সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লখিমপুর কাণ্ডে (Lakhimpur Kheri Violence) সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হল যোগী সরকারকে। প্রধান বিচারপতি এনভি রামানা জানালেন, উত্তরপ্রদেশের সরকারের স্টেটাস রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা ছিল আরও একদিন আগে। কিন্তু তার পরিবর্তে তা জমা দেওয়া হয় মঙ্গলবার রাতে। সেই সঙ্গে শুনানি পিছিয়ে শুক্রবার করার যে আরজি জানিয়েছিল সরকার, তা খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। সব মিলিয়ে এদিনের শুনানিতে প্রবল অস্বস্তিতে পড়তে হল যোগী সরকারকে। সুপ্রিম কোর্ট বুধবার পরিষ্কার জানিয়েছে, তারা উত্তরপ্রদেশ সরকারের ভূমিকায় আদৌ সন্তুষ্ট নয়।
এদিনের শুনানিতে উত্তরপ্রদেশ সরকারকে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে দ্রুত সমস্ত সাক্ষীদের বয়ান রেকর্ড করার জন্য। সেই সঙ্গে তাঁদের নিরাপত্তার বিষয়টিও নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। পুরো প্রক্রিয়াটি অনন্তকাল ধরে চলতে পারে না বলেই মন্তব্য শীর্ষ আদালতের। সেই সঙ্গে স্টেটাস রিপোর্টের বিষয়টিও উঠে আসে। এপর্যন্ত কারা গ্রেপ্তার হয়েছে এই মামলায়, তাও রাজ্য সরকারের থেকে জানতে চেয়েছে শীর্ষ আদালত।
[আরও পড়ুন: নতুন দল গড়ার ঘোষণা অমরিন্দর সিংয়ের, গাঁটছড়া বাঁধতে চলেছেন বিজেপির সঙ্গে!]
এপ্রসঙ্গে আদালতের মন্তব্য, ”আমরা রাত ১টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিলাম। কিন্তু তখনও তা আমাদের হাতে আসেনি।” এর জবাবে উত্তরপ্রদেশ সরকারের আইনজীবী হরিশ সালভে জানান, রিপোর্ট মঙ্গলবারই জমা দেওয়া হয়েছে। তখন প্রধান বিচারপতি রামানা তাঁকে প্রশ্ন করেন, ”একেবারে শেষ মুহূর্তে জমা দিলে কী করে তা পড়া সম্ভব? আরও অন্তত একদিন আগে এটা জমা দেওয়া উচিত ছিল।”
সেই সঙ্গে তিনি জানতে চান কেন এখনও খুব বেশি সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেনি সরকার? প্রশাসনের পদক্ষেপকে কার্যত ভর্ৎসনা করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ”আপনারা এখনও পর্যন্ত ৪৪ জন সাক্ষীর মধ্যে কেবল ৪ জনের সাক্ষ্য়ই গ্রহণ করেছেন। কেন এর থেকে বেশি লোকের সাক্ষ্য পাওয়া গেল না?” জবাবে অবশ্য সালভে জানান, সাক্ষীদের বয়ান রেকর্ড করার প্রক্রিয়া চলছে। সমস্ত অভিযুক্তকেই গ্রেপ্তার করা হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
এদিনের শুনানিতে সরাসরি উত্তরপ্রদেশ সরকারকে ভর্ৎসনা করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ”উত্তরপ্রদেশ সরকারের এযাবৎ পদক্ষেপে আমরা একেবারেই সন্তুষ্ট নই। আমরা চাই দায়িত্বশীল সরকার ও পুলিশ। যে অভিযোগ উঠেছে তা অত্যন্ত গুরুতর।”
প্রসঙ্গত, গত ৩ অক্টোবর লখিমপুর খেরিতে কৃষকদের বিক্ষোভ চলাকালীন গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় চার কৃষকের। মুহূর্তের মধ্যে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে এলাকা। পুলিশ গেলে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান প্রতিবাদীরা। চলে গণপিটুনিও। সেই হিংসাত্মক পরিস্থিতির মাঝে পড়ে প্রাণ হারান আরও ৪ জন। এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র (Ajay Mishra) টেনির ছেলে আশিস মিশ্র মনু। তাঁকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কংগ্রেসের দাবি, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীকে বরখাস্ত করতে হবে।
[আরও পড়ুন: উত্তরাখণ্ডে মৃতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য ঘোষণা, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যাচ্ছেন অমিত শাহ]