shono
Advertisement
Bagda

অনশনের পুরস্কার! ভোটে জিতেই বীণাপানি দেবীর ঘরের তালা ভেঙে প্রণাম মধুপর্ণার

'বাগদার পথঘাটের সমস্যা দূর করাই প্রথম কাজ', জয়ের সার্টিফিকেট হাতে নিয়ে বলছেন মধুপর্ণা ঠাকুর।
Published By: Sucheta SenguptaPosted: 07:36 PM Jul 13, 2024Updated: 10:40 AM Jul 14, 2024

জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: নিজের শ্রদ্ধেয় ঠাকুমার ঘর তালা দিয়ে দিয়েছিলেন সাংসদ কাকা। তাই ঢুকতে না পেরে রাগে, দুঃখে, ক্ষোভে অনশনে বসেছিলেন। মাত্র ২৫ বছর বয়সি মেয়ের সেই অনমনীয় জেদ বুঝিয়ে দিয়েছিল, লড়াইয়ে তিনি ভয় পান না। আর তা দেখেই তাঁকে নির্বাচনী ময়দানে নামানোর পরিকল্পনা করে রাজ্যের শাসকদল। ঠাকুরবাড়ির সর্বকনিষ্ঠ সদস্য মধুপর্ণা ঠাকুরকে বাগদা উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী করা হয়। দলের সেই ভরসা তিনি রেখেছেন। বিজেপির দখলে থাকা বাগদায় ঘাসফুল ফুটিয়েছেন তিনি। আর ভোটে জিতেই প্রতিজ্ঞা রেখেছেন। শনিবার ফলপ্রকাশের পরই মধুপর্ণা ঠাকুরবাড়ি গিয়ে 'দখল' হয়ে যাওয়া ঠাকুমা তথা মতুয়া মহাসংঘের প্রাক্তন সংঘাধিপতি বীণাপানি দেবীর ঘরের তালা ভেঙে সেখানে ঢোকেন। কলকাতা হাই কোর্টের অনুমতি পেয়েই এই কাজ তাঁর।

Advertisement

জয়ের সার্টিফিকেট হাতে বাগদার মধুপর্ণা ঠাকুর। নিজস্ব চিত্র।

আসলে মধুপর্ণার এই কাজের নেপথ্যের ইতিহাস নেহাৎ কম দীর্ঘ নয়। মাস খানেক আগে মতুয়া ধর্মীয় মহামেলার (Motua Mela) সময়ে 'বড়মা' বীণাপাণি দেবীর ঘরের তালা ভেঙে ঘর দখল করার অভিযোগ উঠেছিল ঠাকুরবাড়ির আরেক সদস্য, বিজেপি সাংসদ (BJP MP)শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে। পরবর্তীতে শান্তনু ঠাকুর ওই ঘরে তালা মেরে দেন। সেখানে ঢোকা বন্ধ হয়ে যায় মমতাবালা ঠাকুরের পরিবারের। মমতাবালা ঠাকুর এই মুহূর্তে তৃণমূলের (TMC) রাজ্যসভার সাংসদ। তাই শান্তনুর ওই কাজে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব রয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। তা নিয়ে ঠাকুরবাড়ির দ্বন্দ্ব ফের প্রকাশ্যে আসে। তালা ভেঙে ঘরে ঢোকার দাবিতে অনশনে বসেন মমতাবালা ঠাকুর, মধুপর্ণা ঠাকুর।

[আরও পড়ুন: ‘অন্যায় করেনি’, ট্রেনি IAS পূজার বিরুদ্ধে অভিযোগের বন্যা, তবু ‘গুণধর’ মেয়ের পাশে বাবা]

এই ঘটনার পর পরই বাগদার উপনির্বাচনে (WB By-Elections) মধুপর্ণাকে তৃণমূলের প্রার্থী করার বিষয়টি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে। বিজেপির জেতা আসনে তৃণমূলের বাজি ছিলেন তিনি। কোন জাদু মন্ত্রে আবার মতুয়াদের কাছে টানল তৃণমূল? দলীয় নেতৃত্ব মনে করছেন, মধুপর্ণা ঠাকুরবাড়ির মেয়ে, তাঁকে প্রার্থী করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাস্টারস্ট্রোক দিয়েছেন। ঠাকুরবাড়ির সদস্যদের প্রতি মতুয়াদের আলাদা আবেগ কাজ করে, তার ফল মধুপর্ণা এবারের ভোটে পেয়েছেন। এছাড়া উপনির্বাচন ঘিরে বারাকপুরের সাংসদ পার্থ ভৌমিক, মন্ত্রী সুজিত বসু, রথীন ঘোষ, জেলা সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী-সহ একাধিক নেতা কার্যত বাগদার বাসিন্দা হয়ে গিয়েছিলেন| গোষ্ঠী কোন্দল মেটাতে তাঁরা পদক্ষেপ করেন। এর প্রভাবও পড়েছে ভোটের ফলাফলে।

[আরও পড়ুন: সমস্ত মেসেজ এবার পড়া যাবে মাতৃভাষাতেই! নয়া ফিচার আনছে WhatsApp]

একথা স্বীকারও করছেন মমতাবালা ঠাকুর। তাঁর কথায়, ''হরিচাঁদ- গুরুচাঁদ ঠাকুরের বংশধরের প্রতি মতুয়াদের একটা দায়বদ্ধতা তো কাজ করেই|'' তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ''মতুয়ারা বুঝেছেন, নাগরিকত্ব নিয়ে বিজেপি ভাঁওতা দিয়েছে। সে কারণেই এবার বাগদার মতুয়ারা তাঁদের প্রত্যাখ্যান করেছে।'' আর জয়ী মধুপর্ণা বলছেন, ''আমি বাগদাতেই থাকব। বাগদার এলাকায় ঘুরে ঘুরে রাস্তাঘাটের অনেক সমস্যা চোখে পড়েছে। সেগুলি সমাধান করাই আমার প্রথম কাজ।''

দেখুন ভিডিও: 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • ভোটে জিতে প্রতিশ্রুতি রাখলেন বাগদার মধুপর্ণা ঠাকুর।
  • নিজের ঠাকুমা 'বড়মা' বীণাপানি দেবীর ঘরের তালা খুলে ঢুকলেন।
Advertisement