সম্যক খান, মেদিনীপুর: বিদ্যাসাগরের বাণী এবার তরঙ্গের মধ্যে দিয়ে ভেসে বেড়াবে জঙ্গলমহলের আকাশে বাতাসে। সেইসঙ্গে চলবে সংস্কৃতিচর্চা থেকে জঙ্গলমহলের প্রান্তিক মানুষজনের জন্য নানা বার্তাও। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশত বর্ষপূর্তির সমাপ্তি অনুষ্ঠানে ‘বেতার বিদ্যাসাগর’ নামক কমিউনিটি রেডিও স্টেশন শ্রদ্ধার্ঘ্য দিয়ে মহান ওই পণ্ডিতের বাণীগুলিকে সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়ারই সূচনা করল বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়। ৯০.৮ এফএমে (FM) চলা ওই বেতার বিদ্যাসাগর রেডিও স্টেশনের শনিবার উদ্বোধন করলেন উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তী। হাজির ছিলেন বিদ্যাসাগর গবেষক অমিয় সামন্ত, রেজিস্ট্রার জয়ন্ত কিশোর নন্দী, অধ্যাপক শিবাজী প্রতিম বসু, অধ্যাপক সুব্রত দে প্রমুখ।
দ্বিশত জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গত এক বছর ধরে নানা কর্মসূচী নিয়েছে বিদ্যাসাগরের নামাঙ্কিত এই বিশ্ববিদ্যালয়। প্রকাশিত হয়েছে বিদ্যাসাগর রচনাবলী, বিদ্যাসাগর নামাঙ্কিত অধ্যাপকপদ সৃষ্টির পাশাপাশি চালু হয়েছে বিদ্যাসাগর পুরষ্কারও। এবার তার নামে খোদ একটি কমিউনিটি রেডিও স্টেশনের সূচনা হয়েছে। উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তী বলেছেন, প্রায় ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার আকাশসীমার দূরত্বজুড়ে এই কমিউনিটি রেডিও (Community Radio) স্টেশন চলবে। সাধারণ সংস্কৃতিচর্চা থেকে শুরু করে আদিবাসী তথা লোকসংস্কৃতি চর্চাও হবে এখানে। এর পাশাপাশি পঠনপাঠন সংক্রান্ত বিষয়, আবহাওয়া তথ্য আদানপ্রদান, কৃষি থেকে সাধারণ ও বিজ্ঞান বিষয়েও আলোকপাত করা হবে।
[আরও পড়ুন: ‘রাজভবনের ক্ষমতাও খর্ব করতে চাইছেন মমতা’, টুইটে ফের খোঁচা ধনকড়ের]
আপাতত সপ্তাহে দু-তিন দিন নির্দিষ্ট কয়েক ঘণ্টা ধরে অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হবে। রঞ্জনবাবুর কথায় প্রস্তুতি নিতে কিছুটা সময় লাগবে। তারপর ধাপে ধাপে সময়সীমা বাড়ানো হবে। প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা বাজেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরেই তৈরি হয়েছে অত্যাধুনিক ওই রেডিও স্টেশন। এখান থেকেই সম্প্রচার হবে। এধরনের উদ্যোগ জেলায় এই প্রথম বলেও জানিয়েছেন উপাচার্য। জানা গিয়েছে, এই রেডিও স্টেশনের জন্য কয়েকজন টেকনিক্যাল স্টাফও নিয়োগ করা হবে। তারপরই তৈরি হবে চূড়ান্ত অনুষ্ঠান সূচি। ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটা অতীতের কিছু সেমিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ওই বেতারের মাধ্যমে শোনানো হবে। জঙ্গলমহলের মানুষ ঘরে বসেই সবকিছু জানতে পারবেন।
তবে সমাপ্তি অনুষ্ঠানেও উপাচার্যের গলায় ছিল আক্ষেপের সুর। তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, আজ আর কেউ বিদ্যাসাগর হতে চান না। সকলেই বিল গেটস হতে চান। বিদ্যাসাগরের জীবনে এগিয়ে চলার পথ যে মোটেই মসৃন ছিল না, তা তিনি একাধিক ঘটনাবলীর মাধ্যমে উল্লেখও করেছেন।
[আরও পড়ুন: প্রিয় ফার্মহাউসেই চিরনিদ্রায় এসপি বালাসুব্রহ্মণ্যম, গান স্যালুটে জানানো হল বিদায়]
The post ঈশ্বরচন্দ্রের দ্বিশত জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধার্ঘ্য, চালু হল ‘বেতার বিদ্যাসাগর’ কমিউনিটি রেডিও appeared first on Sangbad Pratidin.