কৃষ্ণকুমার দাস: এক মাসের বেশি সময় বন্ধ থাকতে চলেছে বিবেকানন্দ রোডের (Vivakananda Road) একাংশ। ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে পোস্তা উড়ালপুল ভাঙার দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ। শনিবার এনিয়ে কলকাতা পুরসভায় (KMC) বৈঠক হয়। হাজির ছিলেন পরিবহণ মন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। রুট পরিবর্তন হবে পোস্তা, বড়বাজার ও হাওড়া থেকে উত্তর কলকাতা এবং উত্তর শহরতলির যাতায়াতের নানা পথ। ২৫ আগস্টের আগে সে বিষয় বিস্তারিত জানিয়ে দেবে কলকাতা পুলিশ।
পোস্তা উড়ালপুলের দ্বিতীয় পর্যায়ের ভাঙা ও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রনের বিষয়টি নিয়ে পুরভবনে মুখ্যপ্রশাসক ও মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের উপস্থিতিতে শনিবার দীর্ঘ আলোচনা হয়। বৈঠকে অংশ নেন কেএমডিএ, পুরসভা, পুলিশ ও উড়ালপুল ভাঙার মূল দায়িত্বে থাকা রাইটস সংস্থার শীর্ষকর্তারা। পরে মুখ্যপ্রশাসক জানান, “আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে উড়ালপুল ভাঙার দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হবে। তাই ২৭ আগস্ট থেকে আপাতত ৪৫ দিনের জন্য বিবেকানন্দ রোডের একাংশ বন্ধ রাখা হবে। গণেশ টকিজ থেকে গিরীশ পার্ক পর্যন্ত রাস্তা ‘নো এন্ট্রি’ যেমন থাকবে তেমনই কিছু রাস্তার রুট পরিবর্তন করবে ট্রাফিক পুলিশ, অবশ্য বিকল্প পথে যান চলাচল করবে।” শীঘ্রই ওই রুট পরিবর্তন নিয়ে ট্রাফিক পুলিশের তরফে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিস্তারিত জানিয়ে দেবে। উল্লেখ, দু’দিন আগেই পুরমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে কেএমডিএ পোস্তা ফ্লাইওভারের দ্বিতীয় অংশ ভাঙা নিয়ে একটি প্রস্তুতি বৈঠক করে।
[আরও পড়ুন: নরখাদক হয়ে উঠতে পারে দুই শিশুপুত্র! ‘বিশ্বকে বাঁচাতে’ সন্তানদের খুন বাবার]
২৭ আগস্ট থেকে ৪৫ দিনের জন্য বিবেকানন্দ রোডের একাংশ বন্ধ রাখা হবে। গণেশ টকিজ থেকে গিরীশ পার্ক পর্যন্ত রাস্তায় চলবে না গাড়ি। পাশাপাশি এই এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক করা হয়েছে। রাস্তার দুধারে রয়েছে পুরনো বাড়ি। ব্রিজ ভাঙার সময় কম্পন ধরতে পারে। তাই বাড়ির দরজা-জানালা বন্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে ২০১৬ সালের ৩১ মার্চ নির্মীয়মান পোস্তা উড়ালপুল ভেঙে ২৮জন মারা গিয়েছিলেন। বামফ্রন্ট আমলে শুরু হওয়া ওই ফ্লাইওভারের নকশা ও পরিকাঠামোগত ত্রুটি থাকায় বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে ভেঙে পড়া উড়ালপুল তিন দফায় সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। প্রথম দফায় ১৫ জুন থেকে পোস্তা ক্রসিং থেকে নবাব লেন পর্যন্ত দেড়মাস ধরে ভাঙা হয়েছে। সেই সময় স্ট্র্যান্ড রোডের একাংশ বন্ধ ছিল। ঘুরপথে গাড়ি চালানো হচ্ছিল। প্রথম পর্যায়ের ব্রিজ ভাঙার জন্য রাস্তার নানা অংশ নির্মান খারাপ হয়েছে। সেগুলি পুরসভা দ্রুত নির্মান করে দেবে বলে মুখ্যপ্রশাসক জানান। ব্রিজটি ভাঙতে ১৬ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে কেএমডিএ’র।
এবার ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে দ্বিতীয় পর্যায় ভাঙার কাজ। কিন্তু গনেশ টকিজ থেকে গিরিশ পার্ক পর্যন্ত পোস্তা ব্রিজের এই অংশে দুপাশে রয়েছে প্রচুর পুরনো বাড়ি। তাই ব্রিজ ভাঙার কম্পনে যাতে বাড়িতে ফাটল না ধরে, তার জন্য ভারপ্রাপ্ত সংস্থা রাইটস বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করছে। ফিরহাদের কথায়, “রাইটস উড়ালপুলটি ভাঙার জন্য ইতিমধ্যে জিরো-ভাইব্রেশন মেশিন নিয়ে এসেছে। তবে পুরসভার প্রস্তাব মেনে ওরা (রাইটস) শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিশেষজ্ঞদের একটা টিম সঙ্গে রাখবে। ওই টিম মূলত ব্রিজ ভাঙার সময় পুরোনো বাড়ির যাতে ক্ষতি ও বিপদ যাতে না হয় তা নজরদারি করবে।”