সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চাইল্ড পর্নোগ্রাফি বা শিশুদের যৌনতার ভিডিও দেখা নিয়ে বড় নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এই মামলায় মাদ্রাজ হাই কোর্টের রায় 'গুরুতর ত্রুটিযুক্ত'। আদালতের নির্দেশ, এই ধরনের ভিডিও দেখলে বা ডাউনলোড করলে পকসো আইনের আওতায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে। শিশুদের উপর যৌন নির্যাতন রোখার লক্ষ্যে সোমবার মাদ্রাজ হাই কোর্টের রায় খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
বিতর্কের সূত্রপাত ১১ জানুয়ারি। ওইদিন মাদ্রাজ হাই কোর্ট ২৮ বছরের এস হরিশ নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অপরাধমূলক মামলা খারিজ করে দেয় এই যুক্তিতে যে, পকসো আইন এবং আইটি আইন (৬৭বি ধারা) অনুযায়ী, অভিযুক্ত যদি শিশু পর্নোগ্রাফি সংক্রান্ত কোনওকিছু তৈরি, কাউকে পাঠানো বা ছেপে প্রকাশ করে থাকে, তা হলেই তিনি দোষী সাব্যস্ত হবেন। নচেৎ নয়। কিন্তু এক্ষেত্রে অভিযুক্ত হরিশ শুধুমাত্র ইলেকট্রনিক গ্যাজেটে (মোবাইল ফোনে) শিশু পর্নোগ্রাফি সংক্রান্ত ভিডিও ডাউনলোড করেছিল এবং দেখেছিল। সেই ভিডিও তার গ্যাজেটের প্রাইভেট ডোমেইনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল, কারও সঙ্গে শেয়ার করা হয়নি। কাজেই হরিশ দোষী নয়। যদিও এই ধরনের ভিডিও ডাউনলোড করা ও দেখার প্রবণতার জন্য উদ্বেগ করেছিলেন মাদ্রাজ হাই কোর্টের বিচারপতি ভেঙ্কটেশ। পরে সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে পাল্টা সুপ্রিম কোর্টে আবেদন দায়ের হলে, মাদ্রাজ হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণকে ‘ভয়ঙ্কর’ বলে আখ্যা দিয়েছিল প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ।
সোমবার এই মামলার রায় ঘোষণা করতে গিয়ে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জে বি পার্দিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রর বেঞ্চ জানায়, মাদ্রাজ হাই কোর্টের রায় 'গুরুতর ত্রুটিযুক্ত'। সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, 'বর্তমান সময়ে পর্নোগ্রাফি দেখার মতো ভয়ংকর সমস্যা নিয়ে লড়ছে শিশুরা। আমাদের সমাজকে সেভাবে পরিণত হতে হবে যাতে শাস্তির বদলে শিক্ষা দেওয়া যায়।' একইসঙ্গে এই মামলার রায়ে আদালত স্পষ্ট জানায়, শিশুদের যৌনতার ভিডিও প্রকাশ করা, শেয়ার করা, এই ধরনের ভিডিও তৈরি বা ডাউনলোড করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
একইসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের তরফে কেন্দ্রকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, 'চাইল্ড পর্নোগ্রাফি' শব্দটিকে পরিবর্তন করে তা যেন 'চাইল্ড সেক্সুয়ালি অ্যাবুসিভ অ্যান্ড এক্সপ্লয়টিভ মেটিরিয়াল' হিসেবে গণ্য করে সংশোধনী আনা হয়।