সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হাতে আর মাত্র মাস আটেক। ২০২২ বিধানসভা নির্বাচনের আগে উত্তরপ্রদেশে (Uttar Pradesh) জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ করতে চাইছে যোগী সরকার। রবিবার বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসে আগামী দশ বছরের জন্য জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাজ্যের নয়া নীতি প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ (Yogi Adityanath)। জানিয়ে দিলেন, রাজ্যে প্রজননের হার ২০২৬ সালের মধ্যে ২.১ শতাংশ এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ১.৯ শতাংশ করা। বর্তমানে তা রয়েছে ২.৭ শতাংশে লক্ষ্য।
এদিন নতুন নীতির কথা জানানোর সময় যোগী বলেন, দুই সন্তানের মধ্যেই ব্যবধান রাখা দরকার। তাহলেই রাজ্যের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আসবে। আগেই তিনি টুইট করে জানিয়েছিলেন, ‘‘উন্নত সমাজ প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক শর্তই হল জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ।’’ সরকার যে এমন ঘোষণা করতে চলেছে এমন জল্পনা আগে থেকেই ছিল। শনিবারই জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ বিলের একটি খসড়া রাজ্যের আইন কমিশনের ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়া হয়। চাওয়া হয় সাধারণ মানুষের মতামত। এই খসড়া পরে বিধানসভায় পেশ করা হবে।
[আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশ দিয়ে শুরু, ২৪-এর আগেই দেশে জন্ম নিয়ন্ত্রণ আইন আনবে মোদি সরকার!]
নয়া নীতি সম্পর্কে জানাতে গিয়ে যোগী বলেন, ‘‘গোটা বিশ্বেই বিভিন্ন সময়ে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে যে, জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে উন্নয়ন ব্যাহত হয়। গত চার দশক ধরেই এই নিয়ে আলোচনা চলেছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে দারিদ্রের যোগ রয়েছে। প্রত্যেক সম্প্রদায়কেই জনসংখ্যা নীতি ২০২১-২০৩০-এর খেয়াল রাখতে হবে।’’
এই নয়া নীতির বিরোধিতা করেছে বিরোধী কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টি। কংগ্রেস এই নীতিকে ‘রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা’ বলে উল্লেখ করেছে। এদিকে অখিলেশ যাদবের দল একে ‘গণতন্ত্রের হত্যা’ বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
উত্তরপ্রদেশের বাড়তে থাকা জনসংখ্যা দীর্ঘদিন ধরেই প্রশাসনের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে এই বিষয়ে পদক্ষেপ করতে চাইছে যোগী সরকার। আগেই এক বিবৃতিতে যোগী আদিত্যনাথ জানিয়েছিলেন, ‘‘অশিক্ষা আর দারিদ্র জনবিস্ফোরণের প্রধান ফ্যাক্টর। কোনও কোনও সম্প্রদায়ের মধ্যে এবিষয়ে সচেতনতা কম। আর তাই সম্প্রদায়ভিত্তিক সচেতনতা গড়ে তোলা একান্তই প্রয়োজন।’’
[আরও পড়ুন: ‘কমবেশি সকলেই হিন্দুদের বংশধর’, অসমের মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে বিতর্ক]
ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, অসমের পরে এই বিষয়ে উত্তরপ্রদেশের এহেন পদক্ষেপ থেকে ইঙ্গিত মিলছে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে এই সংক্রান্ত বিল সংসদে আনতে পারে বিজেপি। যোগী রাজ্যে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ আইন পাস করে পরবর্তীকালে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ক্ষমতা ধরে রাখতে সমর্থ হলেই এব্যাপারে কেন্দ্রীয় স্তরে পদক্ষেপের ব্যাপারে অগ্রসর হতে পারে মোদি সরকার।