নিরুফা খাতুন: জলচুরি রুখতে এবার প্রযুক্তির শরণাপন্ন রাজ্য। পাইপলাইনের এয়ার ভালভে বসানো হচ্ছে সেফটি বক্স। গরম পড়তেই শহরে কিছু কিছু পকেটে জলকষ্ট দেখা দিয়েছে। ওই সব অঞ্চলে জলের গাড়ি পাঠাচ্ছে কলকাতা পুরসভা। অথচ পুরসভার জলের জোগান কম নয়। শহরে জনবসতির নিরিখে অধিক পরিমাণ জল সরবরাহ করা হয়। কিন্তু বিপুল পরিমাণ জল অপচয় হয়ে যাচ্ছে।
কোথাও পরিস্রুত পানীয় জল দিয়ে গাড়ি ধোয়া হচ্ছে তো কোথাও গৃহস্থের কাজ চলছে। আবার ভাঙা ট্যাপ থেকে জল পড়ে চলেছে অনবরত। কোনও কোনও জায়গায় আবার পাইপলাইন ফাটিয়ে জল চুরি করে নেওয়া হচ্ছে। পাইপলাইনে এয়ার ভালভ লাগানো থাকে। যেসব জায়গায় এয়ার ভালভ লাগানো রয়েছে, সেখানে পাইপ ফাটিয়ে জলচুরি করা হচ্ছে। মূলত বাজার এলাকা, খিদিরপুর, শিয়ালদহ, বড়বাজার, আলিপুর, কুমোরটুলি এসব অঞ্চলে জলচুরি বেশি হচ্ছে। পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল মৈনাক মুখোপাধ্যায় জানান, যেখানে এয়ার ভালভ রয়েছে, সেখানে পাইপ খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে ফাটিয়ে জল নেয় অনেকে। ফাটা পাইপ থেকে থেকে সারাদিন জল পড়তে থাকে। ফলে অনেক জায়গায় জলের গতি মাঝপথে হারিয়ে যাচ্ছে। সারাদিন এভাবে প্রচুর জল অপচয় হয়ে যায়। তাই এয়ার ভালভের উপর সেফটি বক্স বসানোর কাজ চলছে। ধাতব এই বক্স ধারালো অস্ত্র দিয়ে ফাটানো যাবে না।
[আরও পড়ুন: ‘বিধানসভার গরিমা নষ্ট করেছেন রাজ্যপাল’, তোপ স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের]
শহরে প্রতিদিন প্রায় ৪১৭ মিলিয়ন গ্যালন জল সরবরাহ করে থাকে পুরসভা। এছাড়া ধাপা ও গড়িয়া জল শোধনাগারে ২০ এবং ১০ মিলিয়ন গ্যালন জল প্রকল্পের কাজ শুরু করতে চলেছে। জলের জোগানবৃদ্ধির সঙ্গে অপচয় রোধে জোর দিচ্ছে পুরসভা। পুরসভার পরিধি আগের থেকে অনেক বেড়েছে। যদিও দক্ষিণ কলকাতার সংযুক্ত ওয়ার্ডের বেশ কিছু অংশে পরিস্রুত পানীয় জল এখনও পর্যন্ত পৌঁছে দিতে পারেনি পুরসভা। সেই সব এলাকায় নাগরিকদের ভরসা ভূগর্ভস্থ নলকূপের জল ও পুরসভার জলের গাড়ি।
জোকা পুরসভার অধীনে এলেও সেখানে এখনও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর জল সরবরাহ করছে। অথচ উত্তর কলকাতায় জল উপচে পড়ছে। উত্তরে অপচয় রুখতে কাশীপুরে ১ থেকে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে জলের মিটার বসানো হয়েছে। মিটার বসানোর পর এই ছয় ওয়ার্ডে প্রায় ২০ শতাংশ জল অপচয় রোখা গিয়েছে বলে দাবি জল সরবরাহ দপ্তরের। যেসব এলাকায় জলের জোগান স্বাভাবিকের থেকে বেশি রয়েছে আগামিদিনে সেই সব ওয়ার্ডে মিটার বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরকর্তৃপক্ষ।