সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা যদি বুঁদ হয় পেলে-মারাদোনা জাদুতে, অস্ট্রেলিয়া যদি মাথা নত করে ডন ব্র্যাডম্যানকে শ্রদ্ধা জানাতে, তবে ভারতবাসীর কাছে রয়েছে বিশ্বজয়ী এক অমূল্য রত্ন। মেজর ধ্যানচাঁদ। যাঁর প্রতিভা, হকির মাঠে অসংখ্য রেকর্ড এবং ব্যক্তিত্ব আজও ক্রীড়াবিদদের অনুপ্রেরণা জোগায়। আজ ২৯ আগস্ট জাতীয় ক্রীড়া দিবসে তাঁকে স্মরণ করছেন দেশবাসী।
দেশকে জগতসভার শ্রেষ্ট আসনে বসিয়েছেন একাধিকবার। হিটলারের সামনে যেমন মাথা নত করেননি তেমনি বুক ছাড়া খেলে বিপক্ষকে চমকে দিয়েছেন। কিংবদন্তি জাদুকর হয়ে উঠেছেন। হয়ে উঠেছেন দেশের সর্বকালের সেরা ক্রীড়াবিদ। ধ্যানচাঁদকে শ্রদ্ধা জানাতেই তাঁর জন্মদিনটিকে জাতীয় ক্রীড়া দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এদিনই রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ অর্জুন, দ্রোণাচার্য, রাজীব খেলরত্ন, ধ্যানচাঁদ পুরস্কার তুলে দিলেন এবারের প্রাপকদের হাতে। আর এমন গুরুত্বপূর্ণ দিনে যুব প্রজন্মের সামনে জাদুকর ধ্যানচাঁদের সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য তুলে ধরলেন বীরেন্দ্র শেহবাগ। তাঁর বক্তব্য, ধ্যানচাঁদের মাহাত্ম সম্পর্কে বর্তমান প্রজন্মের ধারণা অত্যন্ত সীমিত। তাই তাঁর বিভিন্ন কীর্তির কথা টুইটারে তুলে ধরলেন বীরু। সঙ্গে শ্রদ্ধা জানালেন দেশের সর্বকালের সেরা ক্রীড়াবিদকে।
[কোহলির সঙ্গে মেয়ের নাচের ভিডিও ভাইরাল, কট্টরপন্থীদের রোষের মুখে শামি]
- মাত্র ১৬ বছর বয়সে ভারতীয় সেনায় যোগ দিয়েছিলেন ধ্যানচাঁদ। অবসর নেন ১৯৫৬ সালে।
- সতীর্থরা তাঁকে ডাকতেন চাঁদ বলে। কারণ তিনি নাকি অপেক্ষা করে থাকতেন কখন চাঁদ উঠবে আর কখন তিনি অনুশীলন শুরু করবেন।
- তাঁর অনন্য প্রতিভা ও দক্ষতার জন্য পরিচিতি পেয়েছিলেন জাদুকর হিসেবেও।
- ১৯৩৬ বার্লিন অলিম্পিকের ফাইনালে প্রতিপক্ষকে ‘উচিত শিক্ষা’ দিতে ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে ধ্যানচাঁদ জুতো মোজা খুলে খেলেছিলেন। খালি পায়ে খেলেও গোলের হ্যাটট্রিক করে চমকে দিয়েছিলেন দুনিয়াকে।
- তাঁর হাতে যেন জীবন্ত হয়ে উঠত হকি স্টিক। একবার নেদারল্যান্ডসে তাঁর স্টিকটি ভেঙে দেখার চেষ্টা করা হয়েছিল তাতে চুম্বক লাগানো আছে কিনা।
- ১৯৩৬ বার্লিন অলিম্পিকেই দেশের তেরঙ্গা ছিল তাঁর হাতে। সেবার নাকি জার্মানির শাসনকর্তা অ্যাডল্ফ হিটলারকে স্যালুট করতে অস্বীকার করেন তিনি।
- কিংবদন্তি ক্রিকেটার ডন ব্র্যাডম্যান একবার ধ্যানচাঁদের প্রশংসা করে বলেছিলেন, “আপনি তো রান করার গতিতে গোল করেন!”
এছাড়াও হকির জাদুকর সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য তুলে ধরা হল এই প্রতিবেদনে:
- ১৯২৮, ১৯৩২ এবং ১৯৩৬ অলিম্পিকে দেশকে সোনা এনে দিয়েছিলেন তিনি। হকি কেরিয়ারে ৪০০টি গোলের (২২ বছরে) পাশে রয়েছে ধ্যানচাঁদের নাম।
- অবসরের পরও হকির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পাটিয়ালার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ স্পোর্টসে হকির হ্যাডস্যার ছিলেন তিনি। রাজস্থানের বিভিন্ন ক্যাম্পেও কোচিং করিয়েছেন।
- ২০০২ সালে তাঁকে সম্মান জানাতে দিল্লি ন্যাশনাল স্টেডিয়ামের নাম রাখা হয় ধ্যানচাঁদ ন্যাশনাল স্টেডিয়াম।
- লন্ডনের একটি টিউব স্টেশন তাঁর নামে নামাঙ্কিত।
[ফের একবার কলকাতা লিগের ডার্বি ঘিরে অনিশ্চয়তা!]
এদিন সমস্ত ক্রীড়াবিদদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সঙ্গে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিভা খুঁজে আনার জন্য ক্রীড়ামন্ত্রকের তরফে একটি ওয়েব পোর্টালও চালু হয়েছে বলে জানান মোদি। তবে এমন প্রতিভার অধিকারী ধ্যানচাঁদকে এখনও খেলরত্ন পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়নি। আর তাতেই ক্ষুব্ধ ও হতাশ তাঁর পরিবার।
The post জাতীয় ক্রীড়া দিবসে হকির জাদুকর ধ্যানচাঁদকে স্মরণ শেহবাগের appeared first on Sangbad Pratidin.