সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কিছুতেই থামছে না রাশিয়া ও ইউক্রেনের (Ukraine) যুদ্ধ। প্রায় ৫০ দিন অতিক্রান্ত হলেও কিয়েভ দখল করতে পারেনি পুতিনবাহিনী। তবে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি শহর। কিন্তু পরিস্থিতি প্রতিকুল হলেও প্রবল লড়াই চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। ফলে সংঘাত যে দীর্ঘমেয়াদী হতে চলেছে তা স্পষ্ট। এহেন পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, যুদ্ধে তাদের আড়াই থেকে তিন হাজার সেনার মৃত্যু হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ইউক্রেনের মিসাইল ফ্যাক্টরি গুঁড়িয়ে দিল রাশিয়া, কিয়েভে প্রচণ্ড বোমাবর্ষণের হুমকি মস্কোর]
শুক্রবার সিএনএন-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি জানান, তাঁর সেনা প্রবল বিক্রমে যুদ্ধ করছে তবে পূর্ব ও দক্ষিণ ইউক্রেনে পরিস্থিতি জটিল। মারিওপোলেও ভয়াবহ লড়াই চলছে। এখনও পর্যন্ত যুদ্ধে আড়াই থেকে তিন হাজার ইউক্রেনীয় সেনার মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা হাজার দশেক। যুদ্ধে অসংখ্য সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এখনও সেই সংখ্যা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। এদিনের সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, প্রায় ৫০ দিন ধরে চলা যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত ১৯ থেকে ২০ হাজার রুশ সেনার মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রাতে দেশবাসীর উদ্দেশে এক ভিডিও বার্তায় জেলেনস্কি বলেন, “যুদ্ধক্ষেত্রে আমাদের সেনাবাহিনীর সাফল্য ঐতিহাসিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তবে এখনও আমাদের দেশ থেকে হানাদার বাহিনীকে সম্পূর্ণভাবে হঠিয়ে দেওয়া যায়নি।”
এদিকে, যুদ্ধে যে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা স্বীকার করেছে রাশিয়া। বৃহস্পতিবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানান, যুদ্ধে রুশ সেনাবাহিনী ‘যথেষ্ট ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে’। যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত ১ হাজার ৩৫১ জন সৈনিকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে মস্কো। আহত অন্তত হাজার তিনেক সেনা। বিশ্লেষকদের মতে, সেনাবাহিনীর মনোবল চাঙ্গা করতে রাশিয়ার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়িয়ে বলছে ইউক্রেন। একই কারণে, নিজেদের ক্ষতির সংখ্যা কমিয়ে দেখাচ্ছে মস্কো। সবমিলিয়ে, দুই পক্ষেরই বিশাল ক্ষতি হচ্ছে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
উল্লেখ্য, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করেছে রাশিয়া (Russia)। সম্প্রতি কিয়েভের আশপাশের এলাকা রাশিয়ার হাত থেকে উদ্ধার করেছে ইউক্রেন। ভয়াবহ হামলা চালালেও ইউক্রেনের কোনও বড় শহর দখল করতে পারেনি পুতিনবাহিনী। প্রায় ৫০ দিন ধরে ভৌগোলিক ভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বন্দর শহর মারিওপোলের চারদিক ঘিরে ধরে লাগাতার আক্রমণ চালাচ্ছে রাশিয়া। ভৌগোলিক ও কৌশলগত দিক থেকে রাশিয়ার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পূর্ব ইউক্রেনের বন্দর শহর মারিওপোল। কারণ, রাশিয়া অধিকৃত ক্রাইমিয়ার সঙ্গে রুশপন্থীদের কব্জায় থাকা ডোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক এলাকাকে (দোনবাস অঞ্চল) যুক্ত করতে চায় মস্কো। এই যোগসাধনের জন্য প্রয়োজন বন্দর শহর মারিওপোলে দখল কায়েম করা। সেই কারণেই শহরটি রাশিয়ার কাছে এত গুরুত্বপূর্ণ। বস্তুত, মারিওপোল দখলের লড়াইয়ে ইতিমধ্যেই হাজারের উপর সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন।