নামে এক যুবক বিজ্ঞাপন দিয়ে জানিয়েছে যে, সে অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ করে। নিউ আলিপুরের ওই যুবক সারা শহরের বহু জয়গায় চেষ্টা করেও অক্সিজেন সিলিন্ডার পাচ্ছিলেন না। ওই বিজ্ঞাপনটি দেখে তিনি ভরসা পান। একটি ফোন নম্বর দেওয়া ছিল। ফোন নম্বরে তিনি যোগাযোগ করেন। অভিজিৎ নামে ওই যুবক জানায়, অক্সিজেন সিলিন্ডার পেতে গেলে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে আগাম টাকা পাঠাতে হবে। অক্সিজেন সিলিন্ডার তাঁর ঠিকানায় পৌঁছে যাবে।
[আরও পড়ুন: টাকা না পেয়ে বান্ধবীর অশ্লীল ছবি ফেসবুকে আপলোড করে ধৃত ১]
তিনি সেইমতো একটি অ্যাকাউন্টে ৬,৩৮০ টাকা পাঠান। কিন্তু অভিযোগ, টাকা দেওয়ার পরই অভিজিৎ তাঁকে এড়িয়ে চলতে থাকে। এরপর সে নিজের মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেয়। অক্সিজেন সিলিন্ডার না পেয়ে যুবকের ততক্ষণে মাথায় হাত। তিনি লালবাজারের (Lalbazar) গোয়েন্দা বিভাগে বিষয়টি জানান। এই ব্যাপারে হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকরা তদন্ত করতে শুরু করেন। যে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়া হয়েছিল, সেই সূত্র ধরে তদন্ত করেই প্রথমে সোদপুরের পূর্বপল্লি থেকে রূপম নামে ওই তরুণকে গ্রেপ্তার করা হয়। জেরার মুখে সে জানায়, তারই এক পরিচিত প্রমিত ভট্টাচার্য পুরো বিষয়টি জানে। সেই সূত্র ধরেই সোদপুরের নীলগঞ্জ রোড থেকে গ্রেপ্তার করা হয় প্রমিতকে।
[আরও পড়ুন: ‘উদ্দেশ্য পূরণ হয়নি, তাই ফিরে যাচ্ছেন’, সোনালি গুহকে খোঁচা দিলীপ ঘোষের]
পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, দু’জনকে জেরা করে জানা গিয়েছে যে, কলকাতা ও তার আশপাশের এলাকায় অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ করার নাম করে এভাবে প্রতারণা করা হচ্ছে। এর আগে আরও কয়েকজনকে তারা প্রতারণা করেছে বলে অভিযোগ। এর পিছনে একটি চক্রও রয়েছে। শনিবার দুই অভিযুক্তকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে তাদের ২৭ মে পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। দু’জনকে জেরা করে এই চক্রের অন্যদের সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।