সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জন্মনিয়ন্ত্রণ বিল নিয়ে জল্পনা দীর্ঘদিনের। খানিকটা চিনের কায়দাতেই জনবিস্ফোরণ ঠেকানোর পক্ষে সওয়াল করছে দক্ষিণপন্থী সংগঠনগুলি। বিশেষ করে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়কেই লাগামহীন জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য দায়ী করছে তারা। সূত্রের খবর, এহেন পরিস্থিতিতে ‘জনসংখ্যা বৃদ্ধি’ নিয়ে আলোচনা হয় উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রধান মোহন ভাগবতের মধ্যে।
সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার প্রয়াগরাজ শহরে ভাগবতের সঙ্গে বৈঠকে বসেন যোগী (Yogi Adityanath)। প্রায় ঘণ্টাখানেকের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে দেশের জনসংখ্যা সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা হয় দু’জনের মধ্যে। রবিবার অযোধ্যায় অনুষ্ঠিত হতে চলা দীপোৎসবে সংঘ প্রধানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন যোগী। হিন্দুত্ববাদের দুই দাপুটে ব্যক্তিত্বের এই বৈঠক বিশ্লেষক মহলে চায়ের কাপে তুফান তোলার পক্ষে যথেষ্ট। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি এবার সংসদে জন্মনিয়ন্ত্রণ বিল পেশ করার তোড়জোড় করছে গেরুয়া শিবির? নাগপুর, লখনউ ও দিল্লির হালহকিকতের সঙ্গে পরিচিত অনেকেই আবার বলছেন, ২০২৪-এর লোকসভার আগে জন্মনিয়ন্ত্রণ বিলের মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে জলঘোলা করবে না মোদি সরকার। কিন্তু মোদি-যোগীর ঠান্ডা লড়াইয়ে লখনউ দরবার থেকে নাগপুরে সংঘের সদরদপ্তরে বিশেষ বার্তা যেতে কতক্ষণ!
[আরও পড়ুন: হিন্দু ধর্মের ‘অন্ধকার’ দূর করতে মোদিকে ব্যবহার করছে RSS! কংগ্রেস নেতার মন্তব্যে বিতর্ক]
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, গত বুধবার জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, ধর্মান্তকরণ বিরোধী আইন নিয়ে সরব হয়েছিলেন আরএসএস-এর (RSS) সাধরণ সম্পাদক দত্তাত্রেয় হোসাবালে। তাঁর দাবি, জোর করে ধর্মান্তকরণ ও বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশের জেরে জনবিন্যাস পালটে যাচ্ছে। তাই ধর্মান্তকরণ বিরোধী আইনের কড়া প্রয়োগ করা দরকার। সবমিলিয়ে, সংঘের অন্দরে জন্মনিয়ন্ত্রণ, বিশেষ করে মুসলিম জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য দ্রুত পদক্ষেপের দাবি জোরালো হচ্ছে। এবং এর ফলে মোদি সরকারের উপর চাপ বাড়াতে চলেছে নাগপুর বলেও ধারণা।
উল্লেখ্য, গতবছর জন্মনিয়ন্ত্রণ বিলের একটি খসড়া তৈরি করে উত্তরপ্রদেশ আইন কমিশন। একগুচ্ছ প্রস্তাবের সঙ্গে সেটি মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের দপ্তরে পাঠানো হয়। আইন কমিশনের প্রস্তাবগুলির মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হচ্ছে, একটিমাত্র সন্তান থাকলে রাজ্য সরকারের কর্মীদের বিশেষ সুবিধা প্রদান এবং দু’টির বেশি সন্তান থাকলে স্থানীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতায় নিষেধাজ্ঞা জারি। এদিকে, শুরুতে এই বিল নিয়ে হইহল্লা হলেও আপাতত গোটা বিষয়টি ঠান্ডাঘরে। এহেন পরিস্থিতিতে যোগী-ভাগবত বৈঠক জল্পনার রশদ তো বটেই!