সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভোরে তারস্বরে আজানের শব্দে তাঁর ঘুম ভাঙে, ব্যাঘাত হয় সুখনিদ্রায়, একথা বলে বলে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন গায়ক সোনু নিগম। এরপরই ধর্মস্থানে প্রার্থনার সময়ে মাইক বাজার ফলে শব্দ দুষণের বিষয়টি সামনে চলে আসে। সম্প্রতি শব্দদুষণ রোধে রমজান মাসে দিনে একবারই লাউড স্পিকারে আজান বাজানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেরলের একটি মসজিদ কর্তৃপক্ষ। আর এবার যোগীর রাজ্য উত্তরপ্রদেশে শেহরির সময়ে মসজিদে লাউড স্পিকার বাজানোর প্রতিবাদে একযোগে প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেন হিন্দু ও মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা।
[প্রকাশ্যে মহিলাদের শৌচকর্মের ছবি তোলায় আপত্তি, পিটিয়ে খুন সমাজকর্মী]
রমজান মাসে দিনভর উপবাস করেন মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা। উপবাস শুরুর আগে শেষরাতে খাওয়া-দাওয়া সেরে নেন তাঁরা। এই প্রথাকে শেহরি বলে। এই শেহরির সময়ে কোনও মুসলিম ধর্মাবলম্বী যাতে ঘুমিয়ে না পড়েন, তারজন্য স্থানীয় মসজিদে লাউডস্পিকার বাজানো হয়। জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশের বরেলি জেলায় প্রেমনগরে স্থানীয় সাতটি মসজিদে শেহরির সময় লাউডস্পিকার বাজানোর প্রতিবাদে জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাৎপর্যপূর্ণভাবে স্থানীয় বাসিন্দাদের এই উদ্যোগে সামিল হয়েছেন এলাকার কয়েকজন মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষও। বরেলির অতিরিক্ত জেলাশাসক অলোক কুমার জানিয়েছেন, গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, রাত দশটা থেকে সকাল ছ’টা পর্যন্ত লাউড স্পিকার বাজানো নিষিদ্ধ।
[মহিলা সহকর্মীর পোশাক বদলের দৃশ্য ভিডিও করে গ্রেপ্তার চিকিৎসক]
বরেলির স্থানীয় বাসিন্দাদের এই উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছে ‘প্রদেশ উদ্যোগ ব্যাপার প্রতিনিধি মণ্ডল’ নামে ব্যবসায়ীদের একটি সংগঠন। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে পৃথকভাবে অভিযোগ জানিয়েছে তারা। সংগঠনের জেলা সভাপতি সুভহিত সাক্সেনা বলেন, ’ মন্দির হোক কিংবা মসজিদ, কোনও ধর্মই অপরকে বিরক্তি করার অনুমোদন দেয় না। গত বছর আমার বাবার ওপেন হার্ট সার্জারি হয়েছে। মজসিদের লাউডস্পিকার বাজানোর জন্য আমার বৃদ্ধ বাবা-মা রাতে শান্তিতে ঘুমোতে পারছেন না।’
[অনন্তনাগে জঙ্গি হামলায় ৬ পুলিশকর্মীর মৃত্যুতে উদ্বিগ্ন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা]
তবে এলাকার হিন্দুরাই নন, অভিযোগকারীদের তালিকায় সাতজন মুসলিম ধর্মাবলম্বীরও নাম আছে জানা গিয়েছে এবং মসজিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার তাঁদের হুমকির মুখেও পড়তে হয়েছে অভিযোগ। তবে রাতে শেহরির সময়ে মসজিদে যে লাউডস্পিকার বাজানো উচিত নয়, তা মেনে নিয়েছেন স্থানীয় মুসলিম ধর্মগুরু কাজি মৌলানা সাহাবুদ্দিন রিজভি। তিনি বলেন, শেহরি সময়ে মানুষকে জাগানোর জন্য বারবার তারস্বরে লাউডস্পিকার বাজানো উচিত নয়। নির্ধারিত শব্দসীমা মেনে একবার লাউডস্পিকার বাজালেই যথেষ্ট। কিন্তু কয়েকজন ইমাম নিজেদের গলায় আজান রেকর্ড করে বারবার তা লাউডস্পিকারে বাজাচ্ছেন। এটা রমজানের ভাবাবেগে আঘাত করছে।
The post মসজিদে লাউডস্পিকার বাজানোর প্রতিবাদে একজোট হিন্দু ও মুসলিমরা appeared first on Sangbad Pratidin.