সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা আবহে বাজেট পেশ করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। মন্দার বাজারে প্রত্যাশামতোই চাহিদা বাড়াতে মরিয়া সরকার। এর জন্য একাধিক জনকল্যাণমূলক প্রকল্প ও পরিকাঠামো উন্নয়নে বিপুল বিনিয়োগ করেছে কেন্দ্র। ফলস্বরূপ, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে কোষাগার ঘাটতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে জিডিপি’র ৯.৫ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবর্ষের কোষাগার ঘাটতি জিডিপি’র ৬.৮ শতাংশ হওয়ার আশঙ্কা।
[আরও পড়ুন: কৃষক বিক্ষোভের মধ্যেই ফসলের MSP নিশ্চিত করার ঘোষণা নির্মলার, বাড়ছে বিনিয়োগ]
এদিন বাজেটের শুরুতেই আত্মনির্ভর হওয়ার লক্ষ্যে পদক্ষেপ করার কথা বলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। সেই দিশায় অগ্রসর হয়ে অর্থনীতিতে আগামী ৫ বছরে ৫.৫৪ লক্ষ কোটি টাকা মূলধন বিনিয়োগের কথা ঘোষণা করেন তিনি। একইসঙ্গে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বরাদ্দ করেন ৫৪ হাজার কোটি। রাস্তা ও হাইওয়ে তৈরির ক্ষেত্রে ভারতমালা প্রকল্পে জোর দেওয়া হয়। কলকাতা-শিলিগুড়ি হাইওয়ে ও অসমের রাস্তা উন্নয়নে মোটা টাকা বরাদ্দ করার কথাও জানান নির্মলা সীতারমণ। পাশাপাশি, কৃষকদের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য দেওয়ার নিশ্চয়তা দিয়েছে সরকার। কৃষকদের তাঁদের ফসল কেনার জন্য ১ লক্ষ ৭২ হাজার কোটির বেশি বরাদ্দ করলেন অর্থমন্ত্রী। কৃষিক্ষেত্রে ২০২২-এর মধ্যে কৃষকদের ঋণ বরাদ্দ বেড়ে ধার্য হয়েছে ১৬.৫ লক্ষ কোটি। এছাড়া, উজ্জ্বল প্রকল্প, হোম লোনে ছাড় ও কর্পোরেট ট্যাক্সেও ছাড় ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী। সব মিলিয়ে মানুষের হাতে নগদ পৌঁছে চাহিদা বাড়ানোর চেষ্টা করছে কেন্দ্র। কিন্তু এর ফলে ধাক্কা খেয়েছে কোষাগার। করোনাকালে সরকারের আয় কমে যাওয়ায় ২০২০-২১ অর্থবর্ষে কোষাগার ঘাটতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে জিডিপি’র ৯.৫ শতাংশ। যা প্রত্যাশার চাইতে অনেক বেশি।
এদিকে, অর্থনীতিবিদদের মতে, এখন কোষাগার ঘাটতি নিয়ে সরকারের বিশেষ উদ্বিগ্ন হওয়ার প্রয়োজন নেই। অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সরকারকে বাজারে টাকা জোগান দিতে হবে। ফলে ঘাটতি মেটাতে সরকারকে ঋণ নিতে হতে পারে। মূল্যবৃদ্ধি হওয়ায়ও অস্বাভাবিক নয়। তবে সব মিলিয়ে চাহিদা বাড়লে ফের মজবুত হবে অর্থনীতি বলেই মত বিশ্লেষকদের।
উল্লেখ্য, বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিন সংসদে অর্থনৈতিক সমীক্ষা পেশ করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। করোনাকালে আর্থিক স্থবিরতা দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেললেও, দ্রুত ঘুরে দাঁড়াচ্ছে দেশ বলে জানান তিনি। সমীক্ষায় বলা হয়, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে অর্থনীতি ৭.৭ শতাংশ সংকুচিত হতে পারে। তবে ২০২১-২২ অর্থবর্ষে দ্রুতগতিতে ঘুরে দাঁড়াবে দেশ। অর্থনীতির ভাষায় যাকে বলা হয় ‘ভি শেপ রিকভারি’। আগামী অর্থবর্ষে জিডিপি বৃদ্ধির হার ১১.৫ শতাংশ বলে দাবি করা হয়েছে সমীক্ষায়। সরকারের আরও দাবি, ভ্যাকসিন এসে যাওয়ায় ১৯৯১ সালে বিশ্বায়নের পর ২০২১-২২ অর্থবর্ষে জিডিপি বৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশি হবে। তবে, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে বাজেট ঘাটতি আশঙ্কার চাইতেও বেশি দাঁড়িয়েছে।