সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আর পাঁচটা গ্রামের সঙ্গে মহারাষ্ট্রের লগতপুরি গ্রামের কোনও পার্থক্য নেই। ওই গ্রামটি তো বটেই, তার আশপাশের গ্রামেও নেই কোনও সিনেমা হল। তবে এখানে বসবাসরত প্রতিটি পরিবার প্রয়াত অভিনেতা ইরফান খানকে চেনেন। গ্রামের শিশুরাও প্রয়াত এই অভিনেতার একটিও ছবি দেখেনি, এমন নয়। গত ১০ বছর ধরে, এই গ্রামের বাসিন্দারা ৩০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছে নাসিকের প্রেক্ষাগৃহে যাওয়ার জন্য। তাও শুধু ইরফানের ছবি দেখবে বলে। আর তা যখন সম্ভব হয়নি, তখন কবে ইরফানের ছবি টেলিভিশনে দেবে, তার অপেক্ষায় থেকেছে। অভিনেতার সঙ্গে আত্মীক টান তৈরি হয়েছে মহারাষ্ট্রের এই গ্রামের। আর হবে নাই বা কেন, এই গ্রামের পাশে যে আপদেবিপদে দাঁড়িয়েছেন ইরফান। তাই তো অভিনেতার মৃত্যুর পর গ্রামে নামই বদলে দিতে চান বাসিন্দারা।
লগতপুরি গ্রামের জেলা পরিষদের এক সদস্য জানিয়েছেন, “যখনই আমাদের তাঁর প্রয়োজন হত, তিনি আমাদের পাশে এসে দাঁড়াতেন। তিনি আমাদের গ্রামের জন্য একটি অ্যাম্বুল্যান্স দিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুলের পরিকাঠামো উন্নত করেছেন। যাদের দরকার, সেইসব পড়ুয়াদের বইপত্র দিয়েও সাহায্য করেছেন তিনি।” প্রায় এক দশক আগে ইপফান লগতপুরি এসেছিলেন প্রথম। সেখানে তিনি উইকএন্ড কাটানোর জন্য একটি বাড়ি বানাতে চান। সেই কারণে গ্রামে জমি কেনেন তিনি। অভিনেতার প্লটের আশেপাশে কয়েকটি আদিবাসী জনপদ ছিল। যেখানে গ্রামের স্কুলগুলিতে অনেক সুবিধা ছিল না। এছাড়া গ্রামের মানুষকে দূরবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সের প্রয়োজন ছিল। গ্রামের মানুষের এই প্রয়োজনগুলি শুনে সাহায্য করতে বিন্দুমাত্র ইতস্তত করেননি ইরফান। এক মাসের মধ্যে অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা হয়ে গিয়েছিল।
[ আরও পড়ুন: লকডাউনের মধ্যেই সুখবর, শীঘ্রই মা হতে চলেছেন শুভশ্রী ]
“তিনি অনেক পরিবারের অভিভাবক ছিলেন। যখন কেউ সাহায্যের কথা বলেছে, তিনি কখনও না করেননি।” বলেন ওই গ্রামেরই এক বাসিন্দা। প্রতি বছর ইরফান এখানকার গ্রামের স্কুলগুলির হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থীকে নোটবুক, পাঠ্যবই, রেইনকোট এবং সোয়েটার দান করতেন। উৎসবের সময় তিনি তাঁদের মিষ্টি পাঠাতেন। ছোটদের জন্য এক ডজন কম্পিউটার কিনে দিয়েছিলেন। ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পরে গ্রামগুলিতে তাঁকে খুব বেশি কিছু দেখা যায়নি। তাঁর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর এই গ্রামগুলির বাসিন্দারা শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েন। প্রিয় অভিনেতাকে স্মরণীয় করে রাখতে তাই নিজের গ্রামের নাম বদলে দিতে চান অধিবাসীরা। তাঁরা চান, গ্রামের নাম হোক হিরো-চি-ওয়াদি। মারাঠি ভাষায় এর অর্থ হিরোর প্রতিবেশী।
[ আরও পড়ুন: লকডাউন অমান্য করে জয়রাইড! ১ সঙ্গী-সহ গ্রেপ্তার অভিনেত্রী পুনম পাণ্ডে ]
The post সব সমস্যাতেই পাশে দাঁড়াতেন ইরফান, অভিনেতার প্রয়াণে গ্রামের নাম বদলাতে চলেছেন বাসিন্দারা appeared first on Sangbad Pratidin.