নতুন জামার গন্ধ। পুজোসংখ্যার পাতায় নয়া অভিযান। শরতের নীল-সাদা মেঘের ভেলায় পুজোর ছুটির চিঠি। ছোটবেলার পুজোর গায়ে এরকমই মিঠে স্মৃতির পরত। নস্ট্যালজিয়ার ঝাঁপি খুললেন ঋত্বিক চক্রবর্তী।
আমি মফস্বলের ছেলে৷ বাড়ি বারাকপুরে৷ কলকাতা থেকে অনেকটাই দূরে৷ ছোট শহরের পুজো যেরকম হয়, আমাদের ওখানে পুজোটা সেরকমই ছিল৷ আর পুজোর সময় আমাদের বাড়ির একটা রীতি ছিল, বেড়াতে যাওয়া৷ মেরেকেটে সপ্তমী পর্যন্ত থাকতাম, তারপর ঘুরতে চলে যেতাম৷ ছোটবেলায় বাড়ির সকলের সঙ্গেই বেরিয়ে পড়তাম৷ একটু বড় হতে বন্ধুদের সঙ্গে বেরনো শুরু হল৷ এখন বিয়ে হয়েছে, বউকে নিয়ে বেরবো৷ এবারেও যাচ্ছি৷ মানে পুজোতে বেড়াতে যাওয়াটা মাস্ট৷
[ আমার দুগ্গা: হজমি গুলি কেনা আর বন্দুক ফাটানো ছিল মাস্ট ]
তবে সপ্তমী পর্যন্ত ওই যে ঘোরা, তখন কলকাতায় খুব একটা আসা হত না৷ মানে কলকাতার পুজো দেখিনি তেমন৷ মফস্বলের পুজো খেয়াল করলে দেখা যাবে, ওখানকার পুজো, প্যাণ্ডেলে একটু অন্যরকম৷ বারাকপুরের ওপারটা হুগলি৷ আমরা নদী পার হয়ে চলে যেতাম ওপারে৷ শ্রীরামপুর, রিষড়া এগুলো প্রচুর পুরনো জায়গা৷ সেখানে বাড়িতে পুজো হত৷ তো আমরা সকাল সকাল ওই বাড়িগুলোয় ঢুঁ মারতাম৷ একদম অচেনা বাড়ি৷ কাউকে চিনি না৷ সুবেশ পুরুষ-মহিলারা সব যে যার কাজে ব্যস্ত৷ তাদের মধ্যে আমরা এমন ভাব করে ঘুরে বেড়াতাম যেন বাড়িরই ছেলে৷ আমাদের সমবয়সীরা মেয়েরাও থাকত৷ তো আমরা বাড়ির ছেলে সেজেই ঘোরাঘুরি করতাম৷ অত ব্যস্ততা, কেউ তেমন বুঝতেও পারত না৷ মোটামুটি সপ্তমী পর্যন্ত যতরকম দুষ্টুমি আছে করে, তারপর কাট৷ বেড়াতে বেরিয়ে পড়তাম৷ এই যে পুজোয় বেরিয়ে যাই, অনেকেই জিজ্ঞেস করেন, কলকাতাকে বা বাংলাকে মিস করি কি না? কেননা এই সময় সকলে বাইরে থেকে বাড়ি ফেরেন৷ আর আমি বাড়ি ছেড়ে বেরই৷ একবারে যে মিস করি না, তা বললে ভুল বলা হবে৷ তবে পুজোয় ভীষণ মাইক বাজে৷ এই মাইক বাজা আমার আবার একদম ভাল লাগে না৷ তাই বেরিয়ে পড়ি৷ পুজো মানেই আমার কাছে একটা লম্বা ছুটি৷
[ আমার দুগ্গা: ছোটবেলার পুজো মানেই ভিড় করে আসা ম্যাডক্সের স্মৃতি ]
দেখুন ভিডিও:
The post আমার দুগ্গা: অচেনা বাড়ির পুজোয় ঘরের ছেলে সেজে ঢুকে পড়তাম appeared first on Sangbad Pratidin.