সুদীপ রায়চৌধুরী: “একজন ব্যক্তি দলকে কুক্ষিগত করার চেষ্টা করছে। তাতে মনে হচ্ছে অন্য দলের সঙ্গে যোগ আছে। বিজেপির ক্ষতির ষড়যন্ত্র বানচাল করব।” শনিবার পোর্ট গেস্ট হাউসে বৈঠকের পর অবস্থান স্পষ্ট করলেন ‘বিদ্রোহী’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর (Shantanu Thakur)। ভবিষ্যতে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেন তিনি। ‘একজন’ হিসাবে কার কথা বলতে চাইলেন শান্তনু, তা নিয়েই তৈরি হয়েছে চাপানউতোর। রাজনৈতিক মহলের মতে, বিজেপির অন্তর্কলহ যে ক্রমশ আরও জটিল আকার ধারণ করছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
গত বছরের শেষের দিকে বিভিন্ন সাংগঠনিক জেলার নতুন সভাপতির নামের তালিকা প্রকাশ করে বিজেপি। আর সেই তালিকা প্রকাশের পর থেকেই বিজেপির অন্দরের ফাটল ক্রমশ চওড়া হচ্ছে। একের পর এক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ (WhatsApp Group) ত্যাগ লেগেই রয়েছে। মতুয়াদের সেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি, এই অভিযোগে গ্রুপ ত্যাগ করেন বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার পাঁচ বিধায়ক (MLA)। সেই তালিকা লম্বা করে মতুয়া ‘বিদ্রোহে’ শামিল হন শান্তনু ঠাকুরও। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপও ছাড়েন। কেন এই সিদ্ধান্ত, তাও স্পষ্ট করে জানান বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। বঙ্গ বিজেপির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক যে মোটেও মধুর নয়, তা টের পায় কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও। জে পি নাড্ডার সঙ্গে ফোনে কথাও হয় শান্তনুর। দিল্লিতে যান তিনি। একাধিকবার বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকও করেন।
[আরও পড়ুন: COVID-19: উদ্বেগ বাড়িয়ে দেশে একদিনে সংক্রমিত ২.৬৮ লক্ষ, ওমিক্রন আক্রান্ত ৬ হাজার পার]
শনিবারও পোর্ট গেস্ট হাউসে ছিল বৈঠক। শান্তনু ঠাকুরের পৌরহিত্যে এদিনের বৈঠকে যোগ দেন জয়প্রকাশ মজুমদার, রীতেশ তিওয়ারি, সায়ন্তন বসু, অসীম সরকার-সহ বেশ কয়েকজন বিক্ষুব্ধ নেতা। বৈঠকে যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও গরহাজির প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ কৌশিক ঘোষ ও তাপস ঘোষ এই বৈঠকে অংশ নেন। সূত্রের খবর, এদিনের বৈঠকে মূলত বিজেপির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীর অপসারণের দাবি নিয়ে আলোচনা হয়। জেলা কমিটি ঠিক কীভাবে সাজানো উচিত, তেমন একটি তালিকাও তৈরি করা হয়েছে বলেই সূত্র মারফত জানা গিয়েছে।
এদিকে, এদিন বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আরও একবার দলের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন শান্তনু। ‘একজন’ দলের ক্ষতি করার চেষ্টায় উঠে পড়ে লেগেছেন বলেই অভিযোগ তাঁর। তবে এই নেতার নাম স্পষ্ট করে বলতে চাননি তিনি। দাবিপূরণ না হলে আগামী দিনে আন্দোলন যে আরও বৃহত্তর রূপ নেবে, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন শান্তনু।