সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তাজমহল চত্বরকে প্লাস্টিকমুক্ত এলাকা ঘোষণার উদ্যোগ নিল যোগী সরকার। সুপ্রিম কোর্টের কটাক্ষের পর প্রথম তাজমহল সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হল। মুঘল সম্রাট শাহজাহান নির্মিত বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্য তাজমহলের সংরক্ষণের পরিকল্পনা নিয়ে উত্তরপ্রদেশ সরকারের উপরে বেজায় ক্ষুব্ধ দেশের শীর্ষ আদালত। গত ১১ জুলাই সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি এমবি লোকুর ও দীপক গুপ্তার ডিভিশন বেঞ্চে তাজমহলের সংরক্ষণ সংক্রান্ত মামলাটি ওঠে। তাজমহল সংরক্ষণে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা সরকারি আইনজীবীর কাছে জানতে চায় আদালত। তাতে কোনওরম সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি সরকারি আইনজীবী। এরপরেই যোগী সরকারকে একহাত নেন ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতিরা। তাজমহল রক্ষার্থে সরকারি তরফে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে তার সত্ত্বর জানাতে বলা হয়। এদিনই আদালতে সেই ড্রাফট রিপোর্ট পেশ করল যোগী সরকার।
[নৌকা নেই, সাঁতরে নদী পেরিয়েও ছেলেকে বাঁচাতে পারলেন না বাবা]
রিপোর্টে বলা হয়েছে, তাজমহল চত্বরকে প্লাস্টিক মুক্ত এলাকা ঘোষণা করা হবে। দূষণের কবল থেকে তাজমহলকে বাঁচাতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে খবর। আদালতে এদিন সরকারি আইনজীবী বলেন, তাজমহল দর্শনে আসতে হলে সঙ্গে প্লাস্টিকের জলের বোতল রাখা যাবে না। গোটা এলাকা প্লাস্টিক মুক্ত করতে তাজমহলের আশপাশে কোনও কারখানা থাকবে না। ষোড়শ শতকের এই স্থাপত্যকে বাঁচাতে হলে প্রথমেই দূষণ রোধে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিতে হবে। সেকারণেই তাজমহলের কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে থাকা কারখানাগুলিকে বন্ধ করে দিতে হবে। মূলত দূষণের আখড়া হল কারাখানা। তাই তাজমহলকে বাঁচাতে কারখানাগুলির দরজা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। পাশাপাশি, তাজমহলের দর্শনার্থীদের জন্য বিধিনিষেধ তৈরি হয়েছে। দর্শনার্থীরা প্লাস্টিকের জলের বোতল নিয়ে এই সৌধে প্রবেশ করতে পারবেন না। সংশ্লিষ্ট এলাকায় যান চলাচলেও নিয়্ন্ত্রণ আনতে হবে। এমনিতেই দর্শনীয় স্থানের বাহুল্যে আগ্রায় সারা বছরই লোকসমাগম হয়। ফলে গাড়ির চাপও বাড়তে থাকে যমুনা নদী লাগোয়া রাস্তাতে। এখন সারাদিনেই ট্রাফিক জ্যামে আটকে শয়েশয়ে গাড়ি। এভাবে চলতে থাকলে দূষণের মাত্রা থেকে তাজমহলকে বাঁচানো যাবে না। খুব শিগগির যমুনা নদী লাগোয়া রাস্তাটিতে গাড়ি চলাচলে রাশ টানার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্থানীয় ও ভ্রমনার্থীরা যাতে হেঁটেই ঘোরাফেরা করেন তারজন্য উৎসাহও দেওয়া হবে। নদীর তীরে কোনও ধরনের দোকান, মার্কেট থাকবে না। ভিড় এড়াতে গাছপালা লাগানো হবে। সবুজের পরিমাণ বাড়লে নদীর তীর যেমন ছায়াস্নিগ্ধ হবে। তেমনই দূষণের মাত্রা কমবে। একইভাবে তীরবর্তী এলাকায় কোনওরকম নির্মাণ কাজেও নিষেধাজ্ঞা জারি হবে।
[হোয়াটসঅ্যাপেই জানা যাবে লাইভ আপডেট, নয়া পরিষেবা ভারতীয় রেলের]
উল্লেখ্য, তাজমহল সংরক্ষণে সরকার যা যা পদক্ষেপ নিয়েছে তা আদৌ পালন হচ্ছে কিনা সেদিকে নজর রাখবে দেশের শীর্ষ আদালত। ১৬৪৩ সালে তাজমহল তৈরি করেন মুঘল সম্রাট শাহজাহান। স্ত্রী মুমতাজের প্রেমের প্রতীক রূপেই এই সৌধের নির্মাণ। এই সৌধ তৈরিতে ১০ বছর সময় লেগেছিল।
The post তাজমহলকে প্লাস্টিকমুক্ত এলাকা তৈরিতে উদ্যোগী যোগী সরকার appeared first on Sangbad Pratidin.