সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সদ্য সমাপ্ত বঙ্গ ভোট চলাকালীনই নির্বাচন কমিশনের (Election Commision of India) নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। বিভিন্ন সময় বিজেপির হয়ে কাজ করার অভিযোগ উঠেছিল কমিশনের বিরুদ্ধে। এবার সেই প্রতিষ্ঠানের মাথায় বসলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ঘনিষ্ঠ একাধিক ব্যক্তি। যা নিয়ে ইতিমধ্যে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
বছর ঘুরলেই যোগীগড়ে বিধানসভা নির্বাচন। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে এই নির্বাচনকে বিজেপির লিটমাস টেস্ট বলেই মনে করছেন অনেকে। এদিকে বিজেপির চিন্তা বাড়িয়েছে কোভিড পরিস্থিতি এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের ভাবমূর্তি। এই দুয়ের গেঁরোয় অযোধ্যায় কুরসি দখল বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে গেরুয়া শিবিরের কাছে। আর এই চ্যালেঞ্জ সামাল দিতে ঘর গোছানো শুরু করেছে তারা। বিজেপি দল ভাঙানোর পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনেও ‘নিজেদের’ লোককে বসাচ্ছে অভিযোগে সরব হয়েছ বিরোধীরা। কেন এমন অভিযোগ উঠছে?
[আরও পড়ুন: অতিরিক্ত বৃষ্টিতে মুম্বইয়ে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল চারতলা বাড়ি, মৃত অন্তত ১১, জখম বহু]
বুধবার দেশের নির্বাচন কমিশনারের পদের দায়িত্ব নেন অনুপচন্দ্র পাণ্ডে। তিনি উত্তরপ্রদেশেরই আইএএস ক্যাডার। শুধু তাই নয়, তিনি মুখ্যমন্ত্রী যোগীর প্রিয়পাত্র বলেও পরিচিত। ২০১৯ সালে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিব পদ থেকে অবসর নেন তিনি। তার পর অনুপ পাণ্ডেকে নিজের মুখ্য উপদেষ্টা করতে চেয়েছিল যোগী। যদিও শেষপর্যন্ত তা হয়ে ওঠেনি। পোড় খাওয়া এই আমলা কেন্দ্রের ও উত্তরপ্রদেশের একাধিক দপ্তরের মাথায় বসেছেন। সূত্রের খবর, যোগীর আমলে ৬১৩ কোটি টাকার ‘গো প্রকল্প’ এই আমলারাই মস্তিষ্কপ্রসূত। গোবলয়ে রাজনীতির মোড় ঘুরিয়ে দিতে এই প্রকল্পের অবদান অনেকটাই। আবার প্রয়াগরাজে কুম্ভমেলার আয়োজন থেকে আগ্রার ভিশন পরিকল্পনা স্থগিত করে দেওয়া কিংবা জাতীয় প্রবাসী দিবসের সূচনা, সবটাই একা হাতে সামলেছিলেন অনুপ পাণ্ডে। তাই তা্ঁকে ছাড়তে চাননি যোগী। এবার যোগী আদিত্যনাথের সেই প্রিয়পাত্রই নির্বাচন কমিশনের মাথায় বসলেন। উল্লেখ্য, সাংবিধানিক নিরপেক্ষ পদে বসার আগে পর্যন্ত ফেসবুক কভার পেজে মোদি এবং যোগীর সঙ্গে ছবি চিল অনুপ পাণ্ডের। সূত্রের খবর, কমিশনের বাকি দুই কমিশনারও কেন্দ্রের শাসক দল ঘনিষ্ঠ।
[আরও পড়ুন: ৬ মিনিট হাঁটা, রেমডেসিভিরে না! শিশুদের জন্য Covid-19 গাইডলাইন প্রকাশ কেন্দ্রের]
ইতিমধ্যে অনুপ পাণ্ডের নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। কংগ্রেস মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনতে বলেন, “উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর প্রাক্তন মুখ্যসচিবকে নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ কি যুক্তিসঙ্গত তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর জেরে নির্বাচন কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নের মুখে। সামনে এসেছে কমিশনের অন্দরের মতান্তর।” এই পরিস্থিতিতে সমস্ত বিতর্কে কি জল ঢালতে পারবেন অনুপ পাণ্ডে, সেদিকেই তাকিয়ে দেশের আমলা ও রাজনৈতিক মহল।