সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইরানের পরমাণু গবেষণা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছিল ইজরায়েল এবং আমেরিকার। তেহরান পরমাণু শক্তিধর হোক কিছুতেই চাইছিল না তারা। সেই কারণেই ইরানের পরমাণুকেন্দ্রেগুলিকে টার্গেট করেছিল ইজরায়েল ও আমেরিকা। ইরানের একাধিক উচ্চপদস্থ প্রশাসনিক কর্তা, সেনা আধিকারিক এবং পরমাণু বিজ্ঞানীদেরও টার্গেট করেছিল ইজরায়েল। এই উত্তেজনার মাঝেই ফের একবার বিদেশী তেলবাহী জাহাজ আটক করেছে ইরান। শুক্রবার হরমুজ প্রণালীতে এই ঘটনা ঘটেছে।
বিচার বিভাগের প্রাদেশিক প্রধান মোজতবা ঘরামানি বলেন, তেল ট্যাঙ্কারটি প্রায় ৪০ লক্ষ লিটার বা ২৫ হাজার ব্যারেল জ্বালানি চোরাচালান করছিল। বিপ্লবী গার্ড নৌবাহিনী জাহাজটি হরমুজ প্রণালীতে আটক করে। ইরানের সরকারি সংবাদমাধ্যম আইআরএনএ এই খবর জানিয়েছে। মোজতাবা আরও বলেন, নৌবাহিনী ১৬জন বিদেশী ক্রু সদস্যকে আটক করেছে। তাঁদের দাবি, এই ঘটনা তেল চোরাচালানকারীদের বিরুদ্ধে এক বড় ধাক্কা। যদিও, ক্রুরা কোন দেশের তা জানানো হয়নি। পাশপাশি, ট্যাঙ্কারটি কোন দেশের পতাকা বহন করছিল তাও জানানো হয়নি।
ইরান প্রায়ই সেদেশের উপকূল এলাকায় বিদেশী জাহাজ আটক করে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ট্যাঙ্কারগুলির বিরুদ্ধে তেল চোরাচালানের অভিযোগ করে তারা। গত নভেম্বরে, হরমুজ প্রণালী দিয়ে যাওয়ার সময় একটি জাহাজ আটক করে ইরান। ইরানের দাবি, নিয়ম লঙ্ঘন করে অবৈধ জিনিস চালান করছিল সেই জাহাজ।
২০১৯ সাল থেকে, বিভিন্ন জাহাজ এবং ট্যাঙ্কারে ধারাবাহিকভাবে লিম্পেট মাইন হামলার অভিযোগ করেছে পশ্চিমী দেশগুলি। ২০২১ সালে ইজরায়েলের একটি তেল ট্যাঙ্কারে ড্রোন হামলার অভিযোগ ওঠে ইরানের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় দুই ইউরোপীয় ক্রু নিহত হয়েছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে ২০১৫ সালে ইরানের পারমাণবিক চুক্তি একতরফাভাবে প্রত্যাহার করেন। এর পর থেকেই এই হামলাগুলি শুরু হয় বলে অভিযোগ।
ইরান ও পশ্চিমী বিশ্বের মধ্যে বছরের পর বছর ধরে চলা উত্তেজনার পর, গাজা উপত্যকার পরিস্থিতিকে সামনে রেখে জুন মাসে ইরান এবং ইজরায়েলের মধ্যে ১২ দিনের পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধে বহু সামরিক কমান্ডার এবং পারমাণবিক বিজ্ঞানীরা নিহত হন। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইজরায়েলে ২৮ জন নিহত হন।
তেহরান দীর্ঘদিন ধরেই হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। এই প্রণালী পারস্য উপসাগরের পৌঁছানোর জন্য একটি সংকীর্ণ রাস্তা। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের মোট বাণিজ্যিক তেলের ২০ শতাংশ পরিবহণ হয়।
