সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাস দুয়েক আগে রাশিয়া গিয়েও শান্তির বার্তাই দিয়েছিলেন মোদি। ইউক্রেন সফরে গিয়েও তাঁর স্পষ্ট বার্তা, ‘‘আমরা নিরপেক্ষ নই, আমরা শান্তির পক্ষে।’’ সমস্ত দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান রেখেই এই বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। যদিও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি চান, ভারসাম্য রক্ষার কূটনীতির বদলে সরাসরি তাঁদের পাশেই এসে দাঁড়াক ভারত।
আড়াই বছর পার হলেও থামেনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ (Russia-Ukrain War)। আর গোলাগুলির মাঝেই ঐতিহাসিক ইউক্রেন সফরে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi)। কিয়েভে পৌঁছে বৈঠক করেছেন সেদেশের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে। জানিয়ে দিয়েছেন, ভারত নিরপেক্ষ নয়, শান্তির পক্ষে। আর এই শান্তি ফেরাতে জেলেনস্কিকে পরামর্শ দিয়েছেন পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় বসার। যদি দু দেশ বৈঠকে বসে তাহলে সবরকম সাহায্য করবে দিল্লি (New Delhi)। ইউক্রেনের ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বকে সম্মান জানিয়ে কথা দিয়েছেন নমো।
ইউক্রেন সফরে নিয়ে জেলেনস্কিকে আলিঙ্গন মোদির। ফাইল ছবি।
চলতি বছরেই রাশিয়া (Russia) সফরে গিয়েছিলেন মোদি। আলিঙ্গন করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে। যা নিয়ে মোদিকে তোপ দেগেছিলেন জেলেনস্কি। মোদির রুশ সফর নিয়ে খানিকটা অসন্তোষ পুষে রেখেছিল আমেরিকা, ইউক্রেন সফরে তাও মিটেছে। আমেরিকাও আশাপ্রকাশ করেছে যে, মোদিই পারবেন দুদেশের যুদ্ধ থামাতে। কিন্তু এই সফরে মোদি-ম্যাজিকে মুগ্ধ তিনি। আলোচনায় ভারতের অবস্থান নিয়ে মোদি জানান, “আমরা নিরপেক্ষ নই। প্রথম থেকে আমাদের একটাই পক্ষ। আমরা সব সময় শান্তির পক্ষে। আমরা বুদ্ধের দেশ থেকে এসেছি। যেখানে যুদ্ধের কোনও স্থান নেই। আমাদের দেশ মহাত্মা গান্ধীর দেশ। যিনি গোটা বিশ্বকে শান্তির বার্তা দিয়েছেন।”
[আরও পড়ুন: শুভেন্দুর উলটো সুর সুকান্তর! ‘অরাজনৈতিক’ নবান্ন অভিযান নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত বিজেপি]
যুদ্ধক্ষেত্রে কখনও সমাধানের পথ মেলে না। বৈঠক ও কূটনীতির মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান করা প্রয়োজন। ভারত এই বিদেশ নীতিতেই বিশ্বাসী। আর এই অবস্থান থেকেই এদিন জেলেনস্কিকে (Volodymyr Zelenskyy) পরামর্শ দিয়ে মোদি বলেন, “এই যুদ্ধ থামাতে কূটনৈতিক স্তরে বৈঠক প্রয়োজন। আপনি যদি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসেন, তাহলে সাহায্য করবে ভারতও। আমি বন্ধু হিসাবে কথা দিচ্ছি। পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাতেও আমি বলেছিলাম, যুদ্ধক্ষেত্রে কখনও কোনও কিছুর সমাধান সম্ভব নয়। ভারত ইউক্রেনের ভৌগলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বকে সম্মান করে। রাষ্ট্রসংঘের সনদ ও আন্তর্জাতিক আইন মেনে সব দেশের ক্ষেত্রেই আমাদের এটা মেনে চলা উচিত।” জেলেনস্কিকে ভারতে আসার আমন্ত্রণও জানিয়েছেন মোদি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টও জানিয়েছেন, ভারতের মতো মহান দেশে সফর করতে তিনি অত্যন্ত আগ্রহী।
[আরও পড়ুন: ‘সন্দীপ জমানার দুর্নীতি’র খোঁজে আর জি করে সিবিআই, কী কী চলত হাসপাতালে?]
মোদির পরামর্শে যদি আলোচনায় বসে ইউক্রেন ও রাশিয়া, তাহলে তা নয়াদিল্লির জন্যও বিরাট কূটনৈতিক জয় হবে। পুতিনের সঙ্গে মোদির সখ্যের কথা কারও অজানা নয়। এদিকে, তিক্ততা ভুলে জেলেনস্কির কাছে মোদিই ‘শান্তির দূত’। ফলে ভারসাম্যের খেলা খেলে যদি দিল্লি এই যুদ্ধ বন্ধের পথ খুলে দিতে পারে তাহলে তা বিভিন্ন দেশের কাছে তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা হবে।