স্টাফ রিপোর্টার: কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের খাসমহলে পালাবদল সারা৷ রঘুরাম রাজনের জায়গায় এলেন উর্জিত প্যাটেল৷ সোমবার দায়িত্ব নিলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর পদে৷ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার নতুন গভর্নর হিসাবে দায়িত্ব নিলেন এতদিন ডেপুটি গভর্নর পদে থাকা উর্জিত৷ সোমবার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে বিবৃতি জারি করে এই খবর জানানো হয়েছে৷ যদিও এদিন গণেশ চতুর্থীর ছুটি থাকার কারণে মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে আরবিআই-এর ২৪তম গভর্নর হিসাবে নিজের নতুন অফিসের দায়িত্ব বুঝে নেবেন তিনি৷ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, “২০১৩-র জানুয়ারি থেকে ডেপুটি গভর্নর হিসাবে দায়িত্ব পালনের পর ৪ সেপ্টেম্বর থেকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার গভর্নর পদে এলেন ড. উর্জিত প্যাটেল৷ আগামী তিন বছর এই পদে থাকবেন তিনি৷” সরকারের সঙ্গে তীব্র সংঘাতের আবহে পূর্বতন গভর্নর রঘুরাম রাজন সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর থেকেই আরবিআই-এর শীর্ষ পদে কে আসবেন তা নিয়ে তীব্র জল্পনা চলছিল৷ এ বিষয়ে একাধিকবার প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি জানিয়ে দিয়েছিলেন, সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে সঠিক সময়েই আরবিআইয়ের গভর্নর নিয়োগ হবে৷ এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কোনও আলোচনা করবে না সরকার৷
এরই মাঝে গত ২০ আগস্ট কিছুটা নীরবেই প্যাটেলের নাম চূড়ান্ত করে ক্যাবিনেটের নিয়োগ কমিটি৷ কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির সঙ্গে ক্রমাগত সংঘাতের আবহেই শেষমেশ আরবিআই-এর দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন৷ ৪ সেপ্টেম্বরই শেষ হয়ে হয়েছে তাঁর মেয়াদ৷ স্বাভাবিকভাবেই এই বিতর্কের পটভূমিতে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের প্রধান পদের দায়িত্ব নিয়ে কার্যত ‘রাজন ঘরানারই’ অর্থনীতিবিদ উর্জিত প্যাটেল কীভাবে সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা সহ বিভিন্ন দিক সামাল দেন সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল৷ একইসঙ্গে অর্থনীতিবিদদের ব্যাখ্যা, অনাদায়ী ঋণের গেরোয় ইতিমধ্যেই প্রবল চাপের মধ্যে রয়েছে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি৷ ফলে এই পরিস্থিতিতে রীতিমতো কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন প্যাটেল৷
যদিও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক থাকায় পুরো পরিস্থিতিটাই নতুন গভর্নরের পরিচিত সমস্যা বলেই ব্যাখ্যা অনেকের৷ কেরিয়ারের দীর্ঘ সময় ইন্টারন্যাশানাল মানিটরি ফান্ড বা আইএমএফ-এ কাটিয়েছেন প্যাটেল৷ সেখান থেকেই ১৯৯৬-৯৭ সালে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ায় ডেপুটেশনে আসেন তিনি৷ সেই সময়ই দেশের ব্যাঙ্কিং এবং পেনশন ক্ষেত্রে সংস্কার, ঋণের বাজারের বিস্তার এবং ফরেন এক্সচেঞ্জ নিয়ে আরবিআই-তে উপদেষ্টার ভূমিকা পালন করেছেন তিনি৷ ১৯৯৮ থেকে ২০০১ সালে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের উপদেষ্টা হিসাবেও কাজ করেছেন৷ ফের ২০১৩ সাল থেকে আরবিআই-এর ডেপুটি গভর্নর পদে নিয়োগ হয়েছেন তিনি৷ গত বছরই রাজনের নেতৃত্বে আরবিআই থাকার সময় ডেপুটি গভর্নর হিসাবে প্যাটেলের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হয়৷