সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের ফারুকাবাদে শিশুদের পণবন্দি করার ঘটনায় হাজারও প্রশ্নের ভিড়। কেনও শিশুদের টার্গেট করেছিল অভিযুক্ত সুভাষ বাথম, সেই জট এখনও খোলেনি। তারই মাঝে সামনে এল হাড়হিম করা তথ্য। পুলিশের দাবি, ১৫টিরও বেশি এবং মহিলাদের পণবন্দি করার প্রেক্ষাপট তাদের কাছে প্রায় স্পষ্ট। পুলিশ সূত্রে খবর, আচমকাই শিশুদের নিজের বাড়িতে ডেকে পণবন্দি করেনি সুভাষ। রীতিমতো মাসখানেকের পরিকল্পনার পর এই কাণ্ড ঘটিয়েছে সে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অভিযুক্ত পাশে পেয়েছিল তার স্ত্রীকেও।
ফারুকাবাদের কেশরিয়া গ্রামের সুভাষ বাথম খুনের মামলায় জড়িত। ডাকাতির মামলাতেও অভিযুক্ত সে। জামিন পাওয়ার আগে পর্যন্ত সাজাপ্রাপ্ত এই বন্দি কারাগারেই ছিল। পুলিশের দাবি, জেলে থাকাকালীন মাসখানেক ধরে শিশুদের পণবন্দি করার পদ্ধতি নিয়ে পড়াশোনা করে সুভাষ। ২০০৪ সালে রাশিয়ায় বেশ কয়েকজন শিশুকে পণবন্দি করা হয়। ওই ঘটনার সঙ্গেও সুভাষের পরিকল্পনার প্রায় ১০০ শতাংশ মিল রয়েছে। অভিযুক্তের মোবাইলও বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। ওই মোবাইলটি ঘেঁটে দেখতে গিয়ে চোখ কপালে উঠেছে তদন্তকারীদের। তাঁরা দেখেন, সুভাষের মোবাইলের গ্যালারিতে শিশুদের পণবন্দি করা হয়েছে, এমন ধরনের বহু নিউজ ফিড রাখা রয়েছে। এছাড়াও তার গ্যালারিতে মিলেছে বোমা তৈরি করার পদ্ধতি সংক্রান্ত ভিডিও।
[আরও পড়ুন: আর ১৮ নয়, এবার বাড়তে পারে মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স! ইঙ্গিত নির্মলার]
পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতেই গত বৃহস্পতিবার নিজের বাড়িতে জন্মদিনের পার্টির অজুহাতে ১৫টিরও বেশি শিশু এবং মহিলাদের নিমন্ত্রণ করে সুভাষ। প্রতিবেশীরা তার বাড়িতে পৌঁছনোর পরই তাদের চকলেট, বিস্কুট দিয়ে একটি ঘরে বন্দি করে রাখা হয়। দীর্ঘক্ষণ কেটে যাওয়ার পর গ্রামবাসীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তবে সুভাষ শিশুদের ফেরত দিতে রাজি হয়নি। অন্যদিকে, সুভাষের স্ত্রী এক-একটি শিশুর বিনিময়ে এক কোটি টাকা দেওয়ার দাবি জানায়। তবে এত বিশাল পরিমাণ টাকা দিয়ে শিশুদের মুক্ত করা সম্ভব নয় বলেই সাফ জানিয়ে দেন গ্রামবাসীরা। তখনই গুলি চালাতে শুরু করে সুভাষ। তাতে জখম হন এক গ্রামবাসী। ইতিমধ্যেই বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। সুভাষ পুলিশকে লক্ষ্য করেও গুলি এবং বোমা ছুঁড়তে শুরু করে। তাতেই গুরুতর জখম হন তিনজন পুলিশকর্মী। বেশ কিছুক্ষণ পুলিশ এবং আততায়ী গুলির লড়াই চলার পর গ্রামবাসীরা দরজা ভেঙে সুভাষের বাড়িতে ঢুকে পড়ে। তারপরই পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় সুভাষের।
[আরও পড়ুন: গোমূত্র পান করলেই দূরে থাকবে করোনা ভাইরাস! আজব দাওয়াই হিন্দু মহাসভা প্রধানের]
অভিযুক্তের স্ত্রীকে ধরে ফেলেন গ্রামবাসীরা। বেধড়ক গণপিটুনিতে মৃত্যু হয় সুভাষের স্ত্রীরও। অভিযুক্তের বাড়ি সিল করে রেখেছে পুলিশ। তার বাড়িতে দফায় দফায় তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা। বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি দেশি বন্দুক, ২০টি কার্তুজ, ১১টি ফাঁকা কার্তুজ, ১৩৫টি দেশি বোমা, সিলিন্ডার বোমা এবং বোমা তৈরির প্রচুর বিস্ফোরক। সঠিক সময়ে এনকাউন্টার না হলে শিশুদের প্রাণ সংশয় হতে পারত বলেই আশঙ্কা পুলিশ আধিকারিকদের।
এই ঘটনায় যদিও শিশুদের চোটাঘাত হয়নি। তাদের সুস্থভাবে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। বাড়ি ফিরলেও আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না পণবন্দি শিশুদের। এখনও ভয়ে কুঁকড়ে রয়েছে তারা।
The post জেলে বসেই শিশুদের পণবন্দির কৌশল নিয়ে পড়াশোনা, ফারুকাবাদ কাণ্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য appeared first on Sangbad Pratidin.