সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আন্দোলনরত কৃষকদের উপর গাড়ি চালিয়ে ৩ জনকে হত্যার ঘটনা যে জাতীয় রাজনীতিতে ফের একটা বড়সড় ইস্যু হয়ে উঠতে চলেছে, তার আঁচ পাওয়া গিয়েছিল রবিবারই। সোমবার সকাল হতে না হতেই সেই আঁচ গনগনে হয়ে উঠল উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) লখিমপুর খেরিতে। ভোরবেলা এলাকায় যাওয়ার পথে পুলিশের বাধার মুখে পড়লেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী (Priyanka Gandhi)। ভোর সাড়ে ৫টার সময়ে তাঁকে ওই পথে যেতে বাধা দিল পুলিশ। অভিযোগ, প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে অভব্য আচরণ করেছেন পুলিশকর্মী, আধিকারিকরা। সীতাপুরে তাঁর সঙ্গে পুলিশের বচসা হয়। শেষপর্যন্ত প্রিয়াঙ্কাকে ‘গ্রেপ্তার’ করে পুলিশ।
সকালে লখিমপুর যাওয়ার পথে একইভাবে বাধা পেলেন উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব (Akhilesh Yadav)। লখনউয়ে তাঁকে গৃহবন্দি করার অভিযোগ উঠল। প্রতিবাদে সমাজবাদী পার্টির কর্মী, সমর্থকরা পুলিশের জিপ জ্বালিয়ে দেয় বলে পালটা অভিযোগ ওঠে। রাস্তার উপর বসে বিক্ষোভ শুরু করেন অখিলেশ। তাঁকেও হেফাজতে নেয় পুলিশ। তাঁর বাসভবনের সামনে দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
রবিবার উত্তরপ্রদেশে বিক্ষোভরত কৃষকদের উপরে গাড়ি চালিয়ে পিষে মারার মতো ভয়ংকর ঘটনা ঘটে। ৮ কৃষকের মৃত্যুতে মূল অভিযুক্ত হিসেবে নাম উঠে আসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্রর ছেলে আশিসের। তাঁর বিরুদ্ধে সোমবার এফআইআর দায়ের করা হয়েছে বলে খবর। তবে রবিবারের ওই ঘটনার পর থেকে কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয় যোগীরাজ্যের লখিমপুর খেরি। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় পুলিশে তিনটি গাড়িতে।
[আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশে বিক্ষোভরত কৃষকদের পিষে দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ছেলের গাড়ি! মৃত অন্তত ২]
সংবাদসংস্থা ANI সূত্রে খবর, লখিমপুর বিমানবন্দরে নামতেই দেওয়া হয়নি ছত্তিশগড়ের (Chhattisgarh) মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেলের কপ্টার। তিনিও কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে সেখানে যাচ্ছিলেন। বিমান অবতরণে বাধা দেওয়া হয়েছে পঞ্জাবের উপমুখ্যমন্ত্রীকেও। কৃষক বিক্ষোভের জেরে অগ্নিগর্ভ লখিমপুরে নিরাপত্তার স্বার্থে বন্ধ করা হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। গোটা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। ফলে কাউকে সেখানে ঢুকতে দেওয়া যাবে না বলে দাবি পুলিশের।
[আরও পড়ুন: মিকা থেকে আরিয়ান, বহু তারকাকেই ধরেছেন সমীর ওয়াংখেড়ে, কে এই ‘দাবাং’ অফিসার?]
এদিকে, রবিবার রাতের ঘটনার প্রতিবাদের রোষ আছড়ে পড়েছে কৃষক সংগঠনগুলির। সংগঠন এবং নিহতদের পরিবারের তরফে অভিযুক্তের বাবা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পদত্যাগ এবং নিহতদের পরিবারকে সরকারি চাকরি দেওয়ার দাবি ওঠে। জেলাশাসকের কাছে এই মর্মে আবেদনও জমা পড়েছে বলে খবর।
এই ঘটনায় কৃষকদের পাশে থাকতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় তাঁর দলের ৫ প্রতিনিধিকে পাঠাচ্ছেন লখিমপুর খেরিতে। দলে রয়েছে কাকলি ঘোষদস্তিদার, দোলা সেন, প্রতিমা মণ্ডল, আবিররঞ্জন ঘোষ এবং সুস্মিতা দেব। তাঁরা আজ সকালেই রওনা দিয়েছেন বলে খবর।