মলয় কুণ্ডু: পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) তিনটি আন্তর্জাতিক সীমান্তে সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করার পাশাপাশি আন্তঃদেশীয় বাণিজ্যে গতি আনতে পরিকাঠামো বাড়ানো হবে। সে লক্ষ্যে সীমান্ত বরাবর কয়েকশো কিলোমিটার জুড়ে কাঁটাতারের বেড়া তোলা, সাতটি নয়া ইন্টিগ্রেটেড চেক পোস্ট তৈরি এবং ল্যান্ড পোর্টে অত্যাধুনিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে যৌথভাবে কাজ করবে কেন্দ্র ও রাজ্য।
পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশ (Bangladesh), নেপাল (Nepal), ভুটানের মতো তিনটি স্পর্শকাতর আন্তর্জাতিক সীমান্ত থাকায় দেশের নিরাপত্তায় বাড়তি গুরুত্ব রয়েছে এ রাজ্যের। পাশাপাশি দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একমাত্র ‘গেটওয়ে’ এই পশ্চিমবঙ্গ। স্বাভাবিকভাবেই পড়শি তিন দেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যর বিষয়টি অনেকংশে নির্ভর করছে পশ্চিমবঙ্গের উপর। ফলে জাতীয় সুরক্ষা ও বাণিজ্য- দু’টি ক্ষেত্রে এগোতে গেলে রাজ্যের অবস্থান কেন্দ্রের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটা মাথায় রেখেই প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে শুক্রবার বৈঠক করতে রাজ্যে আসেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা। বৈঠকে ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব এইচকে দ্বিবেদী, স্বরাষ্ট্রসচিব বি গোপালিকা-সহ প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা।
[আরও পড়ুন: ভরসন্ধেয় নবান্নের কাছে অগ্নিকাণ্ড, কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা]
এদিন বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব। এছাড়াও সীমান্তস্থিত স্থলবন্দর বা ল্যান্ড পোর্টগুলির আধুনিকীকরণ নিয়ে পর্যালোচনা হয়। ভারত-নেপাল সীমান্তে পানিট্যাঙ্কি, ভারত-ভুটান সীমান্তে জয়গাঁও ছাড়াও ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে চ্যাংরাবান্দা, পেট্রাপোল, মহদীপুরের আধুনিকীকরণ দ্রুত শেষ করা হবে। যেভাবে বিমানবন্দর বা সমুদ্রবন্দরের ক্ষেত্রে অভিবাসন, শুল্ক এবং প্রয়োজনীয় দপ্তরগুলি থাকে, তেমন এই স্থলবন্দর বা ল্যান্ড পোর্টেও থাকবে। বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান থেকে পশ্চিমবঙ্গ হয়ে দেশের অন্যান্য প্রান্তে যাওয়ার জন্য যাবতীয় পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে। সামগ্রিকভাবে বিষয়টি দেখার জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে অফিসারদের একটি দলও রাজ্যে আসবে।
[আরও পড়ুন: WBJEE Exam 2022: অফলাইনেই হবে রাজ্যের জয়েন্ট এন্ট্রান্স, ঘোষিত হল পরীক্ষার সূচি]
পাশাপাশি রাজ্যে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বা বিএসএফ নজরদারির জন্য আউটপোস্ট তৈরির জমি চিহ্নিত করেছে। স্থানীয়ভাবে জেলা আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এই কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে সহমত হয়েছে কেন্দ্র—রাজ্য। পশ্চিমবঙ্গের দশটি জেলা মিলে আন্তর্জাতিক সীমান্তের দৈর্ঘ্য অন্তত ১ হাজার ১৬৪ কিলোমিটার, যার মধ্যে অনেকটাই কাঁটাতারের বেড়ায় সুরক্ষিত। আরও ২৮৯ কিলোমিটার কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হবে। এর মধ্যে প্রায় ১৮২ কিলোমিটারের কাজ দ্রুত সেরে ফেলতে পরিকল্পনাও চূড়ান্ত। কর্তারা আশাবাদী, কোনও এলাকা অরক্ষিত না থাকলে সীমান্তে অনুপ্রবেশ বা সীমান্তবর্তী জেলাগুলোয় অপরাধ কমানো সম্ভব হবে, রোখা যাবে চোরাচালানও। সীমান্তে তাই বাড়তি নজরদারি ও সতর্কতার দাবিও জানিয়েছে রাজ্য সরকার।