সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উন্নাওয়ের ধর্ষিতা তরুণীর বয়ান রেকর্ড করতে হাসপাতালের কেবিন হয়ে গেল কোর্টরুম। দিল্লি হাই কোর্টের নির্দেশে বুধবার সকালে নির্যাতিতার সঙ্গে কথা বলতে দিল্লির এইমস হাসপাতালে পৌঁছন বিশেষ আদালতের বিচারক ধর্মেশ শর্মা। এদিনের বিশেষ শুনানির জন্য হাসপাতালের যে ঘরে অস্থায়ী আদালত বসছে সেখানে কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় আনা হয়েছে উন্নাও ধর্ষণ কাণ্ডের অভিযুক্ত বিজেপির প্রাক্তন বিধায়ক কুলদীপ সিং সেনগার ও শশী সিংকেও। তবে শুনানির সময় কুলদীপকে নির্যাতিতা তরুণীর মুখোমুখি পেশ করা হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। শুনানির সময় হাসপাতালের সব সিসিটিভি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, এদিন নির্যাতিতা তরুণীকে তাঁর কেবিন থেকে স্ট্রেচারে করে অস্থায়ী আদালতের ঘরে আনা হয়। হাসপাতালের একজন বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স শুনানি চলাকালীন তাঁর পাশে ছিলেন। যখন বয়ান রেকর্ড করা হয় তখন তাঁকে বিচারকের দিকে মুখ করিয়ে রাখা হয়েছিল।
[আরও পড়ুন: স্কুলে উদ্দাম যৌনতায় মত্ত শিক্ষক, গণপিটুনি স্থানীয়দের]
গত ২৮ জুলাই উন্নাও থেকে রায়বরেলি যাওয়ার সময় গাড়ি দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন উন্নাও ধর্ষিতা। তারপর থেকেই তিনি এইমসে চিকিৎসাধীন। বর্তমানে সংকট কাটিয়ে উঠলেও তাঁকে বেশি মানসিক চাপ দেওয়া যাবে না বলে বিচারককে খেয়াল রাখতেও বলে কোর্ট। নিগৃহীতার অভিযোগ ছিল, তাঁকে প্রাণে মারতেই একটি ট্রাকের সঙ্গে তাঁর গাড়ির সংঘর্ষের ষড়যন্ত্র করেছিল কুলদীপ ও তার সঙ্গীরা। ট্রাকটির নম্বর প্লেটে কালো রং দেওয়া ছিল। ওই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল তাঁর পরিবারের দুই সদস্যের। রক্তাক্ত হয়েছিলেন তরুণীর আইনজীবীও। গত বছর এপ্রিল থেকেই জেলবন্দি রয়েছেন কুলদীপ। নিগৃহীতার পরিবারের অভিযোগ, কুলদীপ তাঁর প্রতিপত্তির জোরে জেলে বসেই শাগরেদদের দিয়ে দুর্ঘটনাটি ঘটিয়ে তরুণীকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে চেয়েছিল সে।
[আরও পড়ুন: ‘ব্রাহ্মণরাই শ্রেষ্ঠ, সমাজের পথপ্রদর্শক’, বিতর্কিত মন্তব্য স্পিকার ওম বিড়লার]
গত সপ্তাহে দিল্লি হাইকোর্টের তরফে উন্নাও ধর্ষণ মামলার বিচারের জন্য এইমস হাসপাতালে গিয়ে শুনানি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয় বিশেষ আদালতকে। ২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশের উন্নাও ধর্ষণ মামলার এদিনের শুনানি ক্যামরাবন্দি করা হলেও তা জনসমক্ষে বা সংবাদমাধ্যমের সামনে তুলে ধরা হবে না। গত সপ্তাহেই এইমসের জয়প্রকাশ নারায়ণ অ্যাপেক্স ট্রমা সেন্টারে অস্থায়ী আদালত গড়ে তোলার নির্দেশ দেন জেলা বিচারক ধর্মেশ শর্মা। তার আগে সুপ্রিম কোর্ট দিল্লি হাই কোর্টকে এই মামলায় নিম্ন আদালতের বিচারককে এইমসে গিয়ে বিশেষ শুনানির জন্য সিদ্ধান্ত নিতে বলেছিল। এর ফলে হাসপাতালে থাকা নিগৃহীতার বয়ান নেওয়া সুবিধা হবে। এছাড়া উন্নাও কাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আরও চারটি মামলাও দিল্লির একটি বিশেষ আদালতে স্থানান্তরিত করে সুপ্রিম কোর্ট। প্রতিদিন সেই সব মামলার শুনানির নির্দেশ দিয়ে ৪৫ দিনের মধ্যে শুনানি শেষ করার কথাও বলেছিল শীর্ষ আদালত। ওই তরুণীর বাবাকে খুনের মামলাতেও অভিযুক্ত কুলদীপ সেনগার। এই মামলায় কুলদীপ ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনও হয়েছে। এই ঘটনায় এক পুলিশ কর্মীও জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ।
The post হাসপাতালই যেন আদালত, এইমসের কেবিনে উন্নাওয়ের ধর্ষিতার বয়ান রেকর্ড appeared first on Sangbad Pratidin.