ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: উত্তরে হিমালয় রেঞ্জ। দক্ষিণে দিগন্ত বিস্তৃত নীল জলরাশি। পশ্চিমের লালমাটি থেকে দক্ষিণ-পূর্বে নোনতা মাটিতে ম্যানগ্রোভ অরণ্য। কী নেই বাংলায়! দেশ-বিদেশের পর্যটকদের জন্য 'রত্নখনি' এই রাজ্য! আর বাংলার সেই রূপকেই সম্মান জানিয়েছে ইউনেস্কো। তারা বলছে, বাংলা অন্যতম সেরা পর্যটনক্ষেত্র। সোমবার বিধানসভায় দাঁড়িয়ে এমনই দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজ্য়ের পর্যটন নিয়ে আলোচনায় বিধানসভায় এদিন মমতা বলেন, "টুরিজম ভাস্ট এরিয়া। অনেক পলিসি হয়েছে। চা বাগানে ১৫% ল্যান্ডে আমরা কাজ করছি। শ্রমিকরা কাজ করছে। বড় হোটেল হচ্ছে। ইউনেস্কো বলেছে বেঙ্গল ট্যুরিজম ডেস্টিনেশন।" বাংলায় পর্যটনের বৈচিত্র্য সম্পর্তে বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, "আমাদের টি ট্যুরিজম আছে, ট্র্যাডিশনাল ট্যুরিজম আছে। প্রত্যেক জায়গায় গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি।" শুধু পাহাড় নয়, সমুদ্রেও পর্যটকদের টানতে সমান তৎপরতায় কাজ করেছে রাজ্য সরকার। এদিন সেই উদাহরণ তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, "মানুষ সমুদ্রে যেতে ভালোবাসে। সঙ্গে একটা তীর্থক্ষেত্র থাকলে ভালো লাগে। পুরীর মতো দিঘায় মন্দির হচ্ছে। মন্দির তৈরি। নিম কাঠের ঠাকুর থাকবে। ওটাই পুজো হবে। পাথরের মূর্তিও থাকবে।" গঙ্গাসাগরেও কাজ চলছে বলে জানান। রাজ্যের 'সুন্দরী রূপে'র প্রশংসা করে তিনি বলেন, "আমাদের পাহাড়, সমুদ্র, রয়্যাল বেঙ্গল, চা বাগান আছে। অনেক সুন্দর জিনিসে সৌন্দর্যায়িত।"
তবে শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নয়, পর্যটনকে আরও উন্নত ও পেশাদারি করে তুলতে স্কিল ডেভলপমেন্টের কাজও চলছে। এ প্রসঙ্গে রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন বলেন, "বিদেশিরা আসছে। সেই পর্যটকদের সঙ্গে যাতে তাঁদের মতো করে কথা বলতে পারে তার জন্য ল্যাংগুয়েজ স্কিল ডেভেলপ করা হয়েছে। ম্যানেজাররা ওয়েল ইকুইপিড।" পর্যটন পরিকাঠামো উন্নয়নে রাজ্যের তৎপরতা বোঝাতে পরিসংখ্যান তুলে ধরেন তিনি। বলেন, "আমরা বলেছিলাম, ৬ মাসে এক নম্বর হবে। এক নম্বর শুধু না, ২ হাজার ৪৮৯ হোম স্টে হয়েছে শুধু উত্তরবঙ্গে। ৬৫% জায়গায় হোম স্টে চলছে। এই প্রপার্টি চালানো শুধু না, তাদের মাধ্যমে লোকাল লোকের ইনডাইরেক্ট এমপ্লয়মেন্ট করা হচ্ছে। টুর গাইড থেকে, লোকাল গাড়ি সবাইকে নিয়ে সেই কাজ হচ্ছে।"
রাজ্যের মুকুটের নতুন পালক ইউনেস্কোর নয়া তকমা। সেই মুকুট ধরে রাখতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছে সরকারও। এদিন বিধানসভায় সেই খতিয়ানই তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী ও পর্যটন মন্ত্রী।