এবছর করোনা আবহেই পুজো। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাবগুলিতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি৷ কলকাতার বাছাই করা কিছু সেরা পুজোর সুলুকসন্ধান নিয়ে হাজির sangbadpratidin.in৷ আজ পড়ুন হিন্দুস্থান পার্ক সর্বজনীনের পুজোর প্রস্তুতি৷
সায়নী সেন: ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ভাইরাস থাবা বসিয়েছে বিশ্বে। প্রাণঘাতী হানায় বহু মানুষ হারিয়েছেন প্রাণ। নিরন্তর চলছে যমে-মানুষে লড়াই। বিশ্ববাসী ভ্যাকসিনের (Vaccine) প্রতীক্ষায় প্রহর গুনছে। তবু বাড়ির বয়জ্যেষ্ঠ সদস্যরা সময় পেলে এই অতিমারী থেকে মুক্তির জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছেন। চলতি বছর কঠিন সময়েই মর্ত্যে আসছেন উমা। তাঁর কাছে সকলের একটাই কামনা বিপদ থেকে রক্ষা করো মা। আর এই ভাবনাকে পাথেয় করেই এবার দুর্গা আরাধনার প্রস্তুতিতে ব্রতী হিন্দুস্থান পার্ক সর্বজনীন।
দক্ষিণ কলকাতার এই পুজো ৯০ তম বর্ষে পা দেবে। অতিমারী থেকে গোটা বিশ্ববাসীর মুক্তির আশায় তাদের এবারের থিমভাবনা ‘মানত’। শিল্পী রিণ্টু দাসের হাতের ছোঁয়ায় একটু একটু করে সেজে উঠছে মণ্ডপ। থিমভাবনার ছবি তুলে ধরতে গিয়ে শহরের ইট, কাঠ, কংক্রিটের মাঝে যেন একটুকরো প্রত্যন্ত গ্রামকে ফুটিয়ে তুলছেন শিল্পী। সেখানে রয়েছে মানতের থান। প্রদীপ, নানা দেবদেবীর ছবি, তর্পণ, মানত করে ঝুলিয়ে দিয়ে যাওয়া ছোট ছোট ঢিলের সাহায্যে সাজছে মণ্ডপ।
তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই আদল দেওয়া হয়েছে প্রতিমার। সিঁদুর লাগানো কোষ্ঠীপাথরের প্রতিমা থাকবে মণ্ডপে। যাতে ওই দেবীমূর্তি দেখেই আপনি বুঝতে পারেন শুধু বছরের পাঁচটা দিন নয়। সারাবছর ওই দেবী আরাধনায় মগ্ন থাকেন সকলে।
[আরও পড়ুন: দর্শনার্থীদের মণ্ডপে প্রবেশ নিষেধ, করোনা আবহে ভাবনায় বদল কলকাতার এই বারোয়ারির]
তবে থিমভাবনা, প্রতিমা ছাড়াও এবার হিন্দুস্থান পার্ক সর্বজনীনের (Hindustan Park Sarbojanin) প্রধান আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু মণ্ডপের প্রবেশপথ। কারণ, সেখানে রাখা হচ্ছে একটি দাঁড়িপাল্লা। ওই দাঁড়িপাল্লার একদিকে রাখা থাকবে দেবীমূর্তি। আরেকদিকে থাকবে সমান ওজনের বাতাসা। ওই দাঁড়িপাল্লার চতুর্দিকে থাকবে বহু মানুষের ছবি। ক্লাব উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি শহরের অন্যান্য পুজোর সঙ্গে জড়িত শিল্পী থেকে কর্তাব্যক্তি সকলের ছবিই থাকবে প্রবেশদ্বারে। এছাড়া পুজো নিয়ে লেখালেখি করেন এমন কয়েকজন সাংবাদিকের ছবিও সেখানে দেখা যাবে। তাঁদের ছবি দেখে মনে হবে যেন সকলেই দেবীপ্রতিমার কাছে মানত করছেন।
কোভিড (Covid-19) পরিস্থিতিতে সংক্রমণ এড়িয়ে দর্শনার্থীদের সামনে নিজেদের শিল্পভাবনা তুলে ধরাই যেন পুজো উদ্যোক্তাদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। খুব সতর্কতার সঙ্গে সেই চ্যালেঞ্জ নিচ্ছেনও তাঁরা। পুজো উদ্যোক্তাদের দাবি, মণ্ডপে দর্শনার্থীদের ঢুকতে দেওয়া হবে। তবে তাঁদের মাস্ক অবশ্যই পরতে হবে। যাঁদের থাকবে না, তাদের তা দেবেন পুজো উদ্যোক্তারাই। এছাড়াও মণ্ডপে ঢোকার সময় হাতে স্যানিটাইজার দেওয়া হবে। থার্মাল স্ক্রিনিংও হবে দর্শনার্থীদের। মণ্ডপে একসঙ্গে ১৫ জনের বেশি কাউকে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না। তুলতে দেওয়া হবে না সেলফিও। মণ্ডপের সামনে জরুরি চিকিৎসার বন্দোবস্তও রাখা হচ্ছে। তাই সতর্কতা মেনে আপনিও নির্দ্বিধায় হিন্দুস্থান পার্ক সর্বজনীনের মণ্ডপে একবার ঢুঁ মারতেই পারেন।
