shono
Advertisement

এই পুজোতে ‘মধু-বিধু’রাও পরবে নতুন জামা

'ফিড'-এর হাত ধরে পুজোর আনন্দে মাতল পথশিশুরা। The post এই পুজোতে ‘মধু-বিধু’রাও পরবে নতুন জামা appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 09:08 PM Sep 29, 2018Updated: 09:45 PM Sep 29, 2018

চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: “আশ্বিনের মাঝামাঝি উঠিল বাজনা বাজি/ পূজার সময় এলো কাছে,/ মধু বিধু দুই ভাই ছোটাছুটি করে তাই/ আনন্দে দুহাত তুলি নাচে।”… রবি ঠাকুরের কবিতায় মধু-বিধুর গরিব বাপ শুধু ছিটের জামা, ধুতি, চাদর এনে দিতে পেরেছিল ছেলেদের জন্য, কিন্তু এ শহরেই কত মধু-বিধু রয়েছে যাদের সেটুকুও জোটে না। এবার পুজোয় তারাই পাবে নতুন জামা। সৌজন্যে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘ফিড’।

Advertisement

শুধু শহর নয়, সারা বছর ধরে বাথানবাড়ির নদীর চরে গরু চড়ায় ওরা। সারাদিন নৌকা চালায় মাইথনে, দুটো পয়সার জন্য গুলির খোল কুড়িয়ে বেড়ায়, সিধাবাড়ির নদীর চরে কোয়ার্টজ পাথর খনন করে। পাথর খাদান বা ইটভাটায় কাজ করে সেরকম পরিবারের শিশুদের মলিন মুখে খালি গায়ে মণ্ডপের পিছনের অন্ধকারে দাঁড়িয়ে  থাকতে দেখা যায়। আর মণ্ডপের সামনেটা বরাদ্দ থাকে রায় বাবুদের গুপীদের জন্য। এই বৈষম্যটা ভাবিয়ে তুলছিল ‘ফিড’কে। ফিডের উদ্যোগে ফুড ব্যাংক তৈরি হয়েছে আগেই। যেখানে দুবেলা করে পথশিশুদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। তৈরি হয়েছে ‘ভগবানের দোকান’, দুঃস্থরা সেখান থেকে সারাবছর পুরনো জামাকাপড় নিয়ে যান। তবে  পুজোর সময় পুরানো নয়, আসানসোলের মধু-বিধুদের দিতে হবে নতুন জামাকাপড়। এই ভাবনা থেকেই  আশ্বিনের বাজনা বাজার আগেই ‘ফিড’ নেমে পড়ল বাথানবাড়ির  চরে, ইটভাটায় কিংবা বিএনআর ব্রিজের নিচে। শিশুদের হাতে তাঁরা তুলে দিচ্ছে পুজোর জামাকাপড়। ঝকঝকে নতুন টিশার্ট প্যান্ট  পেয়ে খুশির ঝিলিক শিশুদের মুখে।

ফিডের কর্ণধার শিক্ষক চন্দ্রশেখর কুণ্ডু বলেন, ‘ভাগ করে নিলে আনন্দ বাড়ে। দুঃস্থ শিশুদের পুজোর আনন্দে শামিল করাই ছিল মূল উদ্দেশ্য। এই কাজ করতে গিয়ে  প্রয়োজন অর্থের। এই উদ্যোগে সাড়া দিয়ে প্রথম এগিয়ে এসেছেন মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা উদ্যোগপতি অঞ্জনা সাহা। সবার আগে তাঁর দেওয়া নতুন জামাকাপড়ই আমাদের হাতে  আসে। বাথানবাড়ির পথেঘাটে খেলা করে বেড়ানো শিশুদের হাতে সেই নতুন পোশাক তুলে দিয়েছি ইতিমধ্যেই। শিশুরা সেখানে সারাদিন টো টো করে ঘুরে বেড়ায়। কেউ  নৌকা চালায়, কেউ বা গরু চড়ায়, ইটভাটায়ও কাজ করে অনেকে। ছোট্ট ছোট্ট হাতে কেউ বা পাতা কুড়িয়ে বে়ড়ায়। শারদোৎসবের আমেজ ওদের জীবনে লাগে না।  নতুন জামা পেয়ে শিশুদের মুখে এক অনাবিল হাসি দেখতে পেয়ে উৎসাহ আরও বেড়ে গেল। পুজোতে নতুন জামা পরার কথা ওরা ভাবতেই পারে না। ওদের ওই খুশিটুকুই আমাদের পাওনা।’ এবার লক্ষ্যে শহর ও প্রান্তিক এলাকার পথশিশুরা। এই পুজোতে ওদের মুখে হাসি ফোটাতে চাই আরও ৫০০ নতুন জামাকাপড়। তারই জোগাড়যন্ত্র
শুরু হয়েছে।

[ঢাকের বোলে পুজো এলেও বিজ্ঞাপনের সস্তা গেঞ্জিই তাঁদের নতুন জামা]

এই সাধু উদ্যোগে এগিয়ে এসেছেন অষ্ট্রেলিয়ার প্রবাসী বাঙালি পায়েল ঘোষ ও সুমন চৌধুরি। তারপরই পথশিশুদের সঙ্গে পুজোর আনন্দ ভাগ করে নিতে নতুন পোশাক কেনার তোড়জোর শুরু হয়েছে। নতুন জামা পেয়ে নেইরাজ্যের শিশু মুখগুলি যেন সব পেয়েছির দেশে চলে গিয়েছে। এই শারৎসবে রবিঠাকুরের  মধু-বিধুদের আনন্দ দিতে পেরে খুশি ‘ফিড’।

[জলপাইগুড়ির তিস্তাপারের পুজোয় ঘট ভেঙে দুগ্গা মায়ের আবাহন]

The post এই পুজোতে ‘মধু-বিধু’রাও পরবে নতুন জামা appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement