অভিরূপ দাস: শরীর আর মন, উভয়ের চিকিৎসকই তৈরি রাখতে হবে পড়ুয়াদের জন্য। এমনটাই নির্দেশ স্বাস্থ্য দপ্তরের। ৩ জানুয়ারি থেকে পড়ুয়াদের ভ্যাকসিন (Vaccine) দেওয়ার কাজ শুরু হবে। সেই প্রাক্কালে এমন নির্দেশ দিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা ডা. দেবাশিস ভট্টাচার্য।
নতুন বছরের শুরুতেই ১৫ থেকে ১৮ বছরের ভ্যাকসিন (Vaccine)। পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে সতর্ক স্বাস্থ্য দপ্তর। প্রতিটি স্কুলে মনোবিদের ব্যবস্থা রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার স্কুলে স্কুলে টিকাকরণ (Vaccination) নিয়ে একটি অনলাইন বৈঠকের আয়োজন করে স্বাস্থ্য দপ্তর। হাজির ছিলেন প্রতিটি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং স্কুল ইন্সপেকটররা। কেন দেখা দিতে পারে মাস হিস্টিরিয়া? এই প্রশ্নের উত্তরে ইনস্টিটিউট অফ সাইকিয়াট্রি-র ডিরেক্টর ডা. প্রদীপ সাহা জানান, মাস হিস্টিরিয়া বা গণ উন্মাদনা শিশুদের মধ্যে অত্যন্ত স্বাভাবিক। বাড়ির বড়দের কাছ থেকে, অথবা পাড়া-প্রতিবেশীর মুখ থেকে শিশুরা টিকা সম্পর্কে বিরূপ কথা শুনলে ভ্যাকসিন নেওয়ার সময় অনেকের প্যানিক অ্যাটাক হতে পারে। আদতে শরীর খারাপ না হলেও, অত্যধিক উদ্বেগে একসঙ্গে একাধিক শিশু সংজ্ঞাহীন হয়ে যেতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে মনোবিদই পারেন শিশুদের আতঙ্ক কাটিয়ে তুলতে।
[আরও পড়ুন: Omicron In West Bengal: ‘ওমিক্রন’ নিয়ে সতর্ক রাজ্য, ৩ জানুয়ারি থেকে ব্রিটেনের উড়ানে নিষেধাজ্ঞা]
স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম জানান, সকাল ন’টা থেকে শুরু করতে হবে ভ্যাকসিন। সাড়ে আটটার মধ্যে সকলকে চলে আসতে হবে স্কুল প্রাঙ্গনে। আধার কার্ড (Aadhar Card) ছাড়াও স্কুলের পরিচয় পত্রে (School ID Card) ভ্যাকসিন নিতে পারবেন ছাত্র-ছাত্রীরা। প্রত্যেক পড়ুয়ার সঙ্গে তাদের অভিভাবকরাও আসবেন। তাদের জন্য শারীরিক দূরত্ব মেনে স্কুল প্রাঙ্গনেই বসার ব্যবস্থা করতে বলেছে স্বাস্থ্য দপ্তর।
রাজ্যের স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা জানিয়েছেন, প্রতিটি স্কুলের কাছে কোনও না কোনও সরকারি হাসপাতাল রয়েছে। সেখানকার কর্মী ও চিকিৎসকদের তৈরি থাকতে হবে। কোনও শিশুর বিন্দুমাত্র পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা গেলে দ্রুত তাকে মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে আসতে হবে। ১০২ ডায়াল করে নিয়ে আসতে হবে অ্যাম্বুলেন্স। টিকাকরণের সময় যাতে কোনও ভিড় না হয়, সেই জন্য স্কুলে টিকাকরণ শুরুর আগেই শিশুদের ‘রেজিস্ট্রেশন’ করে রাখতে বলেছে স্বাস্থ্য দপ্তর (Health Commission)।
স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম জানান, আগে থেকে শিশুদের নাম রেজিস্টার করে দিন। যাতে টিকা নেওয়ার দিন দ্রুত কাজ হয়। টিকাকরণের জন্য প্রতিটি স্কুলে একজন ‘নোডাল পারসন’ থাকবে। কতজন ছাত্রকে টিকা দেওয়া হল তার হিসেব রাখবেন নোডাল পারসন-রাই। স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশ, কোনও শিশুর অভিভাবক যদি স্কুলে না এনে বাচ্চাকে নিকটবর্তী কোভিড ভ্যাকসিনেশন সেন্টারে টিকা দিতে চান তাহলে তাকে জোর করা হবে না। উল্লেখ্য, শুরু হতে চলেছে বুস্টার ডোজও। বুস্টার ডোজ নিতে গেলে নতুন করে কোউইন অ্যাপে (Co-WIN) নাম রেজিস্টার করতে হবে না বলেই জানিয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তর।